ঢাকা ১১:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আদালতে লেগুনাচালকের স্বীকারোক্তি : শ্রমিক লীগ নেতার নির্দেশে বাসে আগুন, চুক্তি ৪ লাখ টাকা

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের লেগুনাচালক সোহেল রানা (বাঁয়ে) ও বায়েজিদ থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদারুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

চট্টগ্রামে শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলমের সঙ্গে চার লাখ টাকার চুক্তিতে বিআরটিসি বাস ডিপোতে থাকা চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন লেগুনাচালক সোহেল রানা (৪০)। আগুন দেওয়ার ঠিক ১০ ঘণ্টা আগে এ জন্য সোহেলকে ৫০০ টাকা অগ্রিম দিয়ে কাজটি করতে বলেন দিদারুল আলম। কথা ছিল বাকি টাকা দেওয়া হবে কাজ শেষে।

মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জুনাইদের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথা বলেন সোহেল রানা।

গত শনিবার (২০ জুলাই) দিনগত রাতে চট্টগ্রামে নতুনপাড়া বিআরটিসি বাস ডিপোতে চারটি বাসে আগুন লাগে। এ সময় চট্টগ্রামসহ সারাদেশে কারফিউ জারি ছিল। এ ঘটনায় মামলার পরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সোহেল রানাকে শনাক্ত করে।

২২ জুলাই তাকে গ্রেফতারের পর আগুন দেওয়ার নির্দেশদাতা হিসেবে বায়েজিদ থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদারুল আলমের নাম উঠে আসে। সোহেলের দেখানো মতে পরে বালুচরা এলাকা থেকে দিদারুল আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

জবানবন্দিতে সোহেল আদালতকে বলেন, তিনি চট্টগ্রাম-হাটহাজারী রোডে লেগুনা চালাতেন। ১৫ দিন আগে লেগুনা চালানো বন্ধ হয়ে গেলে আর্থিক সংকটে পড়েন তিনি। এসময় দিদারের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য যান। শনিবার (২০ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় সোহেলকে বাস পোড়ানোর প্রস্তাব দেন দিদার। এ জন্য তাকে ৪ লাখ টাকা দেবেন বলে জানান দিদার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রহমত উল্লাহ বলেন, ঘটনার সময় বিআরটিসির ডিপোর ক্লিনিং শেডের পাশে থাকা একটি বাসের সিটের ফোম ছিঁড়ে তাতে ব্রেক ওয়েল লাগিয়ে দিয়াশলাই দিয়ে চারটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেন সোহেল। এরপর দেয়াল টপকে পালিয়ে যান।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলমের নির্দেশে গ্রেফতার লেগুনাচালক সোহেল রানা বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দিদারুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) তাকে চট্টগ্রাম আদালতে পাঠিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালত এখনো রিমান্ড শুনানি করেননি। রিমান্ডে নিলে বিস্তারিত জানা যাবে।

নগরের অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের নতুনপাড়া এলাকায় বিআরটিসি ডিপো অবস্থিত। সেখানে ৯৬টি সরকারি বাস রয়েছে। আগুনে একটি বাসের ১৬টি আসন এবং আরেকটির আটটি আসন পুড়ে যায়। বাকি দুটি আংশিক পুড়ে যায়। এ ঘটনায় বিআরটিসি ডিপো চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপক মো. জুলফিকার বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় রোববার মামলা করেন।

এর আগে ২০২৩ সালে মো. রুবেল নামে বিআরটিসির এক ঠিকাদারকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে দিদারুল আলম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি এই দিদারুল আলম।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আদালতে লেগুনাচালকের স্বীকারোক্তি : শ্রমিক লীগ নেতার নির্দেশে বাসে আগুন, চুক্তি ৪ লাখ টাকা

আপডেট সময় : ১১:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

 

চট্টগ্রামে শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলমের সঙ্গে চার লাখ টাকার চুক্তিতে বিআরটিসি বাস ডিপোতে থাকা চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন লেগুনাচালক সোহেল রানা (৪০)। আগুন দেওয়ার ঠিক ১০ ঘণ্টা আগে এ জন্য সোহেলকে ৫০০ টাকা অগ্রিম দিয়ে কাজটি করতে বলেন দিদারুল আলম। কথা ছিল বাকি টাকা দেওয়া হবে কাজ শেষে।

মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জুনাইদের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথা বলেন সোহেল রানা।

গত শনিবার (২০ জুলাই) দিনগত রাতে চট্টগ্রামে নতুনপাড়া বিআরটিসি বাস ডিপোতে চারটি বাসে আগুন লাগে। এ সময় চট্টগ্রামসহ সারাদেশে কারফিউ জারি ছিল। এ ঘটনায় মামলার পরে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সোহেল রানাকে শনাক্ত করে।

২২ জুলাই তাকে গ্রেফতারের পর আগুন দেওয়ার নির্দেশদাতা হিসেবে বায়েজিদ থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি দিদারুল আলমের নাম উঠে আসে। সোহেলের দেখানো মতে পরে বালুচরা এলাকা থেকে দিদারুল আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

জবানবন্দিতে সোহেল আদালতকে বলেন, তিনি চট্টগ্রাম-হাটহাজারী রোডে লেগুনা চালাতেন। ১৫ দিন আগে লেগুনা চালানো বন্ধ হয়ে গেলে আর্থিক সংকটে পড়েন তিনি। এসময় দিদারের কাছে আর্থিক সহায়তার জন্য যান। শনিবার (২০ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় সোহেলকে বাস পোড়ানোর প্রস্তাব দেন দিদার। এ জন্য তাকে ৪ লাখ টাকা দেবেন বলে জানান দিদার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রহমত উল্লাহ বলেন, ঘটনার সময় বিআরটিসির ডিপোর ক্লিনিং শেডের পাশে থাকা একটি বাসের সিটের ফোম ছিঁড়ে তাতে ব্রেক ওয়েল লাগিয়ে দিয়াশলাই দিয়ে চারটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেন সোহেল। এরপর দেয়াল টপকে পালিয়ে যান।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিক লীগ নেতা দিদারুল আলমের নির্দেশে গ্রেফতার লেগুনাচালক সোহেল রানা বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দিদারুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) তাকে চট্টগ্রাম আদালতে পাঠিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালত এখনো রিমান্ড শুনানি করেননি। রিমান্ডে নিলে বিস্তারিত জানা যাবে।

নগরের অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের নতুনপাড়া এলাকায় বিআরটিসি ডিপো অবস্থিত। সেখানে ৯৬টি সরকারি বাস রয়েছে। আগুনে একটি বাসের ১৬টি আসন এবং আরেকটির আটটি আসন পুড়ে যায়। বাকি দুটি আংশিক পুড়ে যায়। এ ঘটনায় বিআরটিসি ডিপো চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপক মো. জুলফিকার বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় রোববার মামলা করেন।

এর আগে ২০২৩ সালে মো. রুবেল নামে বিআরটিসির এক ঠিকাদারকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে দিদারুল আলম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি এই দিদারুল আলম।