ব্যাংক খাতের আগে যাত্রা করেও পিছিয়ে পড়েছে বীমা খাত
মহিউদ্দিন তুষার : প্রায় ১০০ বছরেরও আগে ভারতে ব্রিটিশ শাসনামলে কয়েকটি বীমা কোম্পানি জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা উভয় ধরনের ব্যবসায় শুরু করেছিল। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৯৫ দ্বারা বীমা শিল্পকে জাতীয়করণ করে। এই আদেশবলে প্রতিরক্ষা, ডাক জীবন বীমা এবং বিদেশি জীবন বীমা কোম্পানিসমূহ ব্যতীত এদেশে ব্যবসারত সকল বীমা কোম্পানি ও সংস্থাকে সরকারি খাতের ৫টি কর্পোরেশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৮টি বিমা কোম্পানি কাজ করছে, যার মধ্যে লাইফ কোম্পানি ৩২টি এবং নন-লাইফ কোম্পানি ৪৬টি। এই ৭৮টি কোম্পানির মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন জীবনবীমা করপোরেশন এবং সাধারণ বীমা করপোরেশন এবং বিদেশি কোম্পানির মেটলাইফ আলিকোর শাখা অফিসও রয়েছে। বিদেশের সঙ্গে যৌথ মালিকানা অর্থাৎ জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হিসেবে সম্প্রতি ভারতের এলআইসি বাংলাদেশ লিমিটেড কার্যক্রম শুরু করেছে। দেখা যায় ব্যাংক খাতের আগে যাত্রা শুরু করেও পিছিয়ে পড়েছে দেশের বীমা খাত। ব্যাংক খাতের মতো আকর্ষণীয় ও সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় বীমা পেশায় কম ঝুঁকছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করা শিক্ষার্থীরা। বীমা খাতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেশের বীমা খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত। বর্তমানে দেশের দু-একটি কমপানি তুলনামূলকভাবে সঠিক নিয়মে তাঁদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু অন্য কোম্পানিগুলোর নামে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ করে গ্রাহকরা। ফলে দেশে বীমা খাত নিয়ে একটা বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায় জনমনে। এই খাতে ক্যারিয়ার গড়তে খুব বেশি আগ্রহ দেখা যায় না সদ্য পড়ালেখা শেষ করা শিক্ষার্থীদের মাঝে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকৈ পাশ করা এক শিক্ষার্থী সিটি ব্যাংকে হিউম্যান রিসোর্স (এইচআর) বিভাগে চাকরি করছেন। তিনি জানান, বীমা খাতে চাকরি করার আগ্রহ কখনো হয়নি। কারণ বীমা নিয়ে সব সময় একটা বিরূপ মন্তব্য পাওয়া যায় মানুষের কাছ থেকে। আর বীমা খাতে বেতনের অনিশ্চয়তাও আছে, তাই ব্যাংকেই প্রথম থেকে চেষ্টা করেছি। আইনুল আবিরের মতো এই রকম হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিবছর ব্যাংক খাতে চাকরির আবেদন করলেও বীমা খাতে তুলনামূলকভাবে কম। আবার অন্যান্য খাত যেমন দেশে পুরো জিডিপিতে একটা ভূমিকা রাখতে পারলেও জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা মিলিয়ে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান মাত্র দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে জীবন বীমার অবদান দশমিক ৭ শতাংশ এবং সাধারণ বীমার অবদান দশমিক ২ শতাংশ। আবার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ৪ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। বীমা খাতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, একজন শিক্ষার্থীর মনে বীমা খাত নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়নি। জীবন বীমা করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার ও উপসচিব আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বীমা সুবিধা সমপর্কে সাধারণ মানুষের সঠিক ধারণা নেই। ব্যাংক কিংবা শেয়ারবাজার সেক্টরে মানুষের এক রকমের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ এই সেক্টরগুলোর চাকরিতে আর্থিক নিশ্চয়তা আছে। ফলে কোম্পানি কোনো রকমের ক্ষতির মধ্যে পড়লেও কর্মীদের বেতন ঠিকমতো দিতে সক্ষম হয়। কিন্তু বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর চাকরিতে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় কমিশনের ওপর। অর্থাৎ যে যত মানুষকে বীমা করাতে সক্ষম তাঁর বেতনও তত বেশি। তাই বীমা খাতের চাকরি অনেকটা ঝুঁকির বলেই সদ্য পড়ালেখা শেষ হওয়া শিক্ষার্থী এই পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান না। জীবন বীমা করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার সেখ কামাল হোসেন বলেন, আর্থিক খাত নিরসনে বীমা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাইরের দেশে বীমা খাত অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। তাই সেসব দেশের তরুণরাও বীমা খাতে ক্যারিয়ার গড়ে। বীমা খাতকে যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য এর মধ্যে সরকার বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আইনি সংস্কার শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদারকি ও নজরদারি আরো কার্যকরভাবে পালন করা প্রয়োজন। বীমা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয় বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স একাডেমি। এতে বছরে ৩০-৩২টি কোর্সে প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতি কোর্সে প্রায় ৫০-৬০ জন প্রার্থী প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে। দেশের প্রায় সব বীমা কম্পানির কর্মকর্তা ও এজেন্ট ডিপ্লোমা ও অন্য সব ধরনের প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকে। তবে এত খারাপের মধ্যেও বেশ কয়েকটি ভালো কোম্পানিতে পেশা হিসেবে বীমা খাতে ক্যারিয়ার গড়তেও দেখা যায়। প্রায় ৬৮ বছর ধরে দেশে বীমা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে মেটলাইফ ইনস্যুরেন্স কম্পানি। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কম্পানিতে প্রায় ৪৯ হাজার কর্মী কাজ করছেন। বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৫০ জন কর্মী নিয়োজিত আছেন ও ১৬ হাজার এজেন্ট কাজ করছে। ২০১৯ সালে কম্পানিটির ১০০ জন আর্থিক সহযোগীর (এজেন্ট) গড় মাসিক কমিশন ছিল ৩৮ হাজার। এ ছাড়া সেরা ৫০ জন ভালো পারফর্মারদের জনপ্রতি মাসিক গড় আয় ৩৩ লাখ টাকা। কম্পানিতে বছরে প্রায় ২০০ জন ফিনানশিয়াল অ্যাসোসিয়েট প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
|
মহিউদ্দিন তুষার : প্রায় ১০০ বছরেরও আগে ভারতে ব্রিটিশ শাসনামলে কয়েকটি বীমা কোম্পানি জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা উভয় ধরনের ব্যবসায় শুরু করেছিল। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৯৫ দ্বারা বীমা শিল্পকে জাতীয়করণ করে। এই আদেশবলে প্রতিরক্ষা, ডাক জীবন বীমা এবং বিদেশি জীবন বীমা কোম্পানিসমূহ ব্যতীত এদেশে ব্যবসারত সকল বীমা কোম্পানি ও সংস্থাকে সরকারি খাতের ৫টি কর্পোরেশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৮টি বিমা কোম্পানি কাজ করছে, যার মধ্যে লাইফ কোম্পানি ৩২টি এবং নন-লাইফ কোম্পানি ৪৬টি। এই ৭৮টি কোম্পানির মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন জীবনবীমা করপোরেশন এবং সাধারণ বীমা করপোরেশন এবং বিদেশি কোম্পানির মেটলাইফ আলিকোর শাখা অফিসও রয়েছে। বিদেশের সঙ্গে যৌথ মালিকানা অর্থাৎ জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হিসেবে সম্প্রতি ভারতের এলআইসি বাংলাদেশ লিমিটেড কার্যক্রম শুরু করেছে। দেখা যায় ব্যাংক খাতের আগে যাত্রা শুরু করেও পিছিয়ে পড়েছে দেশের বীমা খাত। ব্যাংক খাতের মতো আকর্ষণীয় ও সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় বীমা পেশায় কম ঝুঁকছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করা শিক্ষার্থীরা। বীমা খাতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেশের বীমা খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত। বর্তমানে দেশের দু-একটি কমপানি তুলনামূলকভাবে সঠিক নিয়মে তাঁদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু অন্য