ঢাকা ১২:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বন্যার্তদের ত্রাণ সংগ্রহে নজির গড়লো বাংলাদেশ, ছুটির দিনে আধা বেলাতেই সংগ্রহ প্রায় দেড় কোটি টাকা

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪ ৬০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বন্যার্ত মানুষকে সহযোগিতায় শনিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গণত্রাণ সংগ্রহ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এর আগে শুক্রবার একদিনেই নগদ প্রায় দেড়কোটি টাকা ত্রাণসহায়তা গ্রহণ করা হয়েছে।

যে পরিশান ত্রাণসামগ্রী টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে তুলে দিয়েছেন, তা বহন করতে প্রায় ৫০টি ট্রাক লেগেছে।

শুক্রবার দিনভর ত্রাণ ও নগদ অর্থ সংগ্রহের পর রাতে প্যাকেজিংয়েও অংশ নেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। এরপর ট্রাকে করে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে দুর্গত এলাকায়।

শনিবার সকাল ১০টা থেকে টিএসসির ফটকে আবারও ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হয়েছে চলবে রাত আটটা পর্যন্ত।

সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে রাত আটটা পর্যন্ত। শুক্রবার কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই উদ্যোগে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ৫০ হাজার ১৯৬ টাকা জমা পড়েছে।

দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যা শুরু হওয়ার পর গত বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণত্রাণ সংগ্রহের উদ্যোগের ঘোষণা দেন।

আন্দোলনের সব সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিজ নিজ জেলা-উপজেলায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও জনসাধারণের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বেচ্ছাসেবী দল গঠনের আহ্বান জানান বাকের।

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল সবার সঙ্গে সমন্বয় করে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের জন্য রেসকিউ অপারেশন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

গত টিএসসির প্রধান ফটকে বুথ স্থাপন করে বৃহস্পতিবার থেকে গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগের সঙ্গে শামিল হন। কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, কেউ ভ্যানে করে, কেউ কেউ ছোট ট্রাকে করে ত্রাণ নিয়ে আসেন।

বুথে থাকা শিক্ষার্থীরা দাতার নাম ও পণ্যের বিবরণ লিখে রাখেন খাতায়। পাশাপাশি অনেকে নগদ অর্থ দিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান। সেই অনুদানের অঙ্কও শিক্ষার্থীরা খাতায় লিখে রাখছেন।

ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচির প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা জমা পড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই উদ্যোগে। এ ছাড়া প্যাকেজিং শেষে রাতে পণ্যভর্তি কয়েকটি ট্রাক দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার দুপুর থেকে টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আসা মানুষের ঢল নামে।

এদিন নগদ সংগ্রহ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার ১৯৬ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক লুৎফর রহমান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে ত্রাণ হিসেবে বোতলজাত পানি ও খাবার স্যালাইন, কেউ মুড়ি-চিড়া, কেউবা বিস্কুট, আবার কেউ খেজুরসহ বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন শুকনো খাবার নিয়ে আসেন মানুষ।

জরুরি সংযোগে ৬ ঘণ্টায় ২১ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু। পাশাপাশি বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের জন্য প্রায় ২০ ট্রাক সমপরিমাণ ত্রাণসামগ্রী সংগৃহীত হয়েছে। প্যাকেজিং শেষে ত্রাণসামগ্রী দুর্গত এলাকায় পাঠানো হবে।

এই দুই উদ্যোগের বাইরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও হলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ ও অর্থ সংগ্রহে নেমেছেন।

কেউ কেউ ছোট ছোট বাক্স নিয়ে ঘুরে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করছেন। কেউ বুথ বসিয়ে সংগ্রহ করছেন ত্রাণ ও নগদ অর্থ। বিভিন্ন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগেও চলছে অর্থ সংগ্রহ। সবারই লক্ষ্য, বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বন্যার্তদের ত্রাণ সংগ্রহে নজির গড়লো বাংলাদেশ, ছুটির দিনে আধা বেলাতেই সংগ্রহ প্রায় দেড় কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০২:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

 

বন্যার্ত মানুষকে সহযোগিতায় শনিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গণত্রাণ সংগ্রহ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এর আগে শুক্রবার একদিনেই নগদ প্রায় দেড়কোটি টাকা ত্রাণসহায়তা গ্রহণ করা হয়েছে।

যে পরিশান ত্রাণসামগ্রী টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে তুলে দিয়েছেন, তা বহন করতে প্রায় ৫০টি ট্রাক লেগেছে।

শুক্রবার দিনভর ত্রাণ ও নগদ অর্থ সংগ্রহের পর রাতে প্যাকেজিংয়েও অংশ নেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী। এরপর ট্রাকে করে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে দুর্গত এলাকায়।

শনিবার সকাল ১০টা থেকে টিএসসির ফটকে আবারও ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু হয়েছে চলবে রাত আটটা পর্যন্ত।

সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে রাত আটটা পর্যন্ত। শুক্রবার কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই উদ্যোগে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ৫০ হাজার ১৯৬ টাকা জমা পড়েছে।

দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যা শুরু হওয়ার পর গত বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণত্রাণ সংগ্রহের উদ্যোগের ঘোষণা দেন।

আন্দোলনের সব সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিজ নিজ জেলা-উপজেলায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও জনসাধারণের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বেচ্ছাসেবী দল গঠনের আহ্বান জানান বাকের।

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল সবার সঙ্গে সমন্বয় করে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের জন্য রেসকিউ অপারেশন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

গত টিএসসির প্রধান ফটকে বুথ স্থাপন করে বৃহস্পতিবার থেকে গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগের সঙ্গে শামিল হন। কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, কেউ ভ্যানে করে, কেউ কেউ ছোট ট্রাকে করে ত্রাণ নিয়ে আসেন।

বুথে থাকা শিক্ষার্থীরা দাতার নাম ও পণ্যের বিবরণ লিখে রাখেন খাতায়। পাশাপাশি অনেকে নগদ অর্থ দিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান। সেই অনুদানের অঙ্কও শিক্ষার্থীরা খাতায় লিখে রাখছেন।

ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচির প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ১৭৩ টাকা জমা পড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই উদ্যোগে। এ ছাড়া প্যাকেজিং শেষে রাতে পণ্যভর্তি কয়েকটি ট্রাক দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার দুপুর থেকে টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আসা মানুষের ঢল নামে।

এদিন নগদ সংগ্রহ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার ১৯৬ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক লুৎফর রহমান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে ত্রাণ হিসেবে বোতলজাত পানি ও খাবার স্যালাইন, কেউ মুড়ি-চিড়া, কেউবা বিস্কুট, আবার কেউ খেজুরসহ বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন শুকনো খাবার নিয়ে আসেন মানুষ।

জরুরি সংযোগে ৬ ঘণ্টায় ২১ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু। পাশাপাশি বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের জন্য প্রায় ২০ ট্রাক সমপরিমাণ ত্রাণসামগ্রী সংগৃহীত হয়েছে। প্যাকেজিং শেষে ