আরিফুর রহমান দোলন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার: সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ
- আপডেট সময় : ১১:১৩:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ ২৩৭ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনকে মানিলন্ডারিংয়ের একটি মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে পাঠানোকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে মনে করছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলছেন, আইনানুগভাবে এখনো তিনি মামলার আসামিই নন। এ ঘটনাকে দুঃখজনক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে মন্তব্য করেছেন নেতৃবৃন্দ।
আরিফুর রহমান দোলনকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিক্রিয়ায় রোববার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন দোলন। ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী। যিনি নির্বাচিত হয়ে এখন মন্ত্রী হয়েছেন। আরিফুর রহমান দোলন সেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
ফরিদপুরের দুই ভাই বরকত-রুবেলের বিরুদ্ধে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি ২০২০ সালে রাজধানীর কাফরুল থানায় যে মামলা করে তাতে দোলনের নাম নেই। প্রথম তদন্ত শেষে ১০ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রেও তার নাম নেই। সিআইডির সম্পূরক চার্জশিটে পরিকল্পিতভাবে নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যাতে মামলার সবশেষ আসামির স্থানে অর্থাৎ ৪৬ নম্বর আসামি তিনি। যে চার্জশিট আদালত এখনো গ্রহণই করেননি। অথচ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সাংবাদিক দোলন গত ৫ মার্চ মামলায় হাজির দিতে উপস্থিত হলে আদালতে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিক্রিয়ায় রবিবার ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, মামলার এজাহারে নাম না থাকলেও আরিফুর রহমান দোলনকে কারাগারে প্রেরণ খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সাংবাদিকতার পাশাপাশি যেহেতু তিনি স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, সেহেতু তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।
এ বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, মামলায় প্রমাণিত হওয়ার আগেই একজন সাংবাদিককে এভাবে কারাগারে পাঠানো খুবই দুঃখজনক। দেশের অনেক ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে এমন অনেক মামলাই রয়েছে, তাদেরকে তো এভাবে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে না। দোলন ভাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন, এটা বোঝাই যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু মামলা চলমান রয়েছে, এখন পর্যন্ত রায় হয়নি এবং আরিফুর রহমান দোলন একজন সাংবাদিক, তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতো।
ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনকে মানিলন্ডারিংয়ের মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে পাঠানো হলেও বাস্তবে আইনানুগভাবে এখনো তিনি মামলার আসামিই নন। ফরিদপুরের দুই ভাই বরকত-রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডি ঢাকার কাফরুল থানায় যে মামলা করেছে, তাতে প্রথমে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ও ৪১ জনকে অব্যাহতি (ঘঙঘ ঝঊঘঞ টচ) দেয়। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণও করে। পরে অভিযোগ গঠনের সময় আদালত অধিকতর তদন্তের জন্য পাঠায় সিআইডিকে।
এই মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ৬জন। এদের মধ্যে শুধুমাত্র বরকত ৫১ জনের নাম ব৬েছেন। জবানবন্দির এক জায়গায় শুধু একবার আরিফুর রহমান দোলনের নাম আছে (বাকি পাঁচজনের কেউই দোলনের নাম বলেননি)।
তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য। সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনকে দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ঢাকা টাইমস-এ কর্মরত সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।