ঢাকা ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

কলাপাড়ার করমজাতলায় রামনাবাদ নদীর ভাঙনে কোটি টাকার বাঁধ বিলীন

নুর হোসেন নুরানী, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
  • আপডেট সময় : ৮২ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা কলাপাড়ার করমজাতলায় রামনাবাদ নদীর তীব্র ভাঙনে সম্প্রতি নির্মিত ৪০০ ফুট দীর্ঘ বেরিবাঁধ মাত্র ছয় মাসেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারি প্রকল্পে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধটি ভাঙনের কবলে পড়ে পুরো এলাকা আবারও চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙন রোধে গত মে মাসে করমজাতলায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব বসানো হয়েছিল। কিন্তু দুর্বল নির্মাণকাজ, যথাযথ নজরদারির অভাব এবং প্রকৃত সমস্যা নিরসনে টেকসই পরিকল্পনার অভাবে এগুলো কোনো কাজেই আসেনি। গতকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকালে হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে মূল বাঁধের টপসহ ৪০০ ফুট এলাকা নদীতে তলিয়ে যায়। এখন বাঁধের মাঝ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, “এই বাঁধে কোটি টাকার কাজ হয়েছে, কিন্তু ছয় মাসেই ধসে পড়ে গেছে। এখন পুরো গ্রাম আবার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। আমাদের ঘরবাড়ি, জমিজমা সব হুমকির মুখে।”
আরেক বাসিন্দা সালেহা বেগম বলেন, “শুক্রবার বিকালেই নদীর পানি বাড়তে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাঁধে ফাটল ধরে ভেঙে যায়। এখন যা অবশিষ্ট আছে, তাও যদি বাঁচে—তা আল্লাহর রহমত।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রামনাবাদ নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর প্রবাহ ও গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। এতে নদীর তীরবর্তী এলাকা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। বাঁধ নির্মাণের সময় স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনা না করেই কাজ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নদীভাঙন রোধে টেকসই ও আধুনিক প্রকৌশল ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উপকূলীয় এলাকাগুলোর মানুষ প্রতিনিয়ত জীবন-জীবিকার ঝুঁকিতে থাকবে।
এলাকাবাসীর আহ্বান, অতিদ্রুত করমজাতলাসহ ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য স্থায়ী সমাধান এবং জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ও বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হোক। না হলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কলাপাড়ার করমজাতলায় রামনাবাদ নদীর ভাঙনে কোটি টাকার বাঁধ বিলীন

আপডেট সময় :

পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা কলাপাড়ার করমজাতলায় রামনাবাদ নদীর তীব্র ভাঙনে সম্প্রতি নির্মিত ৪০০ ফুট দীর্ঘ বেরিবাঁধ মাত্র ছয় মাসেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারি প্রকল্পে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধটি ভাঙনের কবলে পড়ে পুরো এলাকা আবারও চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙন রোধে গত মে মাসে করমজাতলায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব বসানো হয়েছিল। কিন্তু দুর্বল নির্মাণকাজ, যথাযথ নজরদারির অভাব এবং প্রকৃত সমস্যা নিরসনে টেকসই পরিকল্পনার অভাবে এগুলো কোনো কাজেই আসেনি। গতকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকালে হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে মূল বাঁধের টপসহ ৪০০ ফুট এলাকা নদীতে তলিয়ে যায়। এখন বাঁধের মাঝ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, “এই বাঁধে কোটি টাকার কাজ হয়েছে, কিন্তু ছয় মাসেই ধসে পড়ে গেছে। এখন পুরো গ্রাম আবার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। আমাদের ঘরবাড়ি, জমিজমা সব হুমকির মুখে।”
আরেক বাসিন্দা সালেহা বেগম বলেন, “শুক্রবার বিকালেই নদীর পানি বাড়তে থাকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাঁধে ফাটল ধরে ভেঙে যায়। এখন যা অবশিষ্ট আছে, তাও যদি বাঁচে—তা আল্লাহর রহমত।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রামনাবাদ নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর প্রবাহ ও গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। এতে নদীর তীরবর্তী এলাকা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। বাঁধ নির্মাণের সময় স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনা না করেই কাজ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নদীভাঙন রোধে টেকসই ও আধুনিক প্রকৌশল ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উপকূলীয় এলাকাগুলোর মানুষ প্রতিনিয়ত জীবন-জীবিকার ঝুঁকিতে থাকবে।
এলাকাবাসীর আহ্বান, অতিদ্রুত করমজাতলাসহ ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য স্থায়ী সমাধান এবং জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ও বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হোক। না হলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।