ঢাকায় তীব্র যানজট
- আপডেট সময় : ০২:৫২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৮৩ বার পড়া হয়েছে
পাঁচদিন পর স্বাবাভিক অবস্থায় ঢাকা। আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত অফিস-আদালত খোলা। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করার ঘোষণায় সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় মানুষের চলাচল বেড়ে যায়। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কারফিউ জারি করা হয়। এর পর রোবাবার থেকে মঙ্গলবার তিনদিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার খুলেছে সরকারি ও বেসরকারি অফিস। আর সকাল থেকেই ঢাকাজুড়ে দেখা দেয় প্রচন্ড যানজপ। ফার্মগেট, মিরপুর, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, কল্যাণপুর, বনানী, তেজগাঁও, মহাখালী, যাত্রবাড়ি, খিলগাসহ ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট চলছে।
গণপরিবহন না পাওয়ায় এবং যানজটের কারণে অফিসগামী যাত্রীরা বিপদে পড়েছেন। কিন্তু যানবাহন পেতে দেরি হওয়ায় এবং যানজটে পড়ে অনেকে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না। কখন পৌঁছাতে পারবেন, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নষ্ট হয় কর্মঘন্টা।
কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের বেশির ভাগই কর্মজীবী। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে । কিন্তু বাসের সংখ্যা কম ছিল। সিএনজিচালিত অটোরিকশা যা আসছে, ফাঁকা নেই। শুধু কল্যাণপুর নয়, আশপাশে শ্যামলী, শিশু মেলার দিকেও একই অবস্থা। অনেকক্ষণ দাঁড়ানোর পর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিসি) একটি বাস মেলে।
বাসটি কল্যাণপুর থেকে জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট পর্যন্ত আসতে এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। বাসে থাকা যাত্রীদের অনেকের কাছে কর্মস্থল থেকে ফোন আসছে।
সায়েদাবাদে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তায় বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে রিকশা, অটোরিকশা, বাস সবকিছু যানজটে আটকে যায়। যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত পুরোটাই যানজট।
মিরপুর ১২ নম্বর থেকে সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে প্রাইভেট কারে কারওয়ান বাজারের উদ্দেশে রওনা হন এক যাত্রী। বেলা সাড়ে ১১টার সময় তিনি কাজীপাড়ায় আটকে ছিলেন। স্বাভাবিক সময়ে এটুকু আসতে আধঘণ্টা সময় লাগে বলে জানান ওই যাত্রী।
কারওয়ান বাজার থেকে প্রাইভেট কারে বনানী যেতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে বলে জানান আরেক যাত্রী। ফার্মগেটে যানজট দেখে গাড়ি তেজগাঁওয়ের ভেতর দিয়ে ঘুরে যেতেও অলিগলিতে যানজটে পড়েন তারা। মহাখালীতেও যানজট দেখা গেছে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে সকাল ১০টার দিকে কাওরান বাজারের উদ্দেশে রওনা দেন এক নারী। বেলা ১১টা ৩৭ মিনিটে কারওয়ান বাজারে এসে পৌঁছেছেন তিনি। বিমানবন্দর সড়ক, মহাখালী, তেজগাঁও, সাত রাস্তার মোড়ে প্রচুর যানজট দেখেছেন বলে জানান তিনি। তেজগাঁও ছাড়া আর কোথাও ট্রাফিক পুলিশ দেখেননি বলে জানান এই যাত্রী। বনানীতে দুজন পথচারীকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখেছেন তিনি ।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেও সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রচণ্ড যানজট দেখা গেছে। আশপাশের অলিগলিতেও যানজট ছিল। গণপরিবহন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন কর্মস্থলগামী মানুষ। মোস্তফা কামাল নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি মোহাম্মদপুরের টাউন হল এলাকা থেকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে একটি রিকশা নিয়ে কারওয়ান বাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। আসাদ গেটে এসে তিনি রিকশা ছেড়ে কিছুটা হেঁটে আরেকটি রিকশায় ওঠেন। তবে বেলা পৌনে ১২টা নাগাদও তিনি কারওয়ান বাজারে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারেননি।
কর্মস্থল কারওয়ান বাজারে যাওয়ার জন্য রাজধানীর আসাদ গেট থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় বের হন সৈকত। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। রাস্তায় বের হয়ে দেখেন, যানজটে সব স্থবির হয়ে আছে। অগত্যা হাঁটতে শুরু করেন। পৌনে এক ঘণ্টা হেঁটে পৌঁছান অফিসে। সৈকত বলেন, হেঁটে অফিসে আসার অভিজ্ঞতা এই প্রথম। আগে যানজট থাকলেও কিছু না কিছু একটা ব্যবস্থা হতো। কিন্তু আজ একেবারে ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
বিআরটিসির একটি বাসে উত্তরার আজমপুর থেকে আড়াই ঘণ্টা পর ফার্মগেটে নেমেছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি ফার্মগেট এলাকার ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংগঠনের কর্মচারী। রফিকুল বলেন, সারা রাস্তায় গাড়ি আসছে থাইম্যা থাইম্যা।