ঢাকা ০১:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

নওগাঁয় অসুস্থ ছাগল রাতে জবাই, দিনে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে ঢাকার হোটেলে

নওগাঁ সদর প্রতিনিধি 
  • আপডেট সময় : ৩২৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

নওগাঁ শহরের মাংস বাজারসহ উপজেলার বেশকিছু বাজারে অসুস্থ গরু ও ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ সুযোগে কতিপয় অসাধু কসাই বেশি মুনাফার লোভে অসুস্থ গরু-ছাগল কম দামে কিনে এর মাংস বিক্রি করছেন বিভিন্ন হোটেলে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন নওগাঁ পৌরবাজারে দশ-বারোটি গরু ছয় সাতটি ছাগল ও কালিতলা বাজারে আরো দশ-বারোটি ছাগল জবাই করা হয়। জবাই করা এসব গরু-ছাগল অধিকাংশই অসুস্থ। ২১ এপ্রিল পৌর বাজারে অসুস্থ একটি ছাগল জবাই করে মাংস ঢাকার হোটেলে বিক্রির অভিযোগে সাধারণ মানুষ উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত কসাই হাট নওগাঁ মহল্লার মোহাম্মদ আলীর ছেলে সেলিম ও পার নওগাঁ মহল্লার হোসেনের ছেলে জিল্লুর রহমানের শাস্তির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠে।
খবর শুনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম অভিযুক্ত কসাইদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর বাজারের এক মাংস ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ওই অসুস্থ ছাগলটি ছিল পৌরসভার জোকাবিলা গ্রামের হারুনের ছেলে গৃহস্থ শিশিরের। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়লে মধ্যরাতে শিশিরের বাড়িতেই জবাই করে কসাইদের খবর দেন ওই গৃহস্থ। অন্তত ১৬ কেজি ওজনের ওই ছাগলটি মাত্র ৮ হাজার টাকায় কেনেন ওই কসাইরা। পরদিন ওই অসুস্থ ছাগলের মাংস ৮০০ টাকা কেজি দামে ঢাকার কোন এক হোটেলে বিক্রি করা হবে। মূলত বেশি লাভের আশায় কসাইরা অসুস্থ গরু-ছাগল কিনে এর মাংস বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন বলে দাবি তার।
অভিযুক্ত কসাই সেলিম ও জিল্লুর রহমান বলেন, রাতে (২১ এপ্রিল) হঠাৎ ছাগলের পেট ফেপে গেলে তা জবাই করে শিশির নামে একজন আমাদের খবর দেয়। পড়ে ৮০০০ টাকা দরে ক্রয় করি এবং মাংস গুলো ৮০০ টাকা কেজি দরে ঢাকার হোটেলে বিক্রি করা হবে।
এ ব্যাপারে গৃহস্থ শিশির বলেন, ছাগলটি তো মরে যায়নি। ছাগলটি স্ট্রোক করেছে তাই জবাই করে কসাই এর কাছে বিক্রি করেছি। নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, পৌর শহরে গরু – ছাগল জবাইয়ের নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। শহরে যে কসাই খানা আছে সেটি স্বাস্থ্য সম্মত নয়। কসাইরা যেখানে খুশি সেখানেই গরু – ছাগল জবাই করেন। এভাবে গরু – ছাগল জবাই করায় গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না।তবুও যদি কেউ মনে করে পশুর স্বাস্থ্য করবে তাহলে প্রাণিসম্পদ অফিসে এসে পরিক্ষা করতে পারে। নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন,এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি, যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে বা প্রাণিসম্পদ অফিসার আইনগত সহায়তা চায় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নওগাঁয় অসুস্থ ছাগল রাতে জবাই, দিনে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে ঢাকার হোটেলে

আপডেট সময় :

 

নওগাঁ শহরের মাংস বাজারসহ উপজেলার বেশকিছু বাজারে অসুস্থ গরু ও ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ সুযোগে কতিপয় অসাধু কসাই বেশি মুনাফার লোভে অসুস্থ গরু-ছাগল কম দামে কিনে এর মাংস বিক্রি করছেন বিভিন্ন হোটেলে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন নওগাঁ পৌরবাজারে দশ-বারোটি গরু ছয় সাতটি ছাগল ও কালিতলা বাজারে আরো দশ-বারোটি ছাগল জবাই করা হয়। জবাই করা এসব গরু-ছাগল অধিকাংশই অসুস্থ। ২১ এপ্রিল পৌর বাজারে অসুস্থ একটি ছাগল জবাই করে মাংস ঢাকার হোটেলে বিক্রির অভিযোগে সাধারণ মানুষ উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত কসাই হাট নওগাঁ মহল্লার মোহাম্মদ আলীর ছেলে সেলিম ও পার নওগাঁ মহল্লার হোসেনের ছেলে জিল্লুর রহমানের শাস্তির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠে।
খবর শুনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম অভিযুক্ত কসাইদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর বাজারের এক মাংস ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ওই অসুস্থ ছাগলটি ছিল পৌরসভার জোকাবিলা গ্রামের হারুনের ছেলে গৃহস্থ শিশিরের। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়লে মধ্যরাতে শিশিরের বাড়িতেই জবাই করে কসাইদের খবর দেন ওই গৃহস্থ। অন্তত ১৬ কেজি ওজনের ওই ছাগলটি মাত্র ৮ হাজার টাকায় কেনেন ওই কসাইরা। পরদিন ওই অসুস্থ ছাগলের মাংস ৮০০ টাকা কেজি দামে ঢাকার কোন এক হোটেলে বিক্রি করা হবে। মূলত বেশি লাভের আশায় কসাইরা অসুস্থ গরু-ছাগল কিনে এর মাংস বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন বলে দাবি তার।
অভিযুক্ত কসাই সেলিম ও জিল্লুর রহমান বলেন, রাতে (২১ এপ্রিল) হঠাৎ ছাগলের পেট ফেপে গেলে তা জবাই করে শিশির নামে একজন আমাদের খবর দেয়। পড়ে ৮০০০ টাকা দরে ক্রয় করি এবং মাংস গুলো ৮০০ টাকা কেজি দরে ঢাকার হোটেলে বিক্রি করা হবে।
এ ব্যাপারে গৃহস্থ শিশির বলেন, ছাগলটি তো মরে যায়নি। ছাগলটি স্ট্রোক করেছে তাই জবাই করে কসাই এর কাছে বিক্রি করেছি। নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, পৌর শহরে গরু – ছাগল জবাইয়ের নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। শহরে যে কসাই খানা আছে সেটি স্বাস্থ্য সম্মত নয়। কসাইরা যেখানে খুশি সেখানেই গরু – ছাগল জবাই করেন। এভাবে গরু – ছাগল জবাই করায় গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না।তবুও যদি কেউ মনে করে পশুর স্বাস্থ্য করবে তাহলে প্রাণিসম্পদ অফিসে এসে পরিক্ষা করতে পারে। নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন,এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি, যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে বা প্রাণিসম্পদ অফিসার আইনগত সহায়তা চায় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।