কোম্পানিগুলোর নামে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ করে গ্রাহকরা। ফলে দেশে বীমা খাত নিয়ে একটা বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায় জনমনে। এই খাতে ক্যারিয়ার গড়তে খুব বেশি আগ্রহ দেখা যায় না সদ্য পড়ালেখা শেষ করা শিক্ষার্থীদের মাঝে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকৈ পাশ করা এক শিক্ষার্থী সিটি ব্যাংকে হিউম্যান রিসোর্স (এইচআর) বিভাগে চাকরি করছেন। তিনি জানান, বীমা খাতে চাকরি করার আগ্রহ কখনো হয়নি। কারণ বীমা নিয়ে সব সময় একটা বিরূপ মন্তব্য পাওয়া যায় মানুষের কাছ থেকে। আর বীমা খাতে বেতনের অনিশ্চয়তাও আছে, তাই ব্যাংকেই প্রথম থেকে চেষ্টা করেছি। আইনুল আবিরের মতো এই রকম হাজারো শিক্ষার্থী প্রতিবছর ব্যাংক খাতে চাকরির আবেদন করলেও বীমা খাতে তুলনামূলকভাবে কম। আবার অন্যান্য খাত যেমন দেশে পুরো জিডিপিতে একটা ভূমিকা রাখতে পারলেও জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা মিলিয়ে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান মাত্র দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে জীবন বীমার অবদান দশমিক ৭ শতাংশ এবং সাধারণ বীমার অবদান দশমিক ২ শতাংশ। আবার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ৪ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। বীমা খাতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, একজন শিক্ষার্থীর মনে বীমা খাত নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়নি। জীবন বীমা করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার ও উপসচিব আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বীমা সুবিধা সমপর্কে সাধারণ মানুষের সঠিক ধারণা নেই। ব্যাংক কিংবা শেয়ারবাজার সেক্টরে মানুষের এক রকমের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ এই সেক্টরগুলোর চাকরিতে আর্থিক নিশ্চয়তা আছে। ফলে কোম্পানি কোনো রকমের ক্ষতির মধ্যে পড়লেও কর্মীদের বেতন ঠিকমতো দিতে সক্ষম হয়। কিন্তু বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর চাকরিতে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় কমিশনের ওপর। অর্থাৎ যে যত মানুষকে বীমা করাতে সক্ষম তাঁর বেতনও তত বেশি। তাই বীমা খাতের চাকরি অনেকটা ঝুঁকির বলেই সদ্য পড়ালেখা শেষ হওয়া শিক্ষার্থী এই পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান না। জীবন বীমা করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার সেখ কামাল হোসেন বলেন, আর্থিক খাত নিরসনে বীমা খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বাইরের দেশে বীমা খাত অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। তাই সেসব দেশের তরুণরাও বীমা খাতে ক্যারিয়ার গড়ে। বীমা খাতকে যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য এর মধ্যে সরকার বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আইনি সংস্কার শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদারকি ও নজরদারি আরো কার্যকরভাবে পালন করা প্রয়োজন। বীমা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয় বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স একাডেমি। এতে বছরে ৩০-৩২টি কোর্সে প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতি কোর্সে প্রায় ৫০-৬০ জন প্রার্থী প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে। দেশের প্রায় সব বীমা কম্পানির কর্মকর্তা ও এজেন্ট ডিপ্লোমা ও অন্য সব ধরনের প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকে। তবে এত খারাপের মধ্যেও বেশ কয়েকটি ভালো কোম্পানিতে পেশা হিসেবে বীমা খাতে ক্যারিয়ার গড়তেও দেখা যায়। প্রায় ৬৮ বছর ধরে দেশে বীমা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে মেটলাইফ ইনস্যুরেন্স কম্পানি। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কম্পানিতে প্রায় ৪৯ হাজার কর্মী কাজ করছেন। বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৫০ জন কর্মী নিয়োজিত আছেন ও ১৬ হাজার এজেন্ট কাজ করছে। ২০১৯ সালে কম্পানিটির ১০০ জন আর্থিক সহযোগীর (এজেন্ট) গড় মাসিক কমিশন ছিল ৩৮ হাজার। এ ছাড়া সেরা ৫০ জন ভালো পারফর্মারদের জনপ্রতি মাসিক গড় আয় ৩৩ লাখ টাকা। কম্পানিতে বছরে প্রায় ২০০ জন ফিনানশিয়াল অ্যাসোসিয়েট প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল লেনদেন চলছে সূচকের ব্যাপক উত্থানের মধ্য দিয়ে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর অর্থাৎ সকাল ১১টায় ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৪৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯১৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসই শরীয়াহ্ সূচক ৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮২ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে ১৩২৭ ও ২২৪১ পয়েন্টে রয়েছে। এসময়ের মধ্যে লেনদেন হয়েছে ৬৮৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এইসময়ে লেনদেন হওয়া কম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩৪টির, কমেছে ৫৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কম্পানির শেয়ারের দর। সকাল ১১টা পর্যন্ত লেনদেনের শীর্ষে থাকা ১০ কম্পানি হলো রবি, বেক্সিমকো লিমিটেড, লংকাবাংলা, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি ব্যাংক, সামিট পাওয়ার, আইডিএলসি, সাইফ পাওয়ায় ও জিবিবি পাওয়ার। লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ মিনিটে ডিএসইর সূচক বাড়ে ৫০ পয়েন্ট। এরপর ১০টা ২০ মিনিটে সূচক আগের অবস্থান থেকে ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৪৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯১৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। এদিকে, লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক ৩৮৪ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ১৮১ পয়েন্টে অবস্থান করে। এরপর সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায়। সকাল ১১টা পর্যন্ত সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এইসময় ১১৫টি কম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ২৯টি কম্পানির দর। আর ২৩টি কম্পানির শেয়ারের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেছেন ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দ্রুত পরিকল্পনা না নিলে আগামীতে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য। তাই মোবাইল ফোন উৎপাদক ও আমদানিকারকদের এখন থেকেই ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সম্প্রতি বিটিআরসির প্রধান সম্মেলন কক্ষে কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগ কর্তৃক মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী ও আমদানিকারক প্রতিনিধির সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব আশাপ্রকাশ করে বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিক্রেতা ও উৎপাদনকারীরা সমন্বিত উদ্যোগ নিলে সহজেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। তিনি আরও বলেন, দেশেই চাহিদা মোতাবেক ফোরজি ও ফাইভজি হ্যান্ডসেট উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে স্মার্টফোনের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দরকার দেশব্যাপী মানসম্পন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসির প্রতি আহ্বান জানান রুহুল আলম আল মাহবুব। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখা ও প্রতিযোগিতামুলক বাজারে উৎপাদনকারীদের সাফল্যের প্রশংসা করে আইনগত বাধা থাকলে তা সমাধানের আশ্বাস দেন বিটিআরসির লীগ্যাল এন্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হুসেইন। এসময় বেশ কয়েকটি মোবাইল উৎপাদন কারখানা পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে তাদের গুণগত মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আগামীতে ৫০ ভাগ ফিচার এবং ৫০ ভাগ স্মার্টফোন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করতে উৎপাদনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম। বিটিআরসির সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ বলেন, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম দূরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছে এবং শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশেই হ্যান্ডসেট উৎপাদন করছে। শুধু আমদানি বা সংযোজন শিল্পে মনোযোগী না হয়ে দেশে সেমিকন্ডাক্টরসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তির ডিভাইস তৈরি এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিগগিরই পদক্ষেপ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিটিআরসির অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. মেসবাহুজ্জামান। আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীদের কোন সমস্যা থাকলে আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সমাধানের আশ্বাস দেন ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র। সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পাঠক্রমে ইলেক্ট্রো মেকানিকস্, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, ক্লাউড, আইওটির মতো বিষয় অন্তর্ভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। আগত প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার মনোভাব ব্যক্ত করেন।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ১৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৮ পেয়েছে। এদের মধ্যে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে চারটি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে চারটি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি এবং হাই-টেক শিল্প ক্যাটাগরিতে দুটি। বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পুরস্কার লাভ করে। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে তাফরিদ কটন মিলস লিমিটেড, শেলটেক টেকনোলজি লিমিটেড, অকো-টেক্স লিমিটেড ও মেসার্স এনভয় ফ্যাশন লিমিটেড পুরস্কার লাভ করে। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে কনসেপ্ট নিটিং লিমিটেড, এপিএস ডিজাইন ওয়ার্কস লিমিটেড ও সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেড পুরস্কার লাভ করে। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ, মাসকো ওভারসিজ লিমিটেড ও ক্রিমসন রোসেলা সি ফুড লিমিটেড; কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ক্লাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রডাক্টস বিডি, ইন্টেলিজেন্ট কার্ড লিমিটেড ও রূপকথা যুব ও মহিলা উন্নয়ন সংস্থা; হাই-টেক শিল্প ক্যাটাগরিতে সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড ও মেটাটিউড এশিয়া লিমিটেড পুরস্কার লাভ করে। সম্প্রতি রাজধানীর এক হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব সেরা শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৮ দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি ও এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। শিল্প সচিব কেএম আলী আজম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তিত পরিস্থিতি, এসডিজি-২০৩০ ও রূপকল্প-২০৪১ বিবেচনা করে জাতীয় শিল্পনীতি-২০২১ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে নতুন শিল্পনীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। হালকা প্রকৌশল শিল্প খাতের উন্নয়নে ইতোমধ্যে একটি পরিকল্পিত ও সময়াবদ্ধ রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি একটি বিশ্বমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডাটাবেজ এবং শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিল্প খাতে উন্নয়নের চলমান অভিযাত্রা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের আগেই শিল্পসমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সিন্ডিকেট ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা বন্ধের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, তাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। তিনি পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করে দেশীয় পণ্যের রফতানি বাজার সম্প্রসারিত করার জন্য পুরস্কারজয়ীদের প্রতি পরামর্শ দেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন ও উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে নতুন প্রযুক্তির সন্নিবেশ করার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ব্যাংকগুলোর গতানুগতিক মাইন্ডসেটের পরিবর্তন করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। শিল্প সচিব কেএম আলী আজম বলেন, বঙ্গবন্ধুই সর্বপ্রথম ১৯৭৩ সালে শিল্প বিনিয়োগনীতি প্রণয়নের মাধ্যমে শিল্প খাতকে নীতিসহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। রূপকল্প-২০৪১ অনুসারে শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সর্বাধিক। এ দায়িত্ব পালনে শিল্প মন্ত্রণালয় আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসে ব্যাংকগুলোর কৃষি ঋণ বিতরণ বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.৫৯ শতাংশ বা ৬৩০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্প্রসারণমূলক আর্থিক নীতিমালা জারি করায় এটি সম্ভব হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত কৃষি ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এই বিতরণের অংক অনেক কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-নভেম্বর মাসে ৮৯৩৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বিতরণ করেছে, আগের বছরের একই সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছিল ৮৩০৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৬,২৯২ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল। ব্যাংকগুলোর গড়ে ২,১৯১ কোটি টাকা বিতরণ করার কথা। কিন্তু ব্যাংকগুলো কৃষকদের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮.৪৩ শতাংশ কম বিতরণ করেছে। ঋণ বিতরণের পরিমান প্রথম দুই মাস খুবই ভালো ছিল, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি। তবে ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো ২৪১২৪ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ বিতরণ করতে ব্যাংকগুলোতে কঠোর নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। কৃষিখাত যেহেতু দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই করোনা মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে কৃষি প্রধান অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে কৃষি ঋণ বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জুনে সারাদেশে বন্যার ফলে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিশাল জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিতে জড়িত বলে ব্যাংকগুলোকে খামার ঋণ বিতরণে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, বন্যাকবলিত খামারিদের জন্য ঝামেলামুক্ত এবং সময়োপযোগী ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। এ বিষয়ে চলতি বছরের ২৩ জুলাই একটি সার্কুলার জারি করে কৃষকদের ঋণ সুবিধা দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছিল। যাতে তারা হাঁস-মুরগি পালন ও গবাদি পশু পালন ও খাদ উৎপাদনের মত কার্যক্রম শুরু করতে পারে। গত অর্থ বছরের ব্যাংক ঋণের চেয়ে ২০২০-২১ অর্থ বছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকো কমিয়ে ২ শতাংশ কমানো হয়েছে।