ঢাকা ১২:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ, বিপাকে সাধারণ যাত্রী Logo ডামুড্যায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত Logo গোবিন্দগঞ্জে অপহরনকৃত মেয়েকে উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo কেশবপুরে কুটির শিল্পের নতুন দিগন্ত খায়রুল আনাম Logo সোনাগাজীতে একের পর এক চুরি-ডাকাতি, অভিযোগে করেও মামলা হয় না Logo বিশ্বনাথে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান Logo নোয়াখালী জজ কোর্টের দোতলা থেকে লাফ দিয়ে আসামির পালানোর চেষ্টা Logo ‘বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণার্থীদের হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সাথে মতবিনিময়’ Logo লাশ পোড়ানো অগ্নিসংযোগ ও জখম মামলায় আব্দুল লতিফ মোল্লাসহ ১৮জন গ্রেপ্তার Logo ঝিনাইগাতীর ৯ গ্রামের ভাগ্যচিত্র বদলে দিতে পারে এক ব্রীজে

নালিতাবাড়ীতে উচ্ছেদ আতঙ্কে দুই ভূমিহীন পরিবার

মো:আজিনুর রহমান, নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১৮৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পুনর্বাসন ছাড়াই  দুই ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি ভাঙ্গার নোটিশ দিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।ফলে    উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছে অসহায় সম্বলহীন ২  পরিবার।ঘটনাটি ঘটে নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের আন্ধারুপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে,ওই গ্রামের মরহুম আকবর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা বেগম আন্ধারুপাড়া মৌজায় ২০৩২ দাগে ৪০ শতাংশ জমি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ ৪ যুগ ধরে ঘরবাড়ি নির্মান করে বসবাস করে আসছেন।রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৬৬ সালে আরওআর রেকর্ডের মালিক কেন্তু রাম শিং এর কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেন।১৯৮৮ সালে পিতার কাছ থেকে ক্রয়সুত্রে রফিকুল ইসলাম ও বোন সাজেদা বেগম মালিকানা লাভ করেন।

এ বাড়িতেই পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা বেগম।উক্ত জমির খাজনা-খারিজও পরিশোধ রয়েছে হাল নাগাদ পর্যন্ত।এ অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই দুই পরিবারের।২০১৫ সালে ওই বাড়ীর সামন  দিয়ে হাইওয়ে সড়ক নির্মাণ করে সড়কও জনপদ বিভাগ।এসময় পাঁচ শতাংশ জমি অধিকগ্রহণ করেন সরকার।অধিকগ্রহণকৃত জমির তৎকালীন বাজারমূল্য হিসেবে ৪৫ হাজার টাকাও পান পরিবার দুটি।

অবশিষ্ট জমির উপর নির্মিত বসতবাড়ী ছাড়া সহায় সম্বল বলতে আর কিছুই নেই পরিবার দু’টির। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা খাতুন জানান,২০২১ সালে উক্ত জমির উপর দিয়ে এক্সেল লোড নির্মাণ প্রকল্পের কাজ হাতে নেয় সরকার।এক্সেল লোড নির্মাণের জন্য এখানে ২৪ পরিবারের কাছ থেকে ৬ একর  জমি ও অধিকগ্রহণ করা হয়।কিন্তু আজও জমির মালিকদের জমির ন্যায্য মূল্য পাননি অনেকেই।জানা গেছে অধিকগ্রহণকৃত জমির মালিকদের কাগজপত্রে জটিলতার কারনে  অধিকগ্রহণের টাকা থেকেও বঞ্চিত হন তারা।
এ অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

অনেকেই জমির মূল্য না পেলেও তাদের আবাদি জমি দখলে নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এক্সেল রোড নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন কিন্তু রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা বেগমের ওই জমির বাড়ীঘর থাকায় জমি ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়নি।

