দুই বছর পর প্রেমিকের মরদেহ উদ্ধার, প্রেমিকাসহ গ্রেপ্তার ৫
- আপডেট সময় : ০৬:৪৯:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪ ২৪৪ বার পড়া হয়েছে
মাফিজুল ইসলাম ও তানজিলা খাতুন বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে কাজ করতো। কাজের সুবাদে দু’জনের পে মের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বামী আল হাবিব সরকার ও স্ত্রী তানজিলা খাতুনের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সময়টা ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল। মাফিজুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের নিখোঁজ হন মঠিজুল। পরে গুরুদাসপুর থানায় জিডি মা মাহিনুর বেগম।
প্রেমিক মাফিজুলকে হত্যার পর টানাপোড়েন দেখা দেয় তানজিলা-আল হাবিবের সংসারে। এপর্যায়ে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এ নিয়ে আল হাবিবের বিরুদ্ধে নির্যাতন, যৌতুক দাবিসহ অন্তত চারটি মামলা করে তানজিলা। মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যায় হাবিব। সেখানে মাফিজুলের এক প্রতিবেশী জাকির মুন্সির সঙ্গে হাবিবের পরিচয় হয়। কারাগারে বসে ক্ষোভ-কষ্টের কথা বলতে গিয়ে হাবিব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বর্ণনা করে। সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাকির মুন্সি গ্রামে ফিরে মাফিজুলের পরিবারকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জানায়। তাতে মাফিজুল হত্যার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
এ ঘটনায় দুই বছর পর মা মাহিনুর বেগম গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় তানজিলার স্বামী আল হাবিব, বাবা আবু তাহের খলিফা ও আশরাফুল ইসলামের নাম উল্লেখসহ তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলা দায়েরর পর পুলিশ শুক্রবার রাতেই তাহের খলিফা, তানজিলা এবং আশরাফুলকে আটক করে র্যাব। আসামিরা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি।
মাফিজুলের হাড় কঙ্কাল উদ্ধার
সোমবার (৪ মার্চ) নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই চাল্যকর হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন, নাটোর পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম পিপিএম। তিনি জানান, দুই বছর আগে মাফিজুলকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার একটি মাদ্রাসার নির্মাণাধীণ টয়লেটের নীচে বস্তাবন্দী অবস্থায় পুঁতে রাখে।
রোববার (৩ মার্চ) সকাল থেকে গুরুদাসপুরে চাঁচকৈড় পুরানপাড়া এলাকার বালিকা দাখিল মাদ্রাসার টয়লেটের মাটি খুঁড়ে মাফিজুলের হাড়, মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
আসামিদের মধ্যে রয়েছে, সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার মো. আল হাবিব সরকার, গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় তালুকদার পাড়ার মো. আবু তাহের খলিফা, একই উপজেলার খামারনাছকৈড় এলাকার মো. আশরাফুল ইসলাম (৪২) এবং সিরাজগঞ্জ তাড়াশ উপজেলার কাচারীপাড়া এলাকার মোছা. তানজিলা খাতুন (২৮)।
তিনি আরও জানান, রোববার ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ডাক্তার ও সাক্ষীসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে মাদরাসার টয়লেটের ভিতরে মাটির নীচ থেকে মাফিজুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় হত্যার কাজে ব্যবহ্নত লোহার শাবল, কোদাল, মাফিদুলের ব্যবহৃত মোবাইল সেট উদ্ধার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এটি, টি,এম মাইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), মাহমুদা শারমীন নেলী, সহকারী পুলিশ সুপার আকতারুজ্জামন এসময় উপস্থিত ছিলেন।