উপজেলা প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপে ২০টি গ্রামে পানি ঢুকতে পারেনি
- আপডেট সময় : ৮৭ বার পড়া হয়েছে
কয়েক দিনের অতি বৃষ্টি এবং অপরিকল্পিতভাবে নদী খননসহ মৎস্য ঘের করার ফলে যশোরের কেশবপুর পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দেখা দিয়েছে আগাম বন্যার আশঙ্কা। এরই মধ্যে প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন উপজেলাবাসীকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে হরিহর, বুড়িভদ্রা ও খোজাখালি খালের উজানের পানি নতুন করে যাতে মহল্লায় প্রবেশ করতে না পারে এরজন্য গত ৯ ও ১০ জুলাই তিনি জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন কালভার্টের মুখ এবং নিচু স্থানে বালির বস্তা দিয়ে বন্ধ করে দেন। এরফলে মধ্যকুল আলতাপোলসহ প্রায় ২০টি গ্রাম জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এসব অঞ্চলে প্রথমদিকে প্লাবিত হলেও নির্বাহী কর্মকর্তার এই পদক্ষেপের ফলে নতুন করে আর উজানের পানি উঠতে পারেনি। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছে গ্রামবাসীর মধ্যে। তার ওই তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে খুশি হয়েছেন জলাবদ্ধ মানুষেরা। এরই মধ্যে কেশবপুর-ভবানীপুর,নারানপুর সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কে পানি ওঠায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। জলাবদ্ধ অঞ্চলের লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, যশোরের কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সীমাহীন দুর্নীতি এবং সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন কেশবপুরবাসী। ইতিমধ্যে পৌর শহরের মধ্যকুল, হাবাসপোল, শহরের কাওরাপাড়া, মাছ বাজার ও আলতাপোলসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ভেরচী, ভরতভায়না আগরহাটি দশকাউনিয়া, কালিচরনপুর, কপালিয়া, শানতলা, বালিয়াডাঙ্গা ও ভেরচীসহ প্রায় ৪০ গ্রামে জলাবদ্ধ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরে কেশবপুর উপজেলা ১৪৩ গ্রামের মধ্যে প্রায় ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে আসছে। মানব সৃষ্ট এ বন্যায় দিশেহারা হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। বেশ কয়েকটি পরিবার জানায়, তারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কেশবপুরকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে চলতি বছর প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বুড়িভদ্রা নদী খননের প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্ত শুকনো মৌসুমে সামান্য এলাকায় নদী খনন করে খনন কাজ বন্ধ রাখা হয়। গত সপ্তাহে খনন কাজ শেষ করা হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার বলেন, অতি বৃষ্টিতে কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে এ খবর তাদের কাছে আসছে। এছাড়া এক সপ্তাহ আগে বুড়িভাদ্রা নদীর খনন কাজ শেষ হলেও কয়েকটি স্থানে মাটি সরানোর কাজ বাকী আছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, কয়েক দিনের বর্ষায় কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া যে সব ঘের মালিক সরকারি সড়ক ঘেরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করছে এবং স্যালো ও মটরপাম্প দিয়ে তাদের মৎস্য ঘেরে পানি তুলছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে ঘের মালিক আসাদসহ বেশ কয়েকটি ঘেরে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা (অর্থদন্ড) করা হয়েছে।




















