ঢাকা ০৭:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ওয়াসায় কাজে অনিয়মের শেষ নাই: এমডি

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:১০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেছেন, ওয়াসাতে এসে দেখা গেলো এখানে অনিয়মের কোনও শেষ নাই। কাজ অনেক হয়েছে, তবে তা বেশিরভাগই হয়েছে নিয়মের মধ্যে। পৌরসভার রাস্তা খুঁড়লো, ওয়াসার সঙ্গে চুক্তি করলো, ওয়াসা টাকা দিয়ে দিলো, এক খাতের খরচ করবে অন্য খাত থেকে। যার জন্য রাস্তা দিনের পর দিন কাটা অবস্থায় পড়ে আছে, ধুলাবালি উড়ছে, রিকশা পড়ে যাচ্ছে, মানুষ এক্সিডেন্ট করছে। এখানে আমাদের সমন্বয়ের অনেক অভাব।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় লেকশোর হোটেলে ওয়াটার এইড বাংলাদেশ আয়োজিত নবওয়াশা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ফজলুর রহমান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত ধারনা ছিল ওয়াসা শুধু পানি নিয়ে কাজ করে। এখানে এসে দেখলাম, সুয়ারেজ সিস্টেম নিয়েও কাজ করে। কিন্তু আপনারা জেনে আশ্চর্য হবেন যে ঢাকা শহরের মতো জায়গায় মাত্র ২০ শতাংশ সুয়ারেজ কাভারেজ আছে, ৮০ শতাংশ জায়গাতেই নাই। তাহলে এই ৮০ শতাংশের কী হবে? আমরা যখন ঢাকা শহরের বিভিন্ন ড্রেনের পাশ দিয়ে হাঁটতে থাকি তখন প্রচণ্ড গন্ধ নাকে আসে।

এর কারণ হলো পয়োবর্জ্য যেটা আছে সেটি কোনও না কোনোভাবে এই ড্রেনে পড়ে। আমার এটা ধারনার বাইরে ছিল। এটার জন্য আমরা একটি মাস্টারপ্ল্যান করেছি। এইটার আওতায় দুটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কাজ করছে আরও তিনটি প্ল্যান্ট তৈরি করছি, তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ৭০ শতাংশ কাভারেজ দিতে পারবো বলে আশা করছি। পুরোটা হয়তো হবে না।

ফজলুর রহমান বলেন, যতই প্রকল্প করেন না কেন, আমাদের যে সচেতনতার জায়গা সেটি বাড়াতে হবে। আমরা ময়লার যে গাড়ি কিংবা লোকটি আসে, আমি বিশ্বাস করি এই লোকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আমরা নামও দিয়েছি ময়লার লোক। আমরা কিন্তু বলি না যে পরিষ্কার করার লোকটি আসছে। ময়লার গাড়ি না বলে আমরা যদি বলতাম ময়লা পরিষ্কারের গাড়ি আসছে, আমার মতে ময়লার গাড়ি নামই চেঞ্জ করা উচিত।

ময়লা জিনিসটা একটি নেগেটিভ শব্দ। পৌরসভাতে দেখবেন সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক, পরিচ্ছন্নকর্মী যখন আসেন তখন তার কথা শোনার সময় থাকে না। অথচ ওই লোকটা কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এই জায়গায় আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, মাটির ট্রাক যখন ঢাকা শহরে ঢুকে তখন রাস্তায় মাটি ফেলতে ফেলতে যায়। যেখানে মাটি পড়ে সেখানে আরেক গাড়ি এসে লেপে দিয়ে যায়। এই মাটি যখন শুকায় তখন ধুলা তৈরি করে। কয়েকদিন ধরে বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা, না হওয়ার তো কোনও কারণ দেখি না। কারণ আমার-আপনার সচেতনতার অভাব এবং আমরা ঠিকমতো কাজ করছি না। আমাদের সব সিস্টেম আছে, কিন্তু কেন জানি কাজ হচ্ছে না।

ফজলুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের নতুন বাংলাদেশ। এখানে ফেল হওয়া যাবে না, ফেল হওয়ার সুযোগ নাই। আমরা ফেল করতে চাই না, এগিয়ে যেতে চাই, এজন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। অনেকে অনেক রাজনৈতিক মতাদর্শের আছেন, এদেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয় ভুলে গেলে চলবে না।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশের হেড অব টেকনিক্যাল সার্ভিসেস মো. তাহমিদুল ইসলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ওয়াসায় কাজে অনিয়মের শেষ নাই: এমডি

