ঢাকা ০৬:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নরসিংদীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা Logo ‘দুর্গা পূজায় সৌজন্যে ইলিশ ভারতে পাঠানোর অনুমোদন’ Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগার থেকে ভারতীয় নাগরিক রামদেবকে স্বাদেশে প্রত্যাবাসন Logo নিউট্রিশন ইন সিটি ইকোসিস্টেমস প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের চুক্তি স্বাক্ষর Logo বিহারীবস্তিতে দুস্কৃতিকারীর হামলায় শালিসি ব্যক্তিত্ব পূর্ব আহত Logo শিবগঞ্জের দ্বিতীয় দফায় ভাঙ্গনের কবলে পদ্মা পাড়ের মানুষ, ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ Logo কক্সবাজারে ইউনিয়ন হাসপাতালের সাথে ভোরের পাখি সংগঠনের স্বাস্থ্য সেবা চুক্তি Logo জকসু ও সম্পূরক বৃত্তিসহ জবি শাখা বাগছাসের ৫ দাবি Logo ইঞ্জিনিয়ার হারুন উর রশিদ গার্লস কলেজের শিক্ষার্থীদের নবীন বরন Logo জাতীয়তাবাদী তাঁতীদল সিলেট জেলা শাখার প্রচার মিছিল সম্পন্ন

শেরপুরে শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার অনন্য নিদর্শন

মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, শেরপুর
  • আপডেট সময় : ৪৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের বুকে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ। স্থাপত্যের অনন্য শৈল্পিক সৌন্দর্য আর ধর্মীয় আবেগের মেলবন্ধনে শতবর্ষ প্রাচীন এই মসজিদ আজও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। স্থানীয় ইতিহাস বলছে,ইংরেজ শাসনের আগেই নির্মিত হয়েছিল এই মসজিদ। এই নামের রহস্য লুকিয়ে আছে এর বারোটি দরজায়। পূর্বে ৯টি,দক্ষিণে ২ টি এবং উত্তরে ১টি। প্রথমে একতলা হলেও বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে পাঁচতলায়। একই সঙ্গে প্রায় ৩-৪ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন,যা নিঃসন্দেহে এক বিরল দৃষ্টান্ত। মসজিদের পাশে রয়েছে বিস্তৃত একটি বড়দিঘী যা এর সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস,এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি একসময় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৬০-এর দশকে জামালপুরের মাওলানা আজিজুল হক স্বপ্নে এর অবস্থান জানতে পারেন। এরপর প্রায় ১০ ফুট মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে আসে এর দেয়াল। ১৯৬৩ সালে পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে ইতিহাসের এই অমূল্য নিদর্শন।
প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন নামাজ আদায় ও ঐতিহ্যের টান অনুভব করতে। কেউ আসেন মানত পূরণের জন্য,কেউবা রোগমুক্তির আশায়। শুধু নামাজ নয়, এখানে মানুষের বিশ্বাস,আশা আর কৃতজ্ঞতার সমবেত প্রকাশ ঘটে। এক মুসল্লি করিম জানান,অনেক দূর থেকে এসেছি শুধু এই মসজিদ দেখতে আর নামাজ আদায় করতে। ঐতিহাসিক জায়গায় নামাজ পড়তে পেরে সত্যিই গর্ব বোধ করছি। আরেকজন রহিম বলেন,এখানে এসে মনটা অদ্ভুত শান্ত হয়ে যায়। হাজারো মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পেরে,এটা সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা।মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. মাজহারুল ইসলাম জানান,এটি শুধু নামাজ পড়ার জায়গা নয়,বরং আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বর্তমানে সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে,যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর গৌরব অনুভব করতে পারে। শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ কেবল একটি স্থাপনা নয়,এটি শেরপুরবাসীর গর্ব, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি মানুষকে একত্রিত করছে প্রার্থনার ছায়াতলে,জাগিয়ে তুলছে ঐতিহ্যের আবেগ আর আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেরপুরে শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার অনন্য নিদর্শন

আপডেট সময় :

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের বুকে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ। স্থাপত্যের অনন্য শৈল্পিক সৌন্দর্য আর ধর্মীয় আবেগের মেলবন্ধনে শতবর্ষ প্রাচীন এই মসজিদ আজও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। স্থানীয় ইতিহাস বলছে,ইংরেজ শাসনের আগেই নির্মিত হয়েছিল এই মসজিদ। এই নামের রহস্য লুকিয়ে আছে এর বারোটি দরজায়। পূর্বে ৯টি,দক্ষিণে ২ টি এবং উত্তরে ১টি। প্রথমে একতলা হলেও বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে পাঁচতলায়। একই সঙ্গে প্রায় ৩-৪ হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করতে পারেন,যা নিঃসন্দেহে এক বিরল দৃষ্টান্ত। মসজিদের পাশে রয়েছে বিস্তৃত একটি বড়দিঘী যা এর সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস,এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি একসময় মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৬০-এর দশকে জামালপুরের মাওলানা আজিজুল হক স্বপ্নে এর অবস্থান জানতে পারেন। এরপর প্রায় ১০ ফুট মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে আসে এর দেয়াল। ১৯৬৩ সালে পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে ইতিহাসের এই অমূল্য নিদর্শন।
প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন নামাজ আদায় ও ঐতিহ্যের টান অনুভব করতে। কেউ আসেন মানত পূরণের জন্য,কেউবা রোগমুক্তির আশায়। শুধু নামাজ নয়, এখানে মানুষের বিশ্বাস,আশা আর কৃতজ্ঞতার সমবেত প্রকাশ ঘটে। এক মুসল্লি করিম জানান,অনেক দূর থেকে এসেছি শুধু এই মসজিদ দেখতে আর নামাজ আদায় করতে। ঐতিহাসিক জায়গায় নামাজ পড়তে পেরে সত্যিই গর্ব বোধ করছি। আরেকজন রহিম বলেন,এখানে এসে মনটা অদ্ভুত শান্ত হয়ে যায়। হাজারো মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পেরে,এটা সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা।মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. মাজহারুল ইসলাম জানান,এটি শুধু নামাজ পড়ার জায়গা নয়,বরং আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বর্তমানে সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে,যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর গৌরব অনুভব করতে পারে। শাহী বারোদুয়ারী মসজিদ কেবল একটি স্থাপনা নয়,এটি শেরপুরবাসীর গর্ব, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি মানুষকে একত্রিত করছে প্রার্থনার ছায়াতলে,জাগিয়ে তুলছে ঐতিহ্যের আবেগ আর আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন।