ঢাকা ১২:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

গুম বন্ধে জাতিসংঘের সনদে স্বাক্ষর বাংলাদেশের

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:০৭:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪ ১৮১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বৈশ্বিক সংস্থা জাতিসংঘের গুম এবং নির্যাতন বিষয়ক কনভেনশনে সই করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় এতে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব নেয়ার পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশ মিশনগুলোর রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওইসব বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ঢাকার কূটনীতিকদের জানান, অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে খুবই সোচ্চার। যার অংশ হিসেবে জাতিসংঘের গুম এবং নির্যাতন বিষয়ক কনভেনশনে দ্রুত সই করা হবে।

সব নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি বলপূর্বক গুমের সংস্কৃতি বন্ধে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে (International Convention for the Protection of All Persons from Enforced Disappearance-ICPPED) যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (আগস্ট ২৯) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এ সময় উপদেষ্টারা করতালি দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়াকে ঐতিহাসিক হিসেবে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সব নাগরিকের সুরক্ষায় ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পর ২০১০ সালে এ সনদের বাস্তবায়ন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এ সনদে যুক্ত হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের একদিন আগে বাংলাদেশও এতে যুক্ত হলো।

গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের লক্ষ্য হলো- গুম বন্ধের পাশাপাশি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া।

গত তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বহু মানুষ গুম ও নির্যাতনের শিকার হন। এ সময়ে গুম ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ব্যাপক সমালোচনা হয়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত গোপন বন্দিশালা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মুক্ত হন। এখনো ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক নয় সনদের ৮টিতে সই করলেও এতদিন এ সনদে যুক্ত হয়নি।

গত ১৫ বছর ধরে গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার তাগিদ ছিল। শেখ হাসিনা সরকার তার আমলে সে দাবি অগ্রাহ্য করে চলেছিল।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর দায়িত্ব নেওয়া ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকার দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলে আসা গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যেই অন্তর্র্বতী সরকার গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হওয়ার তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোনো রকম শর্ত ছাড়াই এ সনদে যুক্ত হয় বাংলাদেশ।

এই সনদ সই করার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকার বা এর যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গুম বন্ধে জাতিসংঘের সনদে স্বাক্ষর বাংলাদেশের

আপডেট সময় : ০৪:০৭:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪

বৈশ্বিক সংস্থা জাতিসংঘের গুম এবং নির্যাতন বিষয়ক কনভেনশনে সই করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় এতে সই করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব নেয়ার পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশ মিশনগুলোর রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওইসব বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ঢাকার কূটনীতিকদের জানান, অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে খুবই সোচ্চার। যার অংশ হিসেবে জাতিসংঘের গুম এবং নির্যাতন বিষয়ক কনভেনশনে দ্রুত সই করা হবে।

সব নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি বলপূর্বক গুমের সংস্কৃতি বন্ধে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে (International Convention for the Protection of All Persons from Enforced Disappearance-ICPPED) যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (আগস্ট ২৯) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে সই করেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এ সময় উপদেষ্টারা করতালি দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়াকে ঐতিহাসিক হিসেবে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সব নাগরিকের সুরক্ষায় ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পর ২০১০ সালে এ সনদের বাস্তবায়ন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এ সনদে যুক্ত হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের একদিন আগে বাংলাদেশও এতে যুক্ত হলো।

গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের লক্ষ্য হলো- গুম বন্ধের পাশাপাশি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া।

গত তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বহু মানুষ গুম ও নির্যাতনের শিকার হন। এ সময়ে গুম ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ব্যাপক সমালোচনা হয়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত গোপন বন্দিশালা থেকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মুক্ত হন। এখনো ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক নয় সনদের ৮টিতে সই করলেও এতদিন এ সনদে যুক্ত হয়নি।

গত ১৫ বছর ধরে গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার তাগিদ ছিল। শেখ হাসিনা সরকার তার আমলে সে দাবি অগ্রাহ্য করে চলেছিল।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর দায়িত্ব নেওয়া ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকার দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলে আসা গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যেই অন্তর্র্বতী সরকার গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হওয়ার তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোনো রকম শর্ত ছাড়াই এ সনদে যুক্ত হয় বাংলাদেশ।

এই সনদ সই করার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকার বা এর যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘ।