ঢাকা ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

নরসিংদীতে প্রধান সড়কের পাশে ময়লার ভাগার, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারী ও এলাকাবাসী

নরসিংদী প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৪২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০/১/১৯৭২ সালে তৃতীয় শ্রেণীর পৌর সভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে নরসিংদী পৌর সভা। ১/৭/১৯৭৮ সালে সময়ের পরিক্রমায় এটি দ্বিতীয় শ্রেণি পেরিয়ে ২৬/৮/১৯৯৬ সালে প্রথম শ্রেণীর পৌর সভায় উন্নীত হয়। অথচ সুযোগ সুবিধার দিক থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এ পৌর এলাকা। ১০.৩২ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এ পৌর সভায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৭শত ১১ জন মানুষ বসবাস করেন। এখানে প্রতিদিন গড়ে ২১০ মেট্রিকটন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও সেগুলো অপসারণের জন্য নেই কোন আধুনিক ব্যবস্থা কিংবা বড় ধরনের ডাম্পিং স্টেশন। ডাম্পিং স্টেশনটি ভরাট হয়ে যাওয়া বর্তমানে নরসিংদী শহরের পাশে নতুন বাসটার্মিনাল এর সামনে দিয়ে নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের উভয়পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এতে করে সড়কের উভয় পাশে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগার। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা-আর্বজনার স্তুপ। আর এ ময়লার স্তুপের পাগল করা দুর্গন্ত অনেক দূর পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা সাধারণ পথচারী, শিক্ষার্থী এবং যানবাহনের যাত্রীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। নাকে রুমাল, মাক্স দিয়ে মুখ ঢেকে ও দুর্গন্ধ ঠেকানো যাচ্ছেনা। ফলে এ ময়লার আবর্জনার মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী এবং যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া এ সড়কের পাশে গড়ে উঠা অনেক শিল্প কারখানা ও বসতবাড়ীর লোকেরা ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের এখানে বসবাস করা বা শিল্পকারখানা পরিচালনা করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
দেশের খ্যাত সুনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান আমানত শাহ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব মো: হেলাল মিয়া জানান, এ সড়কের পাশে আমানত শাহ গ্রুপের প্রায় ১শত বিঘা জমি রয়েছে। এ জমিতে শিল্পকারখানা গড়ে তুলার জন্য সেটও নির্মান করা হয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয় নরসিংদী পৌর সভার সমস্ত ময়লা আবর্জনা এখানে এনে ফেলা হচ্ছে। প্রায় অর্ধ কিলোমিটার জমিতে ময়লা ফেলে বিরাট স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ফলে এখানকার পরিবেশ মারাত্বকভাবে দুষিত হচ্ছে। এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তুলাতো দুরের কথা, দুর্গন্ধে কাছেই যাওয়া যায় না। ময়লা আবর্জনার কারনে এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছেনা। এতে করে আমানত শাহ গ্রুপের মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। আলহাজ্ব মো: হেলাল মিয়া গণমাধ্যমকে আরো বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি বেশ কয়েকবার নরসিংদী পৌর প্রশাসকের সাথে আলাপ করেছেন। প্রতিবারই পৌর প্রশাসক এখান থেকে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দিচ্ছেন। অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। সড়কের পাশের বাড়ির মালিক মো: ইমাম হোসেন জানান, ময়লা আবর্জনার গন্ধে এখানকার পরিবেশ মারাত্বকভাবে দূষিত হচ্ছে। আমাদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে এখানে বসবাস করা দুস্কর হয়ে পড়েছে। দিনরাত ২৪ ঘন্টা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমাতে হয় এবং খাবার খেতে হয়। ঘর থেকে বের হতে হলে মুখে এবং নাকে রুমাল দিয়ে ঢেকে বের হতে হয়। এমনিভাবে আর কতদিন চলা যায়। তাই অতিদ্রুত এখান থেকে ময়লা আবর্জনা দুরে কোথাও নিয়ে ফেলার জন্য তিনি নরসিংদী পৌর প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও নরসিংদী পৌর সভার প্রশাসক মনোয়ার হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের ৫নং ব্রীজের পাশে নরসিংদী পৌর সভার ৩ একর জমিতে একটি ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে। কিন্তু যে পরিমান ময়লা আবর্জনা জমছে সে পরিমানে ডাম্পিং স্টেশনটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং ডাম্পিং স্টেশনটি বর্তমানে ভরাট হয়ে গেছে। বর্তমানে এ সড়কের উভয় পাশে সরকারি জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থা থাকবেনা, অচিরেই এর একটা সুরাহা করা হচ্ছে। এখানে বর্জ্য নিস্কাশনের জন্য ২১ কোটি ব্যয়ে একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। শুধু ওয়ার্কঅর্ডার বাকি রয়েছে। এটি হয়ে গেলেই আর কোন সমস্যা থাকবেনা বলে আমি মনে করছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নরসিংদীতে প্রধান সড়কের পাশে ময়লার ভাগার, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারী ও এলাকাবাসী

আপডেট সময় :

২০/১/১৯৭২ সালে তৃতীয় শ্রেণীর পৌর সভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে নরসিংদী পৌর সভা। ১/৭/১৯৭৮ সালে সময়ের পরিক্রমায় এটি দ্বিতীয় শ্রেণি পেরিয়ে ২৬/৮/১৯৯৬ সালে প্রথম শ্রেণীর পৌর সভায় উন্নীত হয়। অথচ সুযোগ সুবিধার দিক থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এ পৌর এলাকা। ১০.৩২ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এ পৌর সভায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৭শত ১১ জন মানুষ বসবাস করেন। এখানে প্রতিদিন গড়ে ২১০ মেট্রিকটন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও সেগুলো অপসারণের জন্য নেই কোন আধুনিক ব্যবস্থা কিংবা বড় ধরনের ডাম্পিং স্টেশন। ডাম্পিং স্টেশনটি ভরাট হয়ে যাওয়া বর্তমানে নরসিংদী শহরের পাশে নতুন বাসটার্মিনাল এর সামনে দিয়ে নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের উভয়পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এতে করে সড়কের উভয় পাশে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগার। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা-আর্বজনার স্তুপ। আর এ ময়লার স্তুপের পাগল করা দুর্গন্ত অনেক দূর পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা সাধারণ পথচারী, শিক্ষার্থী এবং যানবাহনের যাত্রীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়। নাকে রুমাল, মাক্স দিয়ে মুখ ঢেকে ও দুর্গন্ধ ঠেকানো যাচ্ছেনা। ফলে এ ময়লার আবর্জনার মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী এবং যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া এ সড়কের পাশে গড়ে উঠা অনেক শিল্প কারখানা ও বসতবাড়ীর লোকেরা ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের এখানে বসবাস করা বা শিল্পকারখানা পরিচালনা করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
দেশের খ্যাত সুনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান আমানত শাহ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব মো: হেলাল মিয়া জানান, এ সড়কের পাশে আমানত শাহ গ্রুপের প্রায় ১শত বিঘা জমি রয়েছে। এ জমিতে শিল্পকারখানা গড়ে তুলার জন্য সেটও নির্মান করা হয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয় নরসিংদী পৌর সভার সমস্ত ময়লা আবর্জনা এখানে এনে ফেলা হচ্ছে। প্রায় অর্ধ কিলোমিটার জমিতে ময়লা ফেলে বিরাট স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ফলে এখানকার পরিবেশ মারাত্বকভাবে দুষিত হচ্ছে। এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তুলাতো দুরের কথা, দুর্গন্ধে কাছেই যাওয়া যায় না। ময়লা আবর্জনার কারনে এখানে শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছেনা। এতে করে আমানত শাহ গ্রুপের মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। আলহাজ্ব মো: হেলাল মিয়া গণমাধ্যমকে আরো বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি বেশ কয়েকবার নরসিংদী পৌর প্রশাসকের সাথে আলাপ করেছেন। প্রতিবারই পৌর প্রশাসক এখান থেকে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দিচ্ছেন। অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। সড়কের পাশের বাড়ির মালিক মো: ইমাম হোসেন জানান, ময়লা আবর্জনার গন্ধে এখানকার পরিবেশ মারাত্বকভাবে দূষিত হচ্ছে। আমাদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে এখানে বসবাস করা দুস্কর হয়ে পড়েছে। দিনরাত ২৪ ঘন্টা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমাতে হয় এবং খাবার খেতে হয়। ঘর থেকে বের হতে হলে মুখে এবং নাকে রুমাল দিয়ে ঢেকে বের হতে হয়। এমনিভাবে আর কতদিন চলা যায়। তাই অতিদ্রুত এখান থেকে ময়লা আবর্জনা দুরে কোথাও নিয়ে ফেলার জন্য তিনি নরসিংদী পৌর প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও নরসিংদী পৌর সভার প্রশাসক মনোয়ার হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, নরসিংদী মদনগঞ্জ সড়কের ৫নং ব্রীজের পাশে নরসিংদী পৌর সভার ৩ একর জমিতে একটি ডাম্পিং স্টেশন রয়েছে। কিন্তু যে পরিমান ময়লা আবর্জনা জমছে সে পরিমানে ডাম্পিং স্টেশনটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল এবং ডাম্পিং স্টেশনটি বর্তমানে ভরাট হয়ে গেছে। বর্তমানে এ সড়কের উভয় পাশে সরকারি জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থা থাকবেনা, অচিরেই এর একটা সুরাহা করা হচ্ছে। এখানে বর্জ্য নিস্কাশনের জন্য ২১ কোটি ব্যয়ে একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। শুধু ওয়ার্কঅর্ডার বাকি রয়েছে। এটি হয়ে গেলেই আর কোন সমস্যা থাকবেনা বলে আমি মনে করছি।