ঈশ্বরগঞ্জে অপরাধীকে বাঁচাতে মামলা দিয়ে হয়রানি
- আপডেট সময় : ৫৯ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহে ঈশ্বরগঞ্জের উচাখিলা ইউনিয়নের মরিচারচরের শিশু ফাতেমার লাশ একটি নির্মাণাধীন ভবনের সেপ্টি ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাদীর পরিবারকে হয়রানী এবং মৃত আ: খালেক মাস্টারের ছেলে কাউছার মিয়াকে (৩৩) বাঁচাতে ভাংচুর, ছিনতাইয়ের মত মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নিহত শিশুর মা শাহনাজ বেগম জানায়, ‘ঘটনারদিন আমার মেয়ে ফাতেমা যখন বাড়ির সামনে খেলছিল। সেসময় প্রতিবেশী কাওসারও ঘর নির্মাণের কাজ করছিল। এদিন দুপুরে মেয়েকে গোসল করাতে খোঁজাখুঁজি করছিলাম। খুঁজাখুঁজির একপর্যায়ে কাউছারের নির্মাণাধীন বাড়ির অরক্ষিত সেপ্টি ট্যাংকি থেকে মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুর বাবা কামাল হোসেন জানান, বিবাদী পক্ষের সাদিয়া আফরোজ নামে একজন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে যার নাম্বার- ৬৩৩/২০২৫। আমার মেয়ের মৃত্যুতে আমি এবং আমার পরিবার শোকে আত্মহারা। থানা এবং হাসপাতালে লাশ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকি। মেয়েকে হত্যার ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতেই আমার চাচা ও ভাইদের নামে একটি কাউন্টার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।
স্থানীয় হারুন অর রশিদ জানান, ফাতেমার মৃত্যুর পরেরদিন জামাই আবু বকর সিদ্দিক কাউছারের বাড়ির সামনে দিয়ে আসার সময় তার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও ইট ছুড়াছুড়ির মত ঘটনা ঘটে। এ সময় জামাই আবু বকর সিদ্দিক মাথায় কিছু আঘাত পান। কিন্তু টাকার নেয়ার বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
মৃত আ: খালেক মাস্টারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, অসাবধানতার কারণে শিশু ফাতেমার মৃত্যু হয়। পরের দিন আমার মেয়ের জামাই মিমাংসার জন্য গেলে তাদের সাথে কিছুটা কথাকাকাটি শুরু হলে একপর্যায়ে হাতাহাতি ও ইটপাটকেল শুরু হয় কিন্তু কত টাকা নিয়েছে তা আমি বলতে পারছি না।
ফাতেমার দাদা মো. আব্দুল বারী বলেন, এ মৃত্যুতে ধামাচাপা দিতে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের মত মিথ্যা মামলা দিয়ে মূল ঘটনা আড়াল করতে চাইছে নাদিয়া আফরোজ ও কাউছার। আমরা প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে অপরাধীর বিচার দাবি করছি।
মামলার বাদী সাদিয়া আফরোজ জানান, আমি মামলার বাদী হতে চাইনি, ননদের জামাই আমাকে মামলার বাদী বানিয়েছে।
৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো: আকরাম হোসেন জানান, শিশু ফাতেমার মৃত্যুর পরদিন একটু হাতাহাতির মত ঘটনা ঘটেছে শুনেছি, কিন্তু টাকা নেওয়ার মত ছিনতাই বা ডাকাতির মত কোন ঘটনা ঘটেনি শুনেছি। এ বিষয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা হওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। খুব দ্রুত প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মো: জালাল উদ্দীন জানান, শিশু ফাতেমার বাবা কামাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। কোর্টে মামলার বিষয়ে আমি জানি না।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইন্সপেক্টর মন্টু চন্দ্র পাল জানান, সাদিয়া আফরোজ বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করেন। মামলার বিষয়ে তদন্তে যাওয়া হয়নি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



















