ঢাকা ০৪:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মুন্সীগঞ্জে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা Logo গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে এনসিপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহমুদ মোত্তাকিম Logo গোমস্তাপুরের ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন Logo নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে বিশ্বনাথে ‘সমতায় তারুণ্য’ প্রকল্পের উদ্বোধন Logo পলাশবাড়ীতে সুবিধাভোগীদের মাঝে ভিডাব্লিউবির চাল বিতরণ Logo সুন্দরবনে অস্ত্র ও গুলিসহ বনদস্যু দুলাভাই বাহিনীর সহযোগী আটক Logo মধ্যরাতে কোস্ট গার্ডের অভিযান, তিন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার Logo নকলা কৃষি অফিসারের উপর হামলার প্রতিবাদে শ্রীবরদীতে কলম বিরতি Logo শ্রীবরদীতে আদিবাসীর অর্ধশতাধিক সুপারি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ Logo ফেনী-২ আসনের বিএনপির যৌথ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পাবার পর কেটে যায় ২৫ মাস

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ৫৮৩ বার পড়া হয়েছে

পাবনার বেড়া পৌরসভার মেয়র এস এম আসিফ শামস : ছবি সংগ্রহ

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমেদ, মতিউরদের পাহাড় সমান দুর্নীতি নিয়ে যখন টক অব দি কান্ট্রি, তখন আরও একটি বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গেলো। জানা গেছে, পাবনার বেড়া পৌরসভার মেয়র এস এম আসিফ শামস প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলা হয়।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটর ভিশন টেল লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির মামলা করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মামলায় আরও আসামি করা হয় ভিশন টেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আইরিন ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম, পরিচালক রাসেল মির্জা এবং শেয়ারহোল্ডার জিয়াউর রহমানকে।

সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এর কপি ২০২২ সালের ২৩ মে পাঠানো হয় বেড়া মডেল থানার ওসির কাছে।

সেই পরোয়ানা বেড়া থানায় পড়ে থাকে আড়াই বছরের বেশি সময়। এরমধ্যে মেয়র এস এম আসিফ শামস দিব্যি ঘুরে বেড়িয়েছেন। অব্যাহত রেখেছেন নিয়মিত কার্যক্রম, করেছেন ফেসবুক লাইভ, অংশ নিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারণায়।

এর মধ্যে দুই বছরের বেশি সময় ধরে সেই পরোয়ানা বেড়া থানায় পড়ে থাকলেও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে কিছু নথি দাখিলের পর তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নেন ঢাকার জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসারের আদালত।

অথচ দুই বছরে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মসূচি এবং নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়মিত অংশ নিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবার প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। বেড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছে ভোটও চেয়েছেন।

সবশেষ গত ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে তাকে। নিয়মিত আসেন ফেসবুক লাইভে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্বেও এরপরও তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।

এ বিষয়ে গত বুধবার বেড়া মডেল থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এই থানায় যোগদানের পর (২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর) আমি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সম্পর্কে জানতে পারি। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তখন আমি তাকে মৌখিকভাবে বলি পাওনা টাকা পরিশোধ করতে।

তিনি আরও বলেন, তার বাবা বর্তমান সংসদ সদস্য ও সংসদে ডেপুটি স্পিকার। তিনি বর্তমান পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাকে গ্রেপ্তার করার আমার কি সাহস আছে? আমি তাকে শুধু মৌখিকভাবে কয়েকবার বলেছি।

এ মামলায় আদালতে হাজির ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে মেয়র এস এম আসিফ শামস বলেন, বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে ২০১৩ সালে ভিশন টেল লিমিটেড থেকে বের হয়ে আসি। মামলা তো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। আদালতের নোটিশ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সম্পর্কে আমাকে আগে জানানো হয় নাই। এদিন আদালতে সমস্যার সমাধান হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, ভিশন টেল লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ শামসের নামে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে দুদকে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। এতে উল্লেখ করা হয়, ভিওআইপির লাইসেন্স ফি বাবদ তিনি বিটিআরসিকে ১৫ কোটি টাকা অগ্রিম এবং প্রতিবছরে ৭ কোটি টাকা হিসাবে তিন বছরে ২১ কোটি টাকা এবং সর্বমোট ৩৬ কোটি টাকা দিয়েছেন।

