ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo রামু উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিমান্তে গরু চোরা চালানরোধে আরো কঠোর হওয়ার আহবান Logo রাণাপিং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন সুলতান মাহমুদ  Logo মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে নরসিংদীতে যুবককে হত্যা Logo রামগতিতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিহত Logo ধামরাইয়ে ৪ অপহরণকারী জনতার হাতে আটক পুলিশে সোপর্দ Logo ধামরাইয়ে গ্রামবাসীর গণ অর্থায়নে আরিফুল ইসলাম কে ছাত্র-গণসংবর্ধনা Logo শাহজাদপুরে হযরত মখদুম শাহ দৌলা দারুল খুলদ ফাজিল মাদ্রাসায় মেয়েদের জন্য নামাজ ঘরের উদ্বোধন Logo মানিকগঞ্জে সরকারি জমি দখলের হিড়িক Logo মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণের দাবি Logo ফেনী জেলাব্যাপী সুপেয় পানির সংকটে হাহাকার

ফুঁসছে তিস্তার, নিম্নাঞ্চলের শতাধিক বাড়িঘর প্লাবিত

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৭৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কয়েকদিনের অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়ার সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার খুব কাছে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় ভাটিতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় তিস্তার নিম্নাঞ্চলের শতাধিক বাড়িঘর প্লাবিত ও নদীভাঙনের খবর পাওয়া গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগামী ১৮ ঘণ্টা তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরে পানি কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছে পাউবো।

পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় জেলার রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের চর, সরিষাবাড়ি এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়িরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ইউনিয়নের গতিয়াশাম গ্রামের বাসিন্দা রাকিবুল বলেন, কয়েকদিন ধরে পানি বাড়তেছে। শনিবার কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সঙ্গে কিছু এলাকায় ভাঙনও আছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গতিয়াশাম গ্রামে ভাঙনঝুঁকিতে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের বসতভিটা ও গ্রামীণ সড়ক।

একই গ্রামের স্নাতক শিক্ষার্থী তানজিম বলেন, নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে ভাঙনও শুরু হয়েছে। সড়ক, কমিউনিটি ক্লিনিক ও বেশ কিছু বসতভিটা ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও ফল পাচ্ছি না। দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সব নদীগর্ভে বিলীন হবে।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম বলেন, পানি বাড়তেছে। আমার বাড়িতেও পানি ঢুকছে। নিচু এলাকার শতাধিক বাড়িঘরে পানি ঢুকছে। রাত পোহাতে পোহাতে আরও বাড়িঘরে পানি ঢুকতে পারে।

ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিক বলেন, ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে।

পাউবো নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়াও ধরলার পানি কুড়িগ্রাম শহর (ধরলা সেতু) পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি ভূরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও তিস্তা ছাড়া অন্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছার সম্ভাবনা নেই। পূর্বাভাস অনুযায়ী তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ২৪ ঘণ্টা পর পানি কমতে শুরু করবে।

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলাতানা বলেন, শনিবার তিস্তা তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছি। কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ স্থানীয়দের উদ্ধার ও খাদ্যসহায়তার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফুঁসছে তিস্তার, নিম্নাঞ্চলের শতাধিক বাড়িঘর প্লাবিত

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কয়েকদিনের অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়ার সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার খুব কাছে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় ভাটিতে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় তিস্তার নিম্নাঞ্চলের শতাধিক বাড়িঘর প্লাবিত ও নদীভাঙনের খবর পাওয়া গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগামী ১৮ ঘণ্টা তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরে পানি কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছে পাউবো।

পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় জেলার রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের চর, সরিষাবাড়ি এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়িরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। একই সঙ্গে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ইউনিয়নের গতিয়াশাম গ্রামের বাসিন্দা রাকিবুল বলেন, কয়েকদিন ধরে পানি বাড়তেছে। শনিবার কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সঙ্গে কিছু এলাকায় ভাঙনও আছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গতিয়াশাম গ্রামে ভাঙনঝুঁকিতে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের বসতভিটা ও গ্রামীণ সড়ক।

একই গ্রামের স্নাতক শিক্ষার্থী তানজিম বলেন, নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে ভাঙনও শুরু হয়েছে। সড়ক, কমিউনিটি ক্লিনিক ও বেশ কিছু বসতভিটা ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও ফল পাচ্ছি না। দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সব নদীগর্ভে বিলীন হবে।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম বলেন, পানি বাড়তেছে। আমার বাড়িতেও পানি ঢুকছে। নিচু এলাকার শতাধিক বাড়িঘরে পানি ঢুকছে। রাত পোহাতে পোহাতে আরও বাড়িঘরে পানি ঢুকতে পারে।

ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিক বলেন, ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে।

পাউবো নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই সময়ে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়াও ধরলার পানি কুড়িগ্রাম শহর (ধরলা সেতু) পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি ভূরুঙ্গামারীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও তিস্তা ছাড়া অন্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছার সম্ভাবনা নেই। পূর্বাভাস অনুযায়ী তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ২৪ ঘণ্টা পর পানি কমতে শুরু করবে।

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলাতানা বলেন, শনিবার তিস্তা তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছি। কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ স্থানীয়দের উদ্ধার ও খাদ্যসহায়তার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।