ঢাকা ০৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo দিনাজপুরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ এর উদ্যোগে সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’র মাঝে ছাগল ও গৃহ নির্মাণ উপকরণ বিতরণ Logo একটি দল নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েমের চেষ্টা করছে : মামুনুল হক Logo নাটোরে ৭ দিনব্যাপী ট্রাফিক সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন Logo টেকনাফে ইয়াবাসহ দুই মাদককারবারী গ্রেফতার Logo মাদকের বিনিময়ে বাংলাদেশী পণ্য সামগ্রী পাচারকালে ৯ চোরাকারবারী আটক Logo ‘রাষ্ট্র অন্যায়ভাবে আদিবাসীদেরকে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ বলে” Logo টেকনাফে ইয়াবাসহ আটক ১ Logo বিদ্যুৎ বিল বকেয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা Logo শেরপুরে আন্ডারপাস ব্রীজের নিচ থেকে অবৈধ ব্যবসা উচ্ছেদ Logo কুয়াকাটায় যুবদলের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

জয়পুরহাটে সার সংকটে বিপাকে চাষিরা

এম.এ. জলিল রানা, জয়পুরহাট
  • আপডেট সময় : ২১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত জয়পুরহাটে চলতি রোপা-আমন মৌসুম শেষ। রবি চাষাবাদ মৌসুম শুরুর আগেই আবারও দেখা দিয়েছে সার সংকট বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী ডিলারের কাছে মিলছে না সার । আর ডিলারদের দাবি, তাদের কাছে বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত সার দেওয়ার কোন ধরনের সুযোগ নেই।
চাষিরা বলছেন, বিগত বছরে আলুর ফলন ভালো হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এবার সেই স্বপ্নেও গুড়েবালি। এখন চাহিদামতো সার না পাওয়ার চিন্তার ।নেকটাই দিশেহারা চাষিরা।
জেলার সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের পেঁচুলিয়া গ্রামের চাষী জাহাঙ্গীর ও মোমেজ অভিযোগ করে জানান, জমি প্রস্তুত করে স্যারের জন্য ডিলারের ঘরে গেলে তিনি কৃষি কার্ডে কৃষি কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে আসতে বলেন। পরে সুপারিশ নিয়ে এলেও মেলেনি সার ।
জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রোয়ার গ্রামের চাষী সোলায়মান আলী জানান, ‘এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু ও সরিষা চাষ করেছি। কিন্তু চাহিদামতো টিএসপি ও ডিএপি (ড্যাপ) পাচ্ছি না। দোকানে গেলে বলে সরবরাহ নেই। অথচ নিজ চোখেই দেখি গোপনে অনেকেই বেশি নিয়ে যাচ্ছেন।’
সদর উপজেলার পুরনাপৈল ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ও আরমান অনেকটাই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘সারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়। বাড়িতে আমার আলু বীজ অতিরিক্ত অঙ্কুরিত (টেক) হওয়ার ফলে লাগানোর অনুপযোগী হচ্ছে। কিছু আলু বীজে পচন ধরেছে। সার না পেলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে আমার ।’
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রওনকুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘সরকার যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়, তা দিয়েই আমাদের চলতে হয়। কৃষকের চাহিদা বেড়ে গেলেও আমাদের হাতে তো অতিরিক্ত কোন সার থাকে না। এমনকি এলাকাভিত্তিক বরাদ্দকৃত এক ওয়ার্ডের সার অন্য ওয়ার্ডের কৃষককে দিতেও পারি না। কৃষকের জমির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বরাদ্দকৃত সার বিতরণ করছি।’
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম সাদিকুল ইসলাম মন্তব্য করেন, অনেক কৃষক নির্ধারিত জমির তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ সার চাইছেন, যা বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত সার প্রয়োগে সাময়িকভাবে ফসল উৎপাদন ভালো হলেও কয়েক বছর পর ওই জমিগুলো পূর্ণমাত্রায় তার উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলবে। কিছু কৃষক না বুঝেই জমিতে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করছেন। তবে এ বিষয়ে আমরা কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি।’
স্থানীয় কৃষি গবেষক নুরুজ্জামান জানান, ‘সারের চাহিদা, সরবরাহ ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় এই সংকট তৈরি হচ্ছে। এর স্থায়ী সমাধানে ডিজিটাল বিতরণ ব্যবস্থা ও কঠোর মনিটরিং জরুরি বলে আমি মনে ।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জয়পুরহাটে সার সংকটে বিপাকে চাষিরা