২০১৪ সালে সার্বিকভাবে ভিশন টেলের কাছে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা পাওনা থেকে যায়। ৮ বছর পর ২০২২ সালে সুদ-আসলে তা হয় ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭১ টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পাবার পর কেটে যায় ২৫ মাস

আপডেট সময় :

 

পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমেদ, মতিউরদের পাহাড় সমান দুর্নীতি নিয়ে যখন টক অব দি কান্ট্রি, তখন আরও একটি বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গেলো। জানা গেছে, পাবনার বেড়া পৌরসভার মেয়র এস এম আসিফ শামস প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলা হয়।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটর ভিশন টেল লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির মামলা করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মামলায় আরও আসামি করা হয় ভিশন টেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আইরিন ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম, পরিচালক রাসেল মির্জা এবং শেয়ারহোল্ডার জিয়াউর রহমানকে।

সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এর কপি ২০২২ সালের ২৩ মে পাঠানো হয় বেড়া মডেল থানার ওসির কাছে।

সেই পরোয়ানা বেড়া থানায় পড়ে থাকে আড়াই বছরের বেশি সময়। এরমধ্যে মেয়র এস এম আসিফ শামস দিব্যি ঘুরে বেড়িয়েছেন। অব্যাহত রেখেছেন নিয়মিত কার্যক্রম, করেছেন ফেসবুক লাইভ, অংশ নিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারণায়।

এর মধ্যে দুই বছরের বেশি সময় ধরে সেই পরোয়ানা বেড়া থানায় পড়ে থাকলেও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে কিছু নথি দাখিলের পর তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নেন ঢাকার জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসারের আদালত।

অথচ দুই বছরে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মসূচি এবং নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়মিত অংশ নিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবার প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। বেড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের কাছে ভোটও চেয়েছেন।

সবশেষ গত ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে তাকে। নিয়মিত আসেন ফেসবুক লাইভে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্বেও এরপরও তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।

এ বিষয়ে গত বুধবার বেড়া মডেল থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এই থানায় যোগদানের পর (২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর) আমি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সম্পর্কে জানতে পারি। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তখন আমি তাকে মৌখিকভাবে বলি পাওনা টাকা পরিশোধ করতে।

তিনি আরও বলেন, তার বাবা বর্তমান সংসদ সদস্য ও সংসদে ডেপুটি স্পিকার। তিনি বর্তমান পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাকে গ্রেপ্তার করার আমার কি সাহস আছে? আমি তাকে শুধু মৌখিকভাবে কয়েকবার বলেছি।

এ মামলায় আদালতে হাজির ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে মেয়র এস এম আসিফ শামস বলেন, বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে ২০১৩ সালে ভিশন টেল লিমিটেড থেকে বের হয়ে আসি। মামলা তো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। আদালতের নোটিশ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সম্পর্কে আমাকে আগে জানানো হয় নাই। এদিন আদালতে সমস্যার সমাধান হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, ভিশন টেল লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ শামসের নামে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে দুদকে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। এতে উল্লেখ করা হয়, ভিওআইপির লাইসেন্স ফি বাবদ তিনি বিটিআরসিকে ১৫ কোটি টাকা অগ্রিম এবং প্রতিবছরে ৭ কোটি টাকা হিসাবে তিন বছরে ২১ কোটি টাকা এবং সর্বমোট ৩৬ কোটি টাকা দিয়েছেন।

২০১৪ সালে সার্বিকভাবে ভিশন টেলের কাছে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা পাওনা থেকে যায়। ৮ বছর পর ২০২২ সালে সুদ-আসলে তা হয় ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭১ টাকা।