ঢাকা ০৮:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

ফেণীতে ৭৪ গ্রাম প্লাবিত, পানিবনিদ হাজার হাজার মানুষ

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১১:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪ ১৬৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ফেণীর ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫ স্থানে ভেঙে গিয়ে ৭৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তাতে করে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছে।

ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলগাজী ও পরশুরাম অংশে প্লাবিত হওয়ায় কার্যত জেলা হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে দিকে নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ২২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূইয়া জানান, গত ১ জুলাই প্রথম বন্যার কবলে পড়েছিল ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলাবাসী। শুক্রবার (২ আগস্ট) দ্বিতীয় দফায় মুহুরি, কহুয় ও ছিলনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে আবারও বন্যার কবলে পড়েছে এ দুই উপজেলার বাসিন্দারা।

পরশুরাম ইউএনও আফরোজা হাবিব শাপলা জানান, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে উপজেলায় পৌরসভার বেড়াবাড়ি ও বাউরখুমা দুটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়। এতে বাউরখুমা, বাউরপাথর, বিলোনিয়া, দুবলাচাঁদ, বেড়াবাড়িয়া, উত্তর গুথুমা, কোলাপাড়া ও বাসপদুয়া গ্রামে প্রায় ৭০০০ হাজার পরিবার পানিবন্দি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার ১৫০ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০০ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২৫০ প্যাকেট খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে; ৫ মেট্রিক টন মজুদ রাখা হয়েছে। পরশুরাম উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

পরশুরামে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়াসহ জনপ্রতিনিধিবৃন্দ ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আবুল কাশেম বলেন, এর আগে কখনো এতো পানি দেখা যায়নি। গত দুদিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের পানিতে মুহুরি ও কহুয়া নদীর পানি বিপদসীমার ২২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৫টি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাঁধের আরও কয়েকটি অংশে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বৃষ্টিপাত কমে গেলে নতুন করে আর ভাঙনের শঙ্কা নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, জুলাই মাসে প্রতিরক্ষা বাঁধের ১১৫ মিটার অংশ ভেঙেছে। এটি মেরামতে তাদের ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পরশুরামের যে অংশ ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মেরামত করা হয়েছে, এবার বন্যায় সবার আগে সে অংশটি ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। পরিকল্পিতভাবে কাজ না করে এমন ভাঙা-গড়ার খেলা চলতে থাকলে তারা কোনো দিন এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফেণীতে ৭৪ গ্রাম প্লাবিত, পানিবনিদ হাজার হাজার মানুষ

আপডেট সময় : ১১:১১:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪

 

ফেণীর ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫ স্থানে ভেঙে গিয়ে ৭৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তাতে করে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছে।

ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলগাজী ও পরশুরাম অংশে প্লাবিত হওয়ায় কার্যত জেলা হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে দিকে নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ২২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূইয়া জানান, গত ১ জুলাই প্রথম বন্যার কবলে পড়েছিল ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলাবাসী। শুক্রবার (২ আগস্ট) দ্বিতীয় দফায় মুহুরি, কহুয় ও ছিলনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে আবারও বন্যার কবলে পড়েছে এ দুই উপজেলার বাসিন্দারা।

পরশুরাম ইউএনও আফরোজা হাবিব শাপলা জানান, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে উপজেলায় পৌরসভার বেড়াবাড়ি ও বাউরখুমা দুটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়। এতে বাউরখুমা, বাউরপাথর, বিলোনিয়া, দুবলাচাঁদ, বেড়াবাড়িয়া, উত্তর গুথুমা, কোলাপাড়া ও বাসপদুয়া গ্রামে প্রায় ৭০০০ হাজার পরিবার পানিবন্দি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার ১৫০ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০০ পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২৫০ প্যাকেট খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে; ৫ মেট্রিক টন মজুদ রাখা হয়েছে। পরশুরাম উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

পরশুরামে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়াসহ জনপ্রতিনিধিবৃন্দ ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আবুল কাশেম বলেন, এর আগে কখনো এতো পানি দেখা যায়নি। গত দুদিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের পানিতে মুহুরি ও কহুয়া নদীর পানি বিপদসীমার ২২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৫টি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাঁধের আরও কয়েকটি অংশে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বৃষ্টিপাত কমে গেলে নতুন করে আর ভাঙনের শঙ্কা নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, জুলাই মাসে প্রতিরক্ষা বাঁধের ১১৫ মিটার অংশ ভেঙেছে। এটি মেরামতে তাদের ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পরশুরামের যে অংশ ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মেরামত করা হয়েছে, এবার বন্যায় সবার আগে সে অংশটি ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। পরিকল্পিতভাবে কাজ না করে এমন ভাঙা-গড়ার খেলা চলতে থাকলে তারা কোনো দিন এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে না।