তাদের ঘরবাড়ী ও গাছপালার ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া হলেও জমির মূল্য দেয়া হয়নি। তাদেরকে যে টাকা দেয়া হয়েছে তা দিয়ে জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ী নির্মান করাও সম্ভব না বলে জানান।প্রশাসনের পক্ষ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দেয়া হলেও আজও পরিবার দুইটির ভাগ্যে জোটেনি সরকারি জমি।জমির ন্যয্য মূল্য পাওয়ার দাবিতে রফিকুল ইসলাম ও সাজেদা বেগমসহ ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা শেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়েরর অধিগ্রহন এলএ শাখায় একটি মিস কেস করেন।বর্তমানে তা চলমান রয়েছে।

কিন্তু মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি না হতেই এবং পরিবার দুইটি পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না করে, ১২ মার্চ তাদেরকে বাড়ি ভেঙে ছেড়ে যাওয়ার নোটিশ প্রদান করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। নোটিশে বলা হয়েছে রফিকুল ইসলাম তাদের ঘরবাড়ী,গাছ পালাসহ সকল স্থাপনা সড়িয়ে নেওয়া না হলে তা গুড়িয়ে দেওয়া হবে।এ নোটিশ পাওয়ার পর থেকে পরিবার দুইটি উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছেন।এ অবস্থায় পরিবার দুইটি কোথায় যাবেন কি করবেন এ নিয়ে দিশেহারা পরিবার দুইটি।রফিকুল ইসলাম বলেন ২০১৫ সালে একই জমির অংশ থেকে ৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের টাকা দেয়া হলেও বর্তমানে একই জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের টাকা দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন আমাদের জমি অধিগ্রহণের টাকা দেয়া হউক।অথবা জমি দিয়ে পুনর্বাসন করা হউক।এব্যাপারে শেরপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো:রুহুল আমীন খানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন জমির মালিকদের দায়ের করা মোকদ্দমাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের  এলএ শাখায় চলমান রয়েছে। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। কিন্তু ওই দুই পরিবারকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে প্রয়োজনের তাগিদে।কারন ওই জমি ছেড়ে না দেয়ায় এক্সেল রুট নির্মাণ কাজে বাধা গ্রস্ত হচ্ছে।এক্সেল রুট নির্মাণ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে বলে জানাচ্ছেন।একারনে ওই দুই পরিবারকে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন অধিগ্রহণ শাখা জমি অধিগ্রহনের সকল কাগজপত্র আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। জমির মালিকগন অধিগ্রহণের টাকা পেয়েছেন কি না এ-টা আমাদের জানার বিষয় নয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নালিতাবাড়ীতে উচ্ছেদ আতঙ্কে দুই ভূমিহীন পরিবার

আপডেট সময় :

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পুনর্বাসন ছাড়াই  দুই ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি ভাঙ্গার নোটিশ দিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।ফলে    উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছে অসহায় সম্বলহীন ২  পরিবার।ঘটনাটি ঘটে নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের আন্ধারুপাড়া গ্রামে।

জানা গেছে,ওই গ্রামের মরহুম আকবর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা বেগম আন্ধারুপাড়া মৌজায় ২০৩২ দাগে ৪০ শতাংশ জমি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ ৪ যুগ ধরে ঘরবাড়ি নির্মান করে বসবাস করে আসছেন।রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৬৬ সালে আরওআর রেকর্ডের মালিক কেন্তু রাম শিং এর কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেন।১৯৮৮ সালে পিতার কাছ থেকে ক্রয়সুত্রে রফিকুল ইসলাম ও বোন সাজেদা বেগম মালিকানা লাভ করেন।

এ বাড়িতেই পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা বেগম।উক্ত জমির খাজনা-খারিজও পরিশোধ রয়েছে হাল নাগাদ পর্যন্ত।এ অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই দুই পরিবারের।২০১৫ সালে ওই বাড়ীর সামন  দিয়ে হাইওয়ে সড়ক নির্মাণ করে সড়কও জনপদ বিভাগ।এসময় পাঁচ শতাংশ জমি অধিকগ্রহণ করেন সরকার।অধিকগ্রহণকৃত জমির তৎকালীন বাজারমূল্য হিসেবে ৪৫ হাজার টাকাও পান পরিবার দুটি।