আপডেট সময় : ০৮:১০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

 

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেছেন, ওয়াসাতে এসে দেখা গেলো এখানে অনিয়মের কোনও শেষ নাই। কাজ অনেক হয়েছে, তবে তা বেশিরভাগই হয়েছে নিয়মের মধ্যে। পৌরসভার রাস্তা খুঁড়লো, ওয়াসার সঙ্গে চুক্তি করলো, ওয়াসা টাকা দিয়ে দিলো, এক খাতের খরচ করবে অন্য খাত থেকে। যার জন্য রাস্তা দিনের পর দিন কাটা অবস্থায় পড়ে আছে, ধুলাবালি উড়ছে, রিকশা পড়ে যাচ্ছে, মানুষ এক্সিডেন্ট করছে। এখানে আমাদের সমন্বয়ের অনেক অভাব।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় লেকশোর হোটেলে ওয়াটার এইড বাংলাদেশ আয়োজিত নবওয়াশা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ফজলুর রহমান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত ধারনা ছিল ওয়াসা শুধু পানি নিয়ে কাজ করে। এখানে এসে দেখলাম, সুয়ারেজ সিস্টেম নিয়েও কাজ করে। কিন্তু আপনারা জেনে আশ্চর্য হবেন যে ঢাকা শহরের মতো জায়গায় মাত্র ২০ শতাংশ সুয়ারেজ কাভারেজ আছে, ৮০ শতাংশ জায়গাতেই নাই। তাহলে এই ৮০ শতাংশের কী হবে? আমরা যখন ঢাকা শহরের বিভিন্ন ড্রেনের পাশ দিয়ে হাঁটতে থাকি তখন প্রচণ্ড গন্ধ নাকে আসে।

এর কারণ হলো পয়োবর্জ্য যেটা আছে সেটি কোনও না কোনোভাবে এই ড্রেনে পড়ে। আমার এটা ধারনার বাইরে ছিল। এটার জন্য আমরা একটি মাস্টারপ্ল্যান করেছি। এইটার আওতায় দুটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কাজ করছে আরও তিনটি প্ল্যান্ট তৈরি করছি, তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ আমরা ৭০ শতাংশ কাভারেজ দিতে পারবো বলে আশা করছি। পুরোটা হয়তো হবে না।

ফজলুর রহমান বলেন, যতই প্রকল্প করেন না কেন, আমাদের যে সচেতনতার জায়গা সেটি বাড়াতে হবে। আমরা ময়লার যে গাড়ি কিংবা লোকটি আসে, আমি বিশ্বাস করি এই লোকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আমরা নামও দিয়েছি ময়লার লোক। আমরা কিন্তু বলি না যে পরিষ্কার করার লোকটি আসছে। ময়লার গাড়ি না বলে আমরা যদি বলতাম ময়লা পরিষ্কারের গাড়ি আসছে, আমার মতে ময়লার গাড়ি নামই চেঞ্জ করা উচিত।

ময়লা জিনিসটা একটি নেগেটিভ শব্দ। পৌরসভাতে দেখবেন সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক, পরিচ্ছন্নকর্মী যখন আসেন তখন তার কথা শোনার সময় থাকে না। অথচ ওই লোকটা কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এই জায়গায় আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।

ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, মাটির ট্রাক যখন ঢাকা শহরে ঢুকে তখন রাস্তায় মাটি ফেলতে ফেলতে যায়। যেখানে মাটি পড়ে সেখানে আরেক গাড়ি এসে লেপে দিয়ে যায়। এই মাটি যখন শুকায় তখন ধুলা তৈরি করে। কয়েকদিন ধরে বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা, না হওয়ার তো কোনও কারণ দেখি না। কারণ আমার-আপনার সচেতনতার অভাব এবং আমরা ঠিকমতো কাজ করছি না। আমাদের সব সিস্টেম আছে, কিন্তু কেন জানি কাজ হচ্ছে না।

ফজলুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের নতুন বাংলাদেশ। এখানে ফেল হওয়া যাবে না, ফেল হওয়ার সুযোগ নাই। আমরা ফেল করতে চাই না, এগিয়ে যেতে চাই, এজন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। অনেকে অনেক রাজনৈতিক মতাদর্শের আছেন, এদেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয় ভুলে গেলে চলবে না।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশের হেড অব টেকনিক্যাল সার্ভিসেস মো. তাহমিদুল ইসলাম।