ঢাকা ০১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আজীবন সম্মাননা পেলেন বিশ্বনন্দিত যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ এবং কিংবদন্তী অভিনেত্রী আনোয়ারা শ্রেষ্ঠ নায়ক সজল শ্রেষ্ঠ নায়িকা পরীমণি Logo শীর্ষ সন্ত্রাসীদের যুদ্ধক্ষেত্রে রূপ নিচ্ছে ঢাকা! Logo গুজব ও শঙ্কায় সারাদেশ Logo গোলাম মাওলা সেতু দ্রুত নির্মাণের দাবি: জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন Logo শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে প্রসাশনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo ‘আগামী দশ বছরের মধ্যে দেশের নেতৃত্ব দেবে রাজপথে থাকা তরুণেরা’ Logo ময়মনসিংহে ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন, দুই ঘন্টা চলাচল বন্ধ Logo সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ট্রাকের চাবি পেলেন তিমন চৌধুরী Logo ইসলামপুরে জাংক ফুড বিরোধী ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত Logo গোলাপগঞ্জে অপরাধ দমনে সক্রিয় পুলিশ, এক মাসে ১৫ মামলা নিস্পত্তি

কালো টাকা সাদা: দুর্নীতিকে লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে:টিআইবি

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ৪৪০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বহাল থাকলো কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থের মোড়কে কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক সুযোগ থাকায় বিস্ময় ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রাজস্ব বাড়ানোর খোঁড়া যুক্তিতে দুর্নীতি ও অনৈতিকতার গভীরতার ও ব্যাপকতার বিকাশকে স্বাভাবিকতায় পরিণত করা হচ্ছে। দুর্নীতিকে লাইসেন্স দেওয়ার এ প্রক্রিয়া চিরতরে বন্ধ হবে, এটাই প্রত্যাশিত।

মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার এমন সুবিধা সৎ ও বৈধ আয়ের ব্যক্তি করদাতাকে নিরুৎসাহিত করার সংস্কৃতিকে উসকে দেবে। পাশাপাশি অর্থ ও সম্পদের ব্যাপারে কোনো কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন করার সুযোগ না রাখা দেশে দুর্নীতি সহায়ক উদার পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখার শঙ্কা মাথা উচু করবে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, এ সুযোগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার অঙ্গীকার, যা প্রায়শই সরকারপ্রধানসহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুনরাবৃত্তি করেন, সেই অঙ্গীকারকে প্রহসনে পরিণত করেছে।

এমন বাস্তবতায় কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বাতিল করতে দাবি জানাচ্ছে টিআইবি। বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ডেটা ভেরিফিকেশন সিস্টেম বা ডিভিএস চালু করার ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ ঘোষণায় আইনি জটিলতা এবং করদাতাদের অজ্ঞতার দোহাই দিয়ে যেভাবে ‘অপ্রদর্শিত অর্থে’ ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা জমি কেনা বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হলো, তা সত্যিই হতামাজনক।

তার মতে, কালো টাকাকে সাদা করার নিশ্চয়তার মাধ্যমে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সহজ করে বললে, সরকার দায়মুক্তির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রকারন্তরে নাগরিককে দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিপরীতে সৎ করদাতাদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ কর দেওয়ার বিধান বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে ড. জামান বলেন, ‘বিষয়টি একজন সুনাগরিকের প্রতি বৈষম্যমূলক, একই সঙ্গে তা সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল।

এ প্রক্রিয়ায় নৈতিক আপস করে প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায়ের স্বপ্ন স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদে কখনই বাস্তবায়িত হবে না। যার বড় উদহারণ হলো দুই বছর আগে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

আবার দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও, কেউ সে সুযোগ নেননি। তাই বাজেটে এমন সুযোগ এলে কাদের স্বার্থে রাখা হচ্ছে-সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলা মোটেই অমূলক নয়।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার দীর্ঘদিনের অসাংবিধানিক চর্চা বন্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময় মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, শুভবুদ্ধি, দূরদৃষ্টি, সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রতি সরকার আনুগত্য দেখিয়ে শেষপর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহার করে নেবে-এমনটাই আশা।

একই সঙ্গে, কালো টাকার মালিকদের সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের মাধ্যমে কার্যকর জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে দুর্নীতির মহোৎসবের লাগাম টেনে ধরা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কালো টাকা সাদা: দুর্নীতিকে লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে:টিআইবি

আপডেট সময় :

 

বহাল থাকলো কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থের মোড়কে কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক সুযোগ থাকায় বিস্ময় ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

রাজস্ব বাড়ানোর খোঁড়া যুক্তিতে দুর্নীতি ও অনৈতিকতার গভীরতার ও ব্যাপকতার বিকাশকে স্বাভাবিকতায় পরিণত করা হচ্ছে। দুর্নীতিকে লাইসেন্স দেওয়ার এ প্রক্রিয়া চিরতরে বন্ধ হবে, এটাই প্রত্যাশিত।

মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার এমন সুবিধা সৎ ও বৈধ আয়ের ব্যক্তি করদাতাকে নিরুৎসাহিত করার সংস্কৃতিকে উসকে দেবে। পাশাপাশি অর্থ ও সম্পদের ব্যাপারে কোনো কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন করার সুযোগ না রাখা দেশে দুর্নীতি সহায়ক উদার পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখার শঙ্কা মাথা উচু করবে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, এ সুযোগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার অঙ্গীকার, যা প্রায়শই সরকারপ্রধানসহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুনরাবৃত্তি করেন, সেই অঙ্গীকারকে প্রহসনে পরিণত করেছে।

এমন বাস্তবতায় কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বাতিল করতে দাবি জানাচ্ছে টিআইবি। বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ডেটা ভেরিফিকেশন সিস্টেম বা ডিভিএস চালু করার ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ ঘোষণায় আইনি জটিলতা এবং করদাতাদের অজ্ঞতার দোহাই দিয়ে যেভাবে ‘অপ্রদর্শিত অর্থে’ ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা জমি কেনা বৈধ করার ঢালাও সুযোগ দেওয়া হলো, তা সত্যিই হতামাজনক।

তার মতে, কালো টাকাকে সাদা করার নিশ্চয়তার মাধ্যমে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সহজ করে বললে, সরকার দায়মুক্তির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রকারন্তরে নাগরিককে দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিপরীতে সৎ করদাতাদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ কর দেওয়ার বিধান বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে ড. জামান বলেন, ‘বিষয়টি একজন সুনাগরিকের প্রতি বৈষম্যমূলক, একই সঙ্গে তা সংবিধানের ২০ (২) অনুচ্ছেদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল।

এ প্রক্রিয়ায় নৈতিক আপস করে প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায়ের স্বপ্ন স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদে কখনই বাস্তবায়িত হবে না। যার বড় উদহারণ হলো দুই বছর আগে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

আবার দেশ থেকে পাচার করা টাকা ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া হলেও, কেউ সে সুযোগ নেননি। তাই বাজেটে এমন সুযোগ এলে কাদের স্বার্থে রাখা হচ্ছে-সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলা মোটেই অমূলক নয়।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার দীর্ঘদিনের অসাংবিধানিক চর্চা বন্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময় মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, শুভবুদ্ধি, দূরদৃষ্টি, সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রতি সরকার আনুগত্য দেখিয়ে শেষপর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহার করে নেবে-এমনটাই আশা।

একই সঙ্গে, কালো টাকার মালিকদের সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের মাধ্যমে কার্যকর জবাবদিহিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে দুর্নীতির মহোৎসবের লাগাম টেনে ধরা যায়।