সংবাদ শিরোনাম ::
ঠিকাদারের টাকা নেই তাই রাস্তার কাজ বন্ধ! মাটি খাটায় জনদুর্ভোগ

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
- আপডেট সময় : ০২:৪৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে
দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় এক বছর আগে রাস্তার মাটি কুড়ে রাখা হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী তিন মাস আগে এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেহাল এ রাস্তায় চলছেনা কোন যানবাহন। জমে থাকা পানি আর কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে লোকজনকে। পরিবহনের অভাবে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পারায় কৃষকরা বিপাকে। এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মন্তব্য টাকা নেই বলে কাজ করাতে পারছেনা তিনি। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা থেকে মৈশহাটির রাস্তার চিত্র এটি।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, এলজিডি’র (এমআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় উল্লেখিত এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা পাকাকরনে ২কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬২৬শ টাকায় কাজটি পান নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শুরু করার তারিখ ০৫/০২/২০২৪ইং এবং শেষ করার তারিখ ০২/০১/২০২৫ইং।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রায় এক বছর পূর্বে রাস্তার মাটি কুড়ে বক্স কাটিং করে অর্ধেক রাস্তায় কাদামিশ্রিত বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর এই রাস্তার আর কোন কাজ হয়নি। ঠিকাদার বা তাদের লোকজনের কোন খোঁজখবর নেই। এখন বৃষ্টির জমে থাকা পানি ও কাদায় রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেনা কোন যানবাহন। কৃষকদের উৎপাদিত ধান ও অন্যান্য ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছেনা। গৌরীপুর উপজেলার সঙ্গে নেত্রকোনার সদর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের সংযোগ রাস্তা এটি। প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। রাস্তাটির বেহাল অবস্থায় বর্তমানে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনের।
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. রতন জানান, এক বছর আগে কুড়ে রাখা প্রায় ২ কি: মি: রাস্তায় অর্ধেক স্থানে মাটিযুক্ত বালু ফেলা ছাড়া আর কোন কাজ হয়নি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। ধান সহ উৎপাদিত ফসল নিয়ে তারা আছেন বিপাকে। রাস্তার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় মো. কুরশেদ আলী জানান, ধান কেটে ক্ষেতের পাশেই রেখে দেওয়ার ফলে নষ্ট হচ্ছে। কোন বেপারীও আসেনা ধান কেনার জন্যে। রাস্তার বেহাল দশা দেখেই ফিরে যান তারা। তিনি আরও জানান, বৃষ্টি এলেই মাটি খাটা এ রাস্তায় হাটু সমান পানি জমে। জরুরী প্রয়োজনে একজন রোগি নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমরা এলাকাবাসী খুব বিপদেই আছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট রাস্তার ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান তিনটি ভিন্ন মন্তব্য করেন, “আমার কাছ থেকে যে ঠিকাদার কাজটি নিয়েছিলেন, ৫আগস্টের পর তার নামে বেশকয়েকটি মামলা হওয়ায় তিনি এখন বাড়ী ছাড়া এ জন্যে সমস্যা হয়েছে। দ্বিতীয় মন্তব্যে তিনি বলেন- মালামাল সংকটের কারনে কাজটি করা যাচ্ছেনা। সর্বশেষ মন্তব্যে তিনি বলেন, ঠিকাদারের টাকা নেই তাই কাজ করাতে পারছিনা। এব্যাপারে জানতে চাইলে গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও কাজটি সম্পন্ন করেনি তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে কর্তৃপক্ষে জানানো হয়েছে।