আপডেট সময় :

উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত জয়পুরহাটে চলতি রোপা-আমন মৌসুম শেষ। রবি চাষাবাদ মৌসুম শুরুর আগেই আবারও দেখা দিয়েছে সার সংকট বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী ডিলারের কাছে মিলছে না সার । আর ডিলারদের দাবি, তাদের কাছে বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত সার দেওয়ার কোন ধরনের সুযোগ নেই।
চাষিরা বলছেন, বিগত বছরে আলুর ফলন ভালো হলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে এবার সেই স্বপ্নেও গুড়েবালি। এখন চাহিদামতো সার না পাওয়ার চিন্তার ।নেকটাই দিশেহারা চাষিরা।
জেলার সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের পেঁচুলিয়া গ্রামের চাষী জাহাঙ্গীর ও মোমেজ অভিযোগ করে জানান, জমি প্রস্তুত করে স্যারের জন্য ডিলারের ঘরে গেলে তিনি কৃষি কার্ডে কৃষি কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে আসতে বলেন। পরে সুপারিশ নিয়ে এলেও মেলেনি সার ।
জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রোয়ার গ্রামের চাষী সোলায়মান আলী জানান, ‘এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু ও সরিষা চাষ করেছি। কিন্তু চাহিদামতো টিএসপি ও ডিএপি (ড্যাপ) পাচ্ছি না। দোকানে গেলে বলে সরবরাহ নেই। অথচ নিজ চোখেই দেখি গোপনে অনেকেই বেশি নিয়ে যাচ্ছেন।’
সদর উপজেলার পুরনাপৈল ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ও আরমান অনেকটাই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘সারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়। বাড়িতে আমার আলু বীজ অতিরিক্ত অঙ্কুরিত (টেক) হওয়ার ফলে লাগানোর অনুপযোগী হচ্ছে। কিছু আলু বীজে পচন ধরেছে। সার না পেলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে আমার ।’
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রওনকুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘সরকার যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়, তা দিয়েই আমাদের চলতে হয়। কৃষকের চাহিদা বেড়ে গেলেও আমাদের হাতে তো অতিরিক্ত কোন সার থাকে না। এমনকি এলাকাভিত্তিক বরাদ্দকৃত এক ওয়ার্ডের সার অন্য ওয়ার্ডের কৃষককে দিতেও পারি না। কৃষকের জমির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বরাদ্দকৃত সার বিতরণ করছি।’
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এ কে এম সাদিকুল ইসলাম মন্তব্য করেন, অনেক কৃষক নির্ধারিত জমির তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ সার চাইছেন, যা বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত সার প্রয়োগে সাময়িকভাবে ফসল উৎপাদন ভালো হলেও কয়েক বছর পর ওই জমিগুলো পূর্ণমাত্রায় তার উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেলবে। কিছু কৃষক না বুঝেই জমিতে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করছেন। তবে এ বিষয়ে আমরা কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি।’
স্থানীয় কৃষি গবেষক নুরুজ্জামান জানান, ‘সারের চাহিদা, সরবরাহ ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় এই সংকট তৈরি হচ্ছে। এর স্থায়ী সমাধানে ডিজিটাল বিতরণ ব্যবস্থা ও কঠোর মনিটরিং জরুরি বলে আমি মনে ।’