ঢাকা ০৬:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আধুনিক কেবিন ব্লক ও দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা উদ্বোধন Logo ঝিনাইদহে ১০ ও ১৬ মাসে হিফজ সম্পন্ন, দুই শিক্ষার্থী ওমরাহ হজে পাঠাবে মাদ্রাসা Logo গাইবান্ধা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক ডা. ময়নুল হাসান সাদিক Logo কক্সবাজার-৩ আসনে বিএনপির আস্থা লুৎফুর রহমান কাজল Logo উখিয়ায় শিশু ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার Logo শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা Logo মহেশপুরে মোটরসাইকেল ও আলমসাধুর সংঘর্ষে কলেজ ছাত্র নিহত Logo কেশবপুরে বিএনপির প্রার্থী তালিকায় রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ Logo যশোরে তরিকুল ইসলাম স্মরণে সাংবাদিক ইউনিয়নের দোয়া মাহফিল Logo সাদুল্লাপুরে হলুদক্ষেতে বৃদ্ধাকে ধর্ষণ ঘটনায় যুবক গ্রেফতার

অব্যবস্থাপনায় ধংস হচ্ছে কপিলমুনি বাজারের ঐতিহ্য, জন ভোগান্তি চরমে

আব্দুল মজিদ, পাইকগাছা (খুলনা)
  • আপডেট সময় : ১৩১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বছরে অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও বছরের পর বছর অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার দক্ষিণ খুলনার বানিজ্যিক উপশহর কপিলমুনি। একসময় বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হতো এই বাজারের মালামালের দাম। লাখ লাখ মানুষের একমাত্র বড় মোকাম(বাজার) এটি। বাংলা ১৩৩৯ সালে রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু প্রতিষ্ঠা করেন খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি বাজার। গুরুত্বপূর্ণ এই উপশহরকে পৌরসভা করতে সবধরনের আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন করা হয়। সেই সাথে খুলনা ও সাতক্ষীরা মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দুই যুগ আগে উদ্বোধন করা কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু। দুই যুগ পার হলেও কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু আজও বাস্তবায়ন হয়নি। বরং নদের বক্ষে পড়ে আছে ১৮ টি পিলার। এই ভাবে ধংস হচ্ছে ঐতিহ্যের প্রতীক কপিলমুনি বাজার।
সেই সাথে মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত কপিলমুনি বাজার আজ অবহেলায় হারাচ্ছে জৌলুস। অপরিকল্পিত দোকান, ইচ্ছে মত দখল, ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশের কারণে বাজারে প্রবেশ করা কঠিন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বাজারের অলিগলিতে কাদামাটি দেখে মনে হয় এটা কৃষকের ধান রোপণের মাঠ। বছরের পর বছর এই ভাবে চললেও উন্নয়নের বদলে বেড়েছে দখলদারদের প্রভাব। এলাকার প্রবীণ জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে,
কালের স্বাক্ষী বহনকারী কপোতাক্ষ নদ এর তীরে গড়ে উঠা পাইকগাছা উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হলো কপিলমুনি ইউনিয়ন।কাল ও পরিক্রমায় কপিলমুনিতে শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তা আজও সমুজ্জ্বল।
খুলনা জেলার অন্যতম বাণিজ্যিক মোকাম রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু প্রতিষ্ঠিত কপিলমুনি বাজার বর্তমানে অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়ীদের দূর্ভোগের যেন অন্ত নেই। আর বাজারটি দীর্ঘদিন যাবৎ অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় পদে পদে ব্যবসায়ীদের হয়রানী হতে হচ্ছে। অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব আয় হলেও অবহেলার শেষ নেই বাজারে। অবস্থাদৃষ্টে ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ কালে উঠে এসেছে নানা অজানা কাহীনি। এমতাবস্থায় বাজারের সার্বিক উন্নয়ন কল্পে তত্বাবধায়ক সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে কপিলমুনি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকগাছা উপজেলার সর্ব বৃহৎ বাণিজ্যিক মোকাম কপিলমুনি বাজারটি পরিকল্পনাহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে আজ ধবংসের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। বাজার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নির্মিত টিন সেড বিশিষ্ট চাঁদনীগুলো বর্তমানে অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। আর যে উদ্দ্যেশো ও পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। সে সব পরিকল্পনা আজ ভেস্তে গেছে। ফলে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য এসে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাদের।
মুনি বিভিন্ন তীর্থ স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি সব সময় তপ জপে মগ্ন থাকতেন। তপস্যার জন্য যে স্থানে দেহ ত্যাগ করেন সেই স্থানের নামানুসারে কপিল থেকে কপিলমুনি নাম করণ করা হয়। নদী ঘেরা, স্বচ্ছ সলিলা চির স্মৃতি বিজড়িত মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের মাতৃসম কপোতাক্ষ বিধৌত ঋষিবর মহা সাধন কপিলের সাধনাস্থল, জাগ্রত পীর হযরত জাফর আউলিয়ার পদচারণায় ধন্য রায় সাহেবের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল “বিনোদগঞ্জ”। যা বর্তমানে কপিলমুনি বাজার নামে পরিচিত। কপিলমুনির আধুনিক রুপকার স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু’র একান্ত চেষ্টা ও অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে অতি সুনিপুন ভাবে বাংলা ১৩৩৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এই বাজারটি। তাই তারই নামানুসারে নাম করণ হয় বিনোদগঞ্জ।
যতদূর জানা যায়, কপিল থেকে কপিলমুনি এবং কপিলমুনি থেকে বিনোদগঞ্জ। এখানে কোন এক চৈত্র মাসের মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা এই স্থানে কপোতাক্ষ নদে গঙ্গাস্নান বা ঐতিহাসিক মহাবারুণী স্নান উৎসব পালন করেন। তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি, ঐতিহ্যবাহী উপশহর কপিলমুনির বাজারের উন্নয়নসহ জনগণের সেবা নিশ্চিত করার।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অব্যবস্থাপনায় ধংস হচ্ছে কপিলমুনি বাজারের ঐতিহ্য, জন ভোগান্তি চরমে

আপডেট সময় :

 

বছরে অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও বছরের পর বছর অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার দক্ষিণ খুলনার বানিজ্যিক উপশহর কপিলমুনি। একসময় বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হতো এই বাজারের মালামালের দাম। লাখ লাখ মানুষের একমাত্র বড় মোকাম(বাজার) এটি। বাংলা ১৩৩৯ সালে রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু প্রতিষ্ঠা করেন খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি বাজার। গুরুত্বপূর্ণ এই উপশহরকে পৌরসভা করতে সবধরনের আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন করা হয়। সেই সাথে খুলনা ও সাতক্ষীরা মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দুই যুগ আগে উদ্বোধন করা কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু। দুই যুগ পার হলেও কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু আজও বাস্তবায়ন হয়নি। বরং নদের বক্ষে পড়ে আছে ১৮ টি পিলার। এই ভাবে ধংস হচ্ছে ঐতিহ্যের প্রতীক কপিলমুনি বাজার।
সেই সাথে মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত কপিলমুনি বাজার আজ অবহেলায় হারাচ্ছে জৌলুস। অপরিকল্পিত দোকান, ইচ্ছে মত দখল, ময়লা আবর্জনা আর দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশের কারণে বাজারে প্রবেশ করা কঠিন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বাজারের অলিগলিতে কাদামাটি দেখে মনে হয় এটা কৃষকের ধান রোপণের মাঠ। বছরের পর বছর এই ভাবে চললেও উন্নয়নের বদলে বেড়েছে দখলদারদের প্রভাব। এলাকার প্রবীণ জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে,
কালের স্বাক্ষী বহনকারী কপোতাক্ষ নদ এর তীরে গড়ে উঠা পাইকগাছা উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হলো কপিলমুনি ইউনিয়ন।কাল ও পরিক্রমায় কপিলমুনিতে শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তা আজও সমুজ্জ্বল।
খুলনা জেলার অন্যতম বাণিজ্যিক মোকাম রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু প্রতিষ্ঠিত কপিলমুনি বাজার বর্তমানে অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়ীদের দূর্ভোগের যেন অন্ত নেই। আর বাজারটি দীর্ঘদিন যাবৎ অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় পদে পদে ব্যবসায়ীদের হয়রানী হতে হচ্ছে। অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব আয় হলেও অবহেলার শেষ নেই বাজারে। অবস্থাদৃষ্টে ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ কালে উঠে এসেছে নানা অজানা কাহীনি। এমতাবস্থায় বাজারের সার্বিক উন্নয়ন কল্পে তত্বাবধায়ক সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে কপিলমুনি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকগাছা উপজেলার সর্ব বৃহৎ বাণিজ্যিক মোকাম কপিলমুনি বাজারটি পরিকল্পনাহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে আজ ধবংসের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। বাজার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নির্মিত টিন সেড বিশিষ্ট চাঁদনীগুলো বর্তমানে অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। আর যে উদ্দ্যেশো ও পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। সে সব পরিকল্পনা আজ ভেস্তে গেছে। ফলে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য এসে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাদের।
মুনি বিভিন্ন তীর্থ স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি সব সময় তপ জপে মগ্ন থাকতেন। তপস্যার জন্য যে স্থানে দেহ ত্যাগ করেন সেই স্থানের নামানুসারে কপিল থেকে কপিলমুনি নাম করণ করা হয়। নদী ঘেরা, স্বচ্ছ সলিলা চির স্মৃতি বিজড়িত মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের মাতৃসম কপোতাক্ষ বিধৌত ঋষিবর মহা সাধন কপিলের সাধনাস্থল, জাগ্রত পীর হযরত জাফর আউলিয়ার পদচারণায় ধন্য রায় সাহেবের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল “বিনোদগঞ্জ”। যা বর্তমানে কপিলমুনি বাজার নামে পরিচিত। কপিলমুনির আধুনিক রুপকার স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু’র একান্ত চেষ্টা ও অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে অতি সুনিপুন ভাবে বাংলা ১৩৩৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এই বাজারটি। তাই তারই নামানুসারে নাম করণ হয় বিনোদগঞ্জ।
যতদূর জানা যায়, কপিল থেকে কপিলমুনি এবং কপিলমুনি থেকে বিনোদগঞ্জ। এখানে কোন এক চৈত্র মাসের মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা এই স্থানে কপোতাক্ষ নদে গঙ্গাস্নান বা ঐতিহাসিক মহাবারুণী স্নান উৎসব পালন করেন। তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি, ঐতিহ্যবাহী উপশহর কপিলমুনির বাজারের উন্নয়নসহ জনগণের সেবা নিশ্চিত করার।