ঢাকা ০৪:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর Logo ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা Logo ডাকসু হল সংসদে মাগুরার জয়জয়কার: ছয় কৃতি মুখে গর্বিত জনপদ Logo ইসলামপুরে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo জামালপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে স্মরণসভা Logo ঘাটাইলে স্বাধীন বাংলা মিনি ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo গৌরীপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও দলকে নির্বাচন মুখী করতে বিএনপির আলোচনা সভা Logo গোলাপগঞ্জে শিশু ধর্ষনের মিথ্যা মামলার অভিযোগে মানববন্ধন Logo ভেদরগঞ্জে জমি বিক্রির বায়না নিয়ে প্রতারণায় পাল্টা পাল্টি অভিযোগ Logo খুনিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
  • আপডেট সময় : ৫০২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সেই সংঘর্ষে আহত সাধারণ শিক্ষার্থী সঠিক চিকিৎসা, সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার গভীর রাতে ছাত্রলীগ বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদের পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর আহত সোহানকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল এবং রকিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীলের ৩০-৪০ জন অনুসারী মুখে গামছা বেঁধে জননেতা আব্দুল মান্নান হলে প্রবেশ করে। তারা তৃতীয় তলায় গিয়ে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী ও কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এসময় বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি শিক্ষার্থী সোহানুর রহমানকে বেধরক পেটায়। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে জয় ধর নামক অপর এক শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা সোহানুর রহমানকে তিন তলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। এতে সোহানের কোমর ও হাত-পা ভেঙে যায়। তাকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জননেতা আব্দুল মান্নান হলে হামলার খবর পেয়ে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীরের অনুসারীরা শেখ রাসেল হল থেকে মান্নান হলে ছুটে আসে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী জয় ধর, সজিব শেখ, সৌরভ (১) ও সৌরভ (২) কে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সভাপতির অনুসারী রকি নামক এক শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাত ১টার দিকে পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা কয়েকটি কক্ষ তল্লাশি করে। টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত সাদিকুর রহমান জানান, সভাপতি মানিক শীল ও তার অনুসারীদের রুম থেকে কিছু লোহার পাইপ ও দুটি চাপাতি উ্দ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এব্যাপারে কোন মামলা হয় নি।
বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এতে বক্তব্য রাখেন গণিত বিভাগের ছাত্র প্রভাষ দাস ও তাবরিজ সিদ্দিকী, রসায়ন বিভাগের মো. নাছিম, বিবিএ’র ছাত্র সাকিব প্রমুখ। বক্তারা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল বলেন, কি নিয়ে কি হলো তা বুঝতে পারছি না। আমি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনার খবর পেয়ে তা থামানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পরিনি।
সাধারণ হুমায়ূন কবীর বলেন, এই হামলার ঘটনার পর থেকে বিশ^বিদ্যালয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান তিনি।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর মীর মো. মোজাম্মেল হক জানান, এই ঘটনার বিষয়ে ঢাকায় বিশ^বিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভা হয়েছে। সেখানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

টাঙ্গাইলের ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন 

আপডেট সময় :

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সেই সংঘর্ষে আহত সাধারণ শিক্ষার্থী সঠিক চিকিৎসা, সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার গভীর রাতে ছাত্রলীগ বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদের পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর আহত সোহানকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল এবং রকিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীলের ৩০-৪০ জন অনুসারী মুখে গামছা বেঁধে জননেতা আব্দুল মান্নান হলে প্রবেশ করে। তারা তৃতীয় তলায় গিয়ে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী ও কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এসময় বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি শিক্ষার্থী সোহানুর রহমানকে বেধরক পেটায়। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে জয় ধর নামক অপর এক শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা সোহানুর রহমানকে তিন তলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। এতে সোহানের কোমর ও হাত-পা ভেঙে যায়। তাকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জননেতা আব্দুল মান্নান হলে হামলার খবর পেয়ে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীরের অনুসারীরা শেখ রাসেল হল থেকে মান্নান হলে ছুটে আসে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী জয় ধর, সজিব শেখ, সৌরভ (১) ও সৌরভ (২) কে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সভাপতির অনুসারী রকি নামক এক শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাত ১টার দিকে পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা কয়েকটি কক্ষ তল্লাশি করে। টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক তদন্ত সাদিকুর রহমান জানান, সভাপতি মানিক শীল ও তার অনুসারীদের রুম থেকে কিছু লোহার পাইপ ও দুটি চাপাতি উ্দ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এব্যাপারে কোন মামলা হয় নি।
বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এতে বক্তব্য রাখেন গণিত বিভাগের ছাত্র প্রভাষ দাস ও তাবরিজ সিদ্দিকী, রসায়ন বিভাগের মো. নাছিম, বিবিএ’র ছাত্র সাকিব প্রমুখ। বক্তারা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল বলেন, কি নিয়ে কি হলো তা বুঝতে পারছি না। আমি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনার খবর পেয়ে তা থামানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পরিনি।
সাধারণ হুমায়ূন কবীর বলেন, এই হামলার ঘটনার পর থেকে বিশ^বিদ্যালয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান তিনি।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর মীর মো. মোজাম্মেল হক জানান, এই ঘটনার বিষয়ে ঢাকায় বিশ^বিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভা হয়েছে। সেখানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।