অবশিষ্ট জমির উপর নির্মিত বসতবাড়ী ছাড়া সহায় সম্বল বলতে আর কিছুই নেই পরিবার দু’টির। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা খাতুন জানান,২০২১ সালে উক্ত জমির উপর দিয়ে এক্সেল লোড নির্মাণ প্রকল্পের কাজ হাতে নেয় সরকার।এক্সেল লোড নির্মাণের জন্য এখানে ২৪ পরিবারের কাছ থেকে ৬ একর  জমি ও অধিকগ্রহণ করা হয়।কিন্তু আজও জমির মালিকদের জমির ন্যায্য মূল্য পাননি অনেকেই।জানা গেছে অধিকগ্রহণকৃত জমির মালিকদের কাগজপত্রে জটিলতার কারনে  অধিকগ্রহণের টাকা থেকেও বঞ্চিত হন তারা।
এ অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

অনেকেই জমির মূল্য না পেলেও তাদের আবাদি জমি দখলে নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এক্সেল রোড নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন কিন্তু রফিকুল ইসলাম ও তার বোন সাজেদা বেগমের ওই জমির বাড়ীঘর থাকায় জমি ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়নি।

তাদের ঘরবাড়ী ও গাছপালার ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া হলেও জমির মূল্য দেয়া হয়নি। তাদেরকে যে টাকা দেয়া হয়েছে তা দিয়ে জমি ক্রয় করে ঘরবাড়ী নির্মান করাও সম্ভব না বলে জানান।প্রশাসনের পক্ষ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে তাদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দেয়া হলেও আজও পরিবার দুইটির ভাগ্যে জোটেনি সরকারি জমি।জমির ন্যয্য মূল্য পাওয়ার দাবিতে রফিকুল ইসলাম ও সাজেদা বেগমসহ ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা শেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়েরর অধিগ্রহন এলএ শাখায় একটি মিস কেস করেন।বর্তমানে তা চলমান রয়েছে।

কিন্তু মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি না হতেই এবং পরিবার দুইটি পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না করে, ১২ মার্চ তাদেরকে বাড়ি ভেঙে ছেড়ে যাওয়ার নোটিশ প্রদান করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। নোটিশে বলা হয়েছে রফিকুল ইসলাম তাদের ঘরবাড়ী,গাছ পালাসহ সকল স্থাপনা সড়িয়ে নেওয়া না হলে তা গুড়িয়ে দেওয়া হবে।এ নোটিশ পাওয়ার পর থেকে পরিবার দুইটি উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছেন।এ অবস্থায় পরিবার দুইটি কোথায় যাবেন কি করবেন এ নিয়ে দিশেহারা পরিবার দুইটি।রফিকুল ইসলাম বলেন ২০১৫ সালে একই জমির অংশ থেকে ৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের টাকা দেয়া হলেও বর্তমানে একই জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের টাকা দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন আমাদের জমি অধিগ্রহণের টাকা দেয়া হউক।অথবা জমি দিয়ে পুনর্বাসন করা হউক।এব্যাপারে শেরপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো:রুহুল আমীন খানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন জমির মালিকদের দায়ের করা মোকদ্দমাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের  এলএ শাখায় চলমান রয়েছে। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। কিন্তু ওই দুই পরিবারকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে প্রয়োজনের তাগিদে।কারন ওই জমি ছেড়ে না দেয়ায় এক্সেল রুট নির্মাণ কাজে বাধা গ্রস্ত হচ্ছে।এক্সেল রুট নির্মাণ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে বলে জানাচ্ছেন।একারনে ওই দুই পরিবারকে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন অধিগ্রহণ শাখা জমি অধিগ্রহনের সকল কাগজপত্র আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। জমির মালিকগন অধিগ্রহণের টাকা পেয়েছেন কি না এ-টা আমাদের জানার বিষয় নয়।