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : আমনের ভরা মৌসুমে দাম বাড়ছে চালের। অথচ দাম এখন কমার কথা। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, বন্যা, অতিবৃষ্টিসহ নানা কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আমনের উৎপাদন হয়নি। যে কারণে ধানের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে চালের ওপর। তবে আমনের উৎপাদন ভালো হয়নিÑএটা মানতে নারাজ খাদ্য মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, চলতি মৌসুমে ১ কোটি ৫০ লাখ টন আমন চাল উৎপাদন হবে। এটা লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি। তাহলে কেন আমন মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে এ প্রশ্ন এখন ভোক্তাদের? খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ইত্তেফাককে বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে দেশে কয়েক জন অসৎ চাল ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে। তারা আমনের ভরা মৌসুমেও অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম বাড়াচ্ছে। এজন্য আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। সূত্র জানিয়েছে, গত বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। মিল মালিকরা খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি করেও চালের বাড়তি দরের কারণে অনেকেই গুদামে চাল দেয়নি। সেসঙ্গে করোনা মহামারি ও চার দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণের কারণে সরকারের মজুত দ্রুত কমছে। আর সরকারের মজুত খাদ্যের পরিমাণ কমায় এর সুযোগ নিচ্ছে এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ীরা। খাদ্য অধিদপ্তরের প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বর্তমানে সরকারের গুদামে ৭ দশমিক ৮৮ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে চাল ৫ দশমিক ৫৬ লাখ টন ও গম ২ দশমিক ৩৩ লাখ টন। অথচ মাত্র এক মাস আগে গত ৫ নভেম্বর খাদ্যশস্যের মজুত ছিল ১০ লাখ ৩ হাজার ২০ টন। অর্থাৎ এক মাস ৯ দিনের ব্যবধানে ২ লাখ ১৫ হাজার ২০ টন খাদ্যশস্য মজুত থেকে কমেছে। খাদ্য অধিদপ্তরের এই তথ্যে দেখা গেছে, গত বছর এই সময়ে সরকারের গুদামে খাদ্যশস্যের মোট মজুত ছিল ১৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪০ টন। এর মধ্যে চাল ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩০ টন এবং গম ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১১০ টন। এই হিসাবে গত প্রায় এক বছরের ব্যবধানে সরকারের গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত কমেছে ৮ লাখ ৮ হাজার ৮৪০ টন। কিন্তু এ বছর কেন কমেছে সরকারের মজুত? সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহের সবচেয়ে বড় মৌসুম হলো বোরো। কিন্তু গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। গত বোরো মৌসুমে সরকার ২০ লাখ টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। যার মধ্যে ৮ লাখ টন ধান, ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল ও দেড় লাখ টন আতপ চাল। এর মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ২ লাখ টন ধান, ৬ দশমিক ৮ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং ৯৯ হাজার টন আতপ চাল সরকার কিনতে পেরেছিল। এই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ হয়নি। এবার আমনের আবাদ ভালো না হওয়ায় আমন সংগ্রহ অভিযানও সফল না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার রোপা ও বোনা আমন মিলিয়ে ৫৯ লাখ ১ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৪ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বন্যার কারণে ৫৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমির রোপা আমন ও ৫০ হাজার ৯৫৮ হেক্টর জমির বোনা আমন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাবে ধানের দাম বেশি। চলতি আমন মৌসুমে কাঁচা ধানই বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ। ধানের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চালের দাম। সরকার যে দরে ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে তাতে মিল মালিকরা চাল সরবরাহে রাজি নন। ইতোমধ্যে অনেক মিল মালিক তাদের অপারগতা জানিয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, একদিকে সরকারের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে, অন্যদিকে খাদ্যশস্য বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে। করোনা মহামারি ও কয়েক দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকার চাল বিতরণ করেছে ২৭ দশমিক ৭৭ লাখ টন। যা আগের বছরে ছিল ২৫ দশমিক ৯৪ লাখ টন। ফলে খাদ্যশস্যের মজুত দ্রুত কমছে। অন্যদিকে বাজারে চালের দাম বাড়ছে। বর্তমানে রাজধানীর খুচরা বাজারে সরু চাল নাজিরশাইল/মিনিকেট ৫৬ থেকে ৬২ টাকা, মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা সপ্তাহের ব্যবধানে চালের মানভেদে কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেশি। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সবকিছু বিবেচনা করেই চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি মাসেই ভারত থেকে ১ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারের ক্রয় কমিটি। সরকারের মজুত রাড়াতে প্রাথমিকভাবে ২ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। তবে পরিকল্পনা রয়েছে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ লাখ টন চাল আমদানির।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় এ সমস্যার সুরাহা কোনোভাবেই যেন করা যাচ্ছে না। এ খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। কোনোভাবেই খেলাপি ঋণ এর কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। ঋণ নেয়ার পর বিভিন্ন অজুহাতে একের পর এক খেলাপি হয়ে যাচ্ছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, দেশে এখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৪ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকারও বেশি। খেলাপি ঋণের এ বোঝা বইতে বইতে অনেক ব্যাংক নিজেই নুয়ে পড়ছে। দেশের ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০ শতাংশ থেকে প্রায় ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত খেলাপি আছে নয় ব্যাংকের। এর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। তাদের খেলাপি ৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর দেশি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের। ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ হয়েছে ৭৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এভাবে বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী যে ৯টি ব্যাংকের ঋণ উদ্বেগজনক হারে খেলাপি হয়েছে, সেগুলো হলো- বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (৩৬ দশমিক ১১ শতাংশ), বেসিক ব্যাংক (৫১ দশমিক ৭৩ শতাংশ), জনতা ব্যাংক (২৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ), সোনালী ব্যাংক (২০ দশমিক ৯১ শতাংশ), বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক (৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ), আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক (৭৯ দশমিক ৮১ শতাংশ), পদ্মা ব্যাংক (৬৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (৩০ দশমিক ৮ শতাংশ) এবং দেশে কার্যরত বিদেশি ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান (৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। গত ২০১৯ সালের ১৬ মে ঋণ খেলাপিদের মোট ঋণের ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুযোগ দেয় সরকার। ওই সুবিধার আওতায় জুন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ব্যাংক নবায়ন করে, যার অর্ধেকই করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, হালনাগাদ প্রতিবেদন মতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে তিন মাসে মাত্র দুই হাজার কোটি টাকা কমেছে। এ কমাটা খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে না। কিছু সময় গেলে বোঝা যাবে অবস্থা আসলে কেমন। তবে কমে আসাটা ইতিবাচক। হয়তো নতুন ঋণে শর্ত যোগ হওয়ায় বড় খেলাপিরা কমিয়ে দিচ্ছে নতুনটি পাওয়ার আশায়। আবার কমে আসার কারণটা হতে পারে ব্যাংকারদের কড়াকড়ি আরোপ। ব্যাংক খাত টিকিয়ে রাখতে খেলাপিদের আরও কঠিন বার্তা দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে বেড়েছে ইন্টারনেট ভিত্তিক বা অনলাইন ব্যাংকিং। করোনা বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যাংকিংকে বেছে নিচ্ছেন গ্রাহকরা। এতে ব্যাংকের এই সেবায় লেনদেন বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইন্টারনেট ব্যাংকিং: ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রমকেই ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিং বলে। এক্ষেত্রে ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে ব্যাংকের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একজন গ্রাহক তার ব্যাংক একাউন্টে প্রবেশ করেন। একাউন্টে প্রবেশের জন্য ব্যাংক গ্রাহককে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর এই সাত মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা লেনদেন বেড়েছে। ২০২০ সালের এই সাত মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এ লেনদেন হয়েছে ৪৩ হাজার ৯৬৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে একই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ ছিলো ৩৯ হাজার ৯৭৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে ২৬ লাখ ৮৭ হাজার ৩০৪ জন গ্রাহক ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯২ বার ইন্টারনেট ভিত্তিক লেনদেন করেন। এতে ৪ হাজার ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। মে মাসে ২৭ লাখ ২২ হাজার ৩২৭ জন গ্রাহক ২০ লাখ ৫৪ হাজার ৬১২ বার লেনদেন করেছেন যাতে ৫ হাজার ৫৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। জুনে ২৭ লাখ ৪২ হাজার ২৪১ জনের ২২ লাখ ৬ হাজার ৮১৯ বারে ৭ হাজার ৪২১ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। জুলাই মাসে ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৭১৪ গ্রাহকের ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৭ বার লেনদেনে ৬ হাজার ২৫৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। আগস্টে ২৯ লাখ ২০ হাজার ৯৩৩ গ্রাহক ২০ লাখ ২৮ হাজার ৯১৬ বারে লেনদেন করেন ৬ হাজার ৮০০ কোটি ১০ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে ৩০ লাখ ১৪ হাজার ৪১৯ জন গ্রাহক ২০ লাখ ৭১ হাজার ৫০৪ বারে লেনদেন করেন ৭ হাজার ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অক্টোবর মাসে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৪ জন গ্রাহক ২১ লাখ ২৩ হাজার ২৬৫ বার লেনদেন করেন। এতে লেনদেন হয় ৬ হাজার ২৮৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেও গ্রাহকরা হিসাব খোলা, পরিবর্তন বা স্থানান্তর, বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, এটিএম ও শাখার লোকেশন, মিনি ও বিস্তারিত স্টেটমেন্ট, লেনদেনের সার্বিক বিবরণী, ঋণসংক্রান্ত তথ্য, ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধসহ অন্যান্য কাজ করতে পারেন।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ সুদ ধার্য করে নতুন একটি প্রণোদনা প্যাকেজ আসছে। এই প্যাকেজের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। করোনার প্রভাব মোকাবেলায় দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তাদের (সিএম-এসএমই) দ্রুত প্রণোদনা ঋন প্রদানে এ প্যাকেজটি তৈরি করা হচ্ছে। এ জন্য নতুন নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তহবিল ঘোষণা করা হবে। এ খাতে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহন করতে পারবেন। জানা গেছে, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলাের মাধ্যমে শুধু চলতি মূলধন খাতে এ প্রণোদনা ঋণ দেয়া হবে। এ ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে বছরে ১৪ শতাংশ। তবে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণগ্রহীতাদের জন্য ৯ শতাংশ সুদ প্রযোজ্য হবে। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে সরকার। তহবিলের মেয়াদ থাকবে পাঁচ বছর, তবে সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে এক বছর পর্যন্ত।গেল সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে এ-সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, করোনার প্রভাব মোকাবেলায় প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সর্বোপরি অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়ানোর ক্ষেত্রে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সরকার।এছাড়া দেশের সার্বিক তথনৈতিক উন্নয়নে বিশেষত কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্রুত দারিদ্র নিরসনে সিএম-এসএমই খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু শুধু ব্যাংকিং চ্যানেলে এসব খাতের উদ্যোক্তাদের কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব খাতের একটি বড় অংশ ‘মাইক্রোফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন’ (এমএফআই)এর মাধ্যমে ঋণ নিয়ে থাকে।
|
|
|
|
অর্থনেতিক প্রতিবেদক : দেশের রফতানি বাড়ানোর জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এখন কেবল রফতানিকারকদের এগিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি ‘পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটি ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার কনস্ট্রেইন্টস (পিআইএফআইসি)’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান ব্যবসাবান্ধব সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক রফতানি বাজারে এগিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে বাংলাদেশ রফতানি বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে)’ প্রকল্পের আওতায় পিআইএফআইসি কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সম্ভাবনাময় চারটি শিল্প খাত রয়েছে। এগুলো হলো চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জুতা, হালকা প্রকৌশল ও প্লাস্টিক পণ্য। রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইসিফোরজে প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় পিআইএফআইসি কর্মসূচি চালু করা হলো। এতে করে রফতানিকারকরা অনেক উপকৃত হবেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইসিফোরজে প্রকল্পের পরিচালক মো. ওবায়দুল আজমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। এছাড়া অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি এলএফএমইএবির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি বিপিজিএমইএর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ প্রকৌশল শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাতবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সোহনা ফেরদৌস সুমি।