ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

কক্সবাজারের রামুর সেই বিতর্কিত সমাজসেবা কর্মকর্তাকে খুলনায় সংযুক্ত

এস এম হুমায়ুন কবির, কক্সবাজার
  • আপডেট সময় : ২৪৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রামুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবের ঘুস বাণিজ্য ও নানান অসঙ্গির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে তাকে খুলনা হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ে সংযুক্তি দেয়া হয়েছে। একই সাথে রামু সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী অফিসার রুজিনা আকতার রুমিকে (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রামু সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্ত করা হয়। বুধবার (৯ জুলাই) সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে রামু উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবের বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্য, অসামাজিক কার্যকলাপ, ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দের টাকা নয়ছয়সহ নানা অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এদিকে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি সমাজসেবা অধিদপ্তরের নজরে এলে তদন্ত শুরু হয়। এবং পরবর্তী প্রদক্ষেপ হিসেবে বর্তমান কর্মকর্তা আল গালিবকে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয় খুলনায় সংযুক্তি দেয়া হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, রামু উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিধবা, বয়স্ক, এতিম নিবাসী, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতা প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়া হচ্ছিল। অধিকাংশ মানুষ টাকা দিয়েও ভাতা না পেয়ে মাসের পর মাস সমাজসেবা কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরে হয়রানির শিকার হয়ে আসছিলেন। অবশেষে সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় খবরে ভুক্তভোগী অসহায় মানুষজন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য কক্সবাজার সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কৌশিক খান জানান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তবে ৯ জুলাই ২৫ তালিখে অধিদপ্তরের একটি আদেশে রামু সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবকে রামু থেকে সরিয়ে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয় খুলনায় সংযুক্তি দেয়া হয়েছে বলে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিব পুনরায় রামু সমাজ সেবা কার্যালয়ে ফিরতে এবং তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে টাকার মিশনে নেমেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রভাবিত করতে মোটা অংকের লেনদেনের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এমনকি গালিবের অতি বিশ্বস্ত সমাজসেবা অফিসের কর্মচারি হোসনে মোবারক মিনারকে সাথে নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছেও ধর্ণা দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
সুত্রে জানা যায়, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিব রামুতে যোগদানের পর থেকে নিজের অপকর্ম জায়েজ করতে বিগত সরকারদলীয় বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাদেরকে মোটা অংকের অর্থেরও যোগান দিতেন। নিজেকে জাহির করতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ক্যাড়ার হিসেবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নিজের অতীত কর্মকান্ডকে আড়াল করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কক্সবাজারের রামুর সেই বিতর্কিত সমাজসেবা কর্মকর্তাকে খুলনায় সংযুক্ত

আপডেট সময় :

রামুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবের ঘুস বাণিজ্য ও নানান অসঙ্গির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে তাকে খুলনা হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ে সংযুক্তি দেয়া হয়েছে। একই সাথে রামু সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী অফিসার রুজিনা আকতার রুমিকে (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রামু সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে সংযুক্ত করা হয়। বুধবার (৯ জুলাই) সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে রামু উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবের বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্য, অসামাজিক কার্যকলাপ, ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দের টাকা নয়ছয়সহ নানা অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এদিকে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি সমাজসেবা অধিদপ্তরের নজরে এলে তদন্ত শুরু হয়। এবং পরবর্তী প্রদক্ষেপ হিসেবে বর্তমান কর্মকর্তা আল গালিবকে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয় খুলনায় সংযুক্তি দেয়া হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, রামু উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিধবা, বয়স্ক, এতিম নিবাসী, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতা প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ঘুষ নেয়া হচ্ছিল। অধিকাংশ মানুষ টাকা দিয়েও ভাতা না পেয়ে মাসের পর মাস সমাজসেবা কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরে হয়রানির শিকার হয়ে আসছিলেন। অবশেষে সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় খবরে ভুক্তভোগী অসহায় মানুষজন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য কক্সবাজার সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কৌশিক খান জানান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তবে ৯ জুলাই ২৫ তালিখে অধিদপ্তরের একটি আদেশে রামু সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবকে রামু থেকে সরিয়ে হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয় খুলনায় সংযুক্তি দেয়া হয়েছে বলে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিব পুনরায় রামু সমাজ সেবা কার্যালয়ে ফিরতে এবং তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে টাকার মিশনে নেমেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রভাবিত করতে মোটা অংকের লেনদেনের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এমনকি গালিবের অতি বিশ্বস্ত সমাজসেবা অফিসের কর্মচারি হোসনে মোবারক মিনারকে সাথে নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছেও ধর্ণা দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
সুত্রে জানা যায়, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিব রামুতে যোগদানের পর থেকে নিজের অপকর্ম জায়েজ করতে বিগত সরকারদলীয় বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তাদেরকে মোটা অংকের অর্থেরও যোগান দিতেন। নিজেকে জাহির করতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ক্যাড়ার হিসেবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নিজের অতীত কর্মকান্ডকে আড়াল করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।