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী বিশেষত ইউরোপে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হলেও এখনো বড় আঘাত লাগেনি। সর্বশেষ নভেম্বর মাসের হিসাবে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেনি। বরং গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে সামান্য (শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ) বেড়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ৩০৭ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ পণ্য রপ্তানি করেছে। গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩০৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকার। অবশ্য নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। এই সময়ে তৈরি পোশাকসহ বেশিরভাগ পণ্যই রপ্তানির লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। এছাড়া ইপিবির হিসাব অনুযায়ী চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসÑজুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ (শূন্য দশমিক ৯৩ শতাংশ)। গত পাঁচ মাসে বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে মোট রপ্তানি করেছে ১ হাজার ৫৯২ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য। পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য। করোনার এই ক্রান্তিকালেও রপ্তানি না কমে যাওয়াকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন রপ্তানিকারকরা। বাংলাদেশের রপ্তানির ৮৪ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ খাতের অন্যতম রপ্তানিকারক ও পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক শহীদুল হক মুকুল বলেন, ক্রেতারা এখন তাদের গুদামে কোনো পণ্য জমা রাখতে চাইছেন না। অল্প অল্প করে ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন; কিন্তু রপ্তানি আদেশ রয়েছে। কেউ কেউ হয়তো পণ্য নেওয়া পিছিয়ে দিচ্ছেন; কিন্তু বাতিল করছেন না। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহের পরিস্থিতির মধ্যেও রপ্তানি না কমে যাওয়াই ইতিবাচক দিক। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাজ্য করোনা ভাইরাসের টিকা অনুমোদন দেওয়ার পর মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে নতুন করে রপ্তানি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে আগামী দুই-তিন মাস টিকে থাকতে পারলে উদ্যোক্তাদের জন্য সামনে সুদিন আসছে বলেও আশার কথা জানান তিনি। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের যেসব বড় ব্র্যান্ড পোশাকপণ্য ক্রয় করে, তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড় ক্রয়াদেশ দিয়ে তারা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। এ কারণে অল্প অল্প করে ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন। এ ছাড়া চাহিদা কিছুটা কম হলেও বাংলাদেশের বেশির ভাগ কারখানা যেহেতু অপেক্ষাকৃত কম দামের, সাধারণ মানের এবং প্রয়োজনীয় পোশাক তৈরি করেÑফলে এখানকার রপ্তানিকারকরা ক্রয়াদেশ পাচ্ছেন। ইপিবির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত পাঁচ মাসে সার্বিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : লোকসান কমাতে চলতি মাড়াই মওসুমে রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ছয়টি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই খবরে ওই সব কারখানার শ্রমিক-কর্মকর্তাদের মধ্যে চাকরিচ্যুতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আপাতত তাদের বেতন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন-বিএসএফআইসি। চলতি মাসের শুরুতে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের চিঠি বৃহস্পতিবারই সংশ্লিষ্ট মিলগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পৌঁছে গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাবনা সুগার মিল, শ্যামপুর সুগারমিল, পঞ্চগড় সুগার মিল, সেতাবগঞ্জ সুগারমিল, রংপুর সুগার মিল ও কুষ্টিয়া সুগার মিলে উৎপাদন কাজ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএসএফআইসির চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা। তিনি বলেন, চিনিকলগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ দিন ধরে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই ‘সংস্কার ও আধুনিকায়নের’ উদ্দেশ্যেই কারখানাগুলো আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। কয়েকজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে চিঠিতে চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাতে সংস্কার কিংবা আধুনিকায়নের কথা বলা হয়নি। তবে বেতন অব্যাহত রেখে কেবল উৎপাদন বন্ধ রাখলেও ‘কয়েক কোটি টাকার’ লোকসান ঠেকানো যাবে বলে জানান তারা। অধিক লোকবল, মেশিনের দক্ষতা নষ্ট হওয়া, কাচামালের ঘাটতি, দীর্ঘ দিন জমতে থাকা ব্যাংক ঋণের সুদ ও বছরের প্রায় ১০ মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে প্রতি বছরই প্রায় হাজার কোটি টাকা লোকসন গুনছে রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকল। এসব কারণে বেসরকারি রিফাইনারিতে উৎপাদিত সাদা চিনি বাজারে প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও সরকারি চিনিকলগুলো উৎপাদিত চিনির দাম পড়ে যাচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। ঋণজালে জর্জরিত কারখানাগুলো সময়মতো আখচাষীদের পাওনা পরিশোধ করার সক্ষমতাও হারাতে বসেছে। বিগত কয়েক বছরে মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া ভর্তুকির টাকা দিয়ে মাড়াই মওসুমের নানা সঙ্কট উৎরাতে পারলেও গত অর্থবছরে সেই ভর্তুকিও কমিয়ে দিয়েছে সরকার। বিএসএফআইসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯৭০ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে চিনিকলগুলো। বিগত পাঁচ বছরে জমতে থাকা লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯৭৬ কোটি টাকা। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে আখ মাড়াই শেষে প্রায় ৫০ কোটি টাকার লোকসান দিয়েছে সেতাবগঞ্জ সুগার মিল। এ বছর উৎপাদন বন্ধ রাখার চিঠি পেয়েছে কারখানাটি। ফলে এই চিনিকলের আওতাভূক্ত আখগুলো চলে যাবে পাশের ঠাকুরগাঁও সুগার মিলে। সেতাবগঞ্জ সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম জাকির হোসেন বলেন, এই মিলে চুক্তিভিত্তিক দেড়শ জনবলসহ মোট ৫০০ স্থায়ী লোকবল রয়েছে। এর বাইরে মাড়াই মওসুমে কাজ করার মতো আরও প্রায় ৪০০ লোকবল রয়েছে। তবে মাড়াই বন্ধ থাকার কারণে মওসুমের অন্তত ৪০০ জনকে বেতন দিতে হবে না। যারা স্থায়ী নিয়োগে রয়েছেন তাদের বেতন দিতে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ টাকা করে প্রয়োজন হবে। পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবার নয়টি সুগারমিল চলবে এবং বাকি ছয়টি বন্ধ থাকবে। চিনি শিল্পের ইতিহাসে আগে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি। “লোকসান কমিয়ে আনার জন্য করপোরেশন এই চিন্তা করেছে। যেহেতু প্রডাকশন কষ্ট বেশি পড়ছে সে কারণে খরচ কিছুটা কমবে।” পাবনা সুগার মিলে মোট জনশক্তি ৬৮৭ জন। এর বাইরে মাড়াই মওসুমে আরও কয়েকশ মানুষ সেখানে চাকরি করেন। এক কোটি টাকা থেকে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রয়োজন হয় বেতন বাবদ। অবসর সময়ে জনশক্তিকে কী কাজে লাগানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসরের সুযোগে শ্রমিকরা অন্য মিলে গিয়ে কাজ করবেন। আর পাবনার আখ যাবে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে নতুন কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হচ্ছে। আর আইপিওকে কেন্দ্র করে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলদেশ (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সিডিবিএল সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বর শেষে বিনিয়োগকারীদের নতুন বেনিফিশিয়ারি একাউন্ট (বিও হিসাব) সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৮ হাজার ৮৯২টি। অক্টোবরে তা ছিল ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫০টি। এক মাসের ব্যবধানে নতুন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৪২টি বিও হিসাব খোলা হয়েছে। আলোচ্য হিসাব খোলার মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসছে। তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে পুঁজিবাজারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার গতিশীল হলে আরও নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসবে। তাছাড়া, ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি বাজারে আসলেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণই বাজার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে। জানা গেছে, পুঁজিবাজারে নভেম্বর শেষে ২৫ লাখ ৮ হাজার ৮৯২ বিও হিসাব খোলা হয়েছে। এরমধ্যে পুরুষদের বিও ১৮ লাখ ৪৭ হাজার ১১১টি খোলা হয়েছে। অক্টোবর মাসের শেষ দিন পুরুষ বিও ছিল ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৭৮১টি। নভেম্বর মাসে পুরুষ বিও হিসাব বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৩৩০টি।
|
|
|
|
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা কমিয়েছে সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী একক নামে ৫০ লাখ এবং যৌথ নামে ১ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। বৃহস্পতিবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (সঞ্চয় শাখা) এক প্রজ্ঞাপনে বিনিয়োগের সীমা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে একক নামে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৫৫ লাখ এবং যৌথ নামে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চয়পত্র রুলস, ১৯৭৭ এবং পরিবার সঞ্চয়পত্র নীতিমালা, ২০০৯ এ বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বিষয়ে যাহাই বলা থাকুক না কেন, সরকার পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং পরিবার সঞ্চয়পত্র তিনটি স্কিমের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অথবা যৌথ নামে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করিল। ৩ ডিসেম্বর থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।’ উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারাদেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ক্রেতা বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বা ডাকঘর যেখান থেকেই সঞ্চয়পত্র কেনা হোক না কেন, সব তথ্য জমা হচ্ছে নির্দিষ্ট একটি ডাটাবেইজে। ১ লাখ টাকার বেশি হলে ক্রেতাকে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) দিতে হচ্ছে। এছাড়া সবধরনের লেনদেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উল্লেখ্য, করোনার এই সময়কালে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েই চলেছে। করের হার বাড়িয়ে, কড়াকড়ি আরোপ করার পরেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেনি। মূলত বিনিয়োগ তুলনামূলক নিরাপদ হওয়ায় সাধারণ মানুষ সঞ্চয়পত্রে আগ্রহী। বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করার যে লক্ষ্য ধরেছিল তার প্রায় ৬০ শতাংশ তিন মাসেই (জুলাই-সেপ্টেম্বর) নেওয়া হয়ে গেছে। সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসে এই খাত থেকে ৪ হাজার ২০৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা ঋণ নিতে হয়েছে সরকারকে, যা গত দেড় বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে যে ২০ হাজার কোটি টাকা ধার করার লক্ষ্য ধরেছে, তার ১১ হাজার ৬৬২ কোটি ৩১ লাখ টাকা তিন মাসেই নিয়ে ফেলেছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এই তিন মাসে ১১ হাজার ৬৬২ কোটি ৩১ লাখ টাকা টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এই অঙ্ক গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আড়াই গুণ বেশি। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ৪ হাজার ৬৯৮ কোটি ৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৯৮৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে এবার সেপ্টেম্বরে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েছে ৩২৭ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে মোট ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ বিনিয়োগ করছে। কিন্তু এবার সঞ্চয়পত্রে লাগাম টানতে সীমা কমিয়ে দেওয়া হলো। উল্লেখ্য, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। বিক্রি কমায় বছরের মাঝামাঝিতে এসে সেই লক্ষ্য কমিয়ে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু জুন মাসে অস্বাভাবিক বিক্রির কারণে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ অর্থবছর শেষে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় গিয়ে ঠেকে।
|
|
|
|
স্টাফ রিপোর্টার : শীতের সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও কোন কারণ ছাড়াই চাল ও তেলের দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। দফায় দফায় এই দুটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে টানা দুই সপ্তাহ ধরে চাল ও তেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি উঠে এসেছে। রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরাও দিয়েছেন একই তথ্য। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে পাইজাম ও লতা বা মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। পাইজাম ও লতার দাম বেড়ে ঠেকেছে ৫৫ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে এই দুই ধরনের চালের দাম ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়ে ৫৪ টাকা হয়েছিল। এছাড়া গত সপ্তাহে মোটা বা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দামও বেড়েছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। ‘গরিবের চাল’ হিসেবে পরিচিত এই চালের দাম ১ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৮ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ২-৩ টাকা করে বেড়েছে। ৫২-৫৩ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের পাইজামের দাম বেড়ে ৫৫-৫৬ টাকা হয়েছে। নাজির ও মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৭-৬২ টাকায়, যা আগে ছিল ৫৫-৬০ টাকার মধ্যে। রাজধানীর রামপুরার চাল ব্যবসায়ী বলেন, কয়েক দিন ধরে চালের দাম বাড়তি। মোটা চাল বাজারে নেই বললেই চলে। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম সম্প্রতি দুই দফা বেড়েছে। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন চিকন চালের দামও বেড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা কত দিন চলবে বলা মুশকিল। খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, বাজারে মোটা চাল নেই। এক মাসের বেশি হয়ে গেছে আমরা মোটা চাল পাচ্ছি না। সম্ভবত মোটা চালের সঙ্কটের কারণেই মাঝারি ও চিকন চালের দাম বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহে যেভাবে চালের দাম বেড়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সামনে আরও দাম বাড়তে পারে। এদিকে চালের পাশাপাশি ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে তেলও। টিসিবির জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা হয়েছে, যা আগে ছিল ৯৮ থেকে ১০০ টাকা। ৫ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৫০০-৫৩০ টাকা হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৯০-৫২৫ টাকা। বোতলের এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে ১১০-১২০ টাকা হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় নাম লিখিয়েছে খোলা ও সুপার পাম অয়েলও। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বাজারে খোলা পাম অয়েলের দাম ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ৯১-৯২ টাকা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে খোলা পাম অয়েলের দাম ছিল ৮৬-৯১ টাকা। সুপার পাম অয়েলের দাম ২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে ৯৪-৯৬ টাকা হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯১-৯৪ টাকা। এ বিষয়ে রাজধানীর মালিবাগ হাজীপাড়ার বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম বলেন, সবজির দামে এখন কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু চাল ও তেলের দাম সেই স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে। আগে সবজি কিনতে পকেটের সব টাকা খরচ হয়ে যেত, এখন চাল ও তেল কিনতে গেলে পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের চাল ও তেলের বাজারে দ্রুত নজরদারি বাড়ানো উচিত। রামপুরার বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত মাছ, মাংস, পোলাও খেতে চাই না। ভর্তা, সবজি দিয়ে পেট ভরে দু’মুঠো ভাত খেতে পারলেই খুশি। কিন্তু সবকিছুর যে দাম পেট ভরে ভাত খাওয়ার উপায় নেই। বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। এক কেজি খোলা সয়াবিন তেল কিনতে ১২০ টাকা লাগছে। চাল, তেলের এমন দামের কারণে আমাদের মতো গরিব মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। টিসিবি জানিয়েছে, চাল ও তেলের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে আমদানি করা আদা, জিরা আর লবঙ্গেরও দাম বেড়েছে। আদার দাম ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে কেজিপ্রতি ৯০-১০০ টাকা হয়েছে। জিরার দাম ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে কেজি ৩০০-৪০০ টাকা হয়েছে। লবঙ্গের দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এতে এই পণ্যটির কেজি ৮০০-১০০০ টাকা হয়েছে।
|
|
|
|
অর্থনেতিক প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি বন্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিরুদ্ধে বিভিন্ন পর্যায়ে সমালোচনা চলছে। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে শুরু করে খোদ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানও কারসাজি রোধে স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও কারসাজি বন্ধে আইনগত তেমন ক্ষমতা নেই স্টক এক্সচেঞ্জের। এখন নানা সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে সাময়িক স্থগিতাদেশসহ তদন্ত ও কোম্পানি পরিদর্শনের ক্ষমতা চেয়েছে ডিএসই। গত বুধবার এক চিঠিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) অনুমোদন ছাড়া কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে সাময়িক স্থগিত করার এমন ক্ষমতা চেয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জটি। পৃথিবী জুড়ে স্টক এক্সচেঞ্জের যে ক্ষমতা থাকে ততটুকু আমাদেরকেও দেয়া হোক। তা না হলে আমরা যে স্বপ্ন দেখছি পুঁজিবাজার নিয়ে, তা বাস্তবায়ন হবে না। ২০১৫ সাল পর্যন্ত আইনের বাইরে গিয়ে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি রোধে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার লেনদেনে সাময়িক স্থগিতাদেশসহ কিছু পদক্ষেপ নিলেও পরবর্তী সময়ে এসইসির হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়ে যায়। কোনো কোম্পানির লেনদেন স্থগিত করতে হলে এসইসির পূর্বানুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়। এরপর থেকেই ডিএসই লেনদেন স্থগিতাদেশের মতো পদক্ষেপ আর নেয়নি। এদিকে গত ৩১ অক্টোবর এক ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান অভিযোগ করেন, পুঁজিবাজারের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় স্টক এক্সচেঞ্জের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ডিএসইর সামনেই উৎপাদনহীন ও কারখানা বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি হচ্ছে। কিন্তু ডিএসই কিছুই করছে না। সবাই দেখছে কারখানা ও উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ার নিয়ে ডিএসইর ব্রোকাররা কারসাজি করছে। ডিএসইর সামনেই বন্ধ থাকা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে। কারা এসব কোম্পানির শেয়ার কিনে এবং কারা বিক্রি করে, তা স্টক এক্সচেঞ্জ জানে। এখানে যে ম্যানিপুলেশন হচ্ছে এবং ওপেনলি হচ্ছে, লুকিয়ে কেউ করছে না। তারপরও ডিএসই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। স্টক এক্সচেঞ্জকে শক্তিশালী হতে হবে। লিস্টিং রেগুলেশন অনুযায়ী, কোনো শেয়ার নিয়ে কারসাজি সন্দেহ হলে ডিএসই তা নিয়ে তদন্ত করে এবং সেই তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠায়। এর বাইরে ডিএসইর করণীয় কিছু নেই। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের এখতিয়ার কমিশনের। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অ্যাকশনে যেতে এক থেকে দেড় বছর সময় নেয় কমিশন। ঘটনা এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সময় দীর্ঘ হওয়ায় তার কোনো প্রভাব বাজারে দেখা যায় না। ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশনের ৪৯ ও ৫০ ধারায় সাময়িক স্থগিতাদেশ বিষয়ে যে আইন রয়েছে সেখানে বলা আছে, কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য কোম্পানি যদি প্রকাশ না করে এবং এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের নোটিসের জবাব যদি না দেয়, অথবা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হল্ট (সাময়িকভাবে স্থগিত) করতে পারে। এক্ষেত্রে আইন পুরোপুরি কাভার না করলেও এসইসির পরোক্ষ সম্মতিতে ২০১৫ ও ১৬ সালে ডিএসই এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। সে সময় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়া অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি পেলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার কয়েক ঘণ্টার জন্য স্থগিত করত ডিএসই। লেনদেন পুনরায় চালুর পরও যদি অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি পায় সেক্ষেত্রে পুরো দিন অথবা কয়েক দিনের জন্য স্থগিত করা হতো। কিন্তু এ ধরনের পদক্ষেপে কারসাজিতে জড়িতদের পাশাপাশি অন্যসব বিনিয়োগকারীরা আটকে যাওয়ায় সে সময় তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ফলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হল্ট ও সাসপেন্ডের মতো পদক্ষেপ থেকে ডিএসই সরে আসে। পরবর্তী সময়ে কোম্পানির লেনদেন স্থগিত করার ক্ষমতা কমিশন নিজের হাতে নিয়ে নেয়। সম্প্রতি কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকলেও স্বল্প সময়ে কয়েকগুণ দরবৃদ্ধির পর জিলবাংলার শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে এসইসি। কিছুদিন পর স্থগিতাদেশ তুলেও নেয়। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ডিএসইর কর্মকর্তারা তালিকাভুক্ত কোম্পানি তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করতে পারতেন। এ বিষয়ে আইনে বিএসইসির সম্মতি নেওয়ার কোনো বিষয় উল্লেখ ছিল না। কিন্তু সে সময় একটি কোম্পানি ডিএসইর তাৎক্ষণিক পরিদর্শন নিয়ে আপত্তি তুললে আইন পরিবর্তন করে কমিশনের সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়। এখন এটির পরিবর্তন চেয়েছে ডিএসই, যাতে পুঁজিবাজারের স্বার্থে যে কোনো সময়ে যে কোনো কোম্পানি পরিদর্শন করতে পারেন স্টক এক্সচেঞ্জটির কর্মকর্তারা। লিস্টিং রেগুলেশনের ৪৯ ও ৫০ ধারার অ্যামেন্ডমেন্ট চেয়েছে ডিএসই। কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল ও প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যদি সমর্থন না করে সেক্ষেত্রে ডিএসই সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার লেনদেন সময়ে সময়ে সাময়িকভাবে স্থগিতাদেশ দিতে পারে। একই ভাবে লেনদেন সাসপেন্ডের ক্ষেত্রেও ক্ষমতা চেয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জটি।
|
|
|
|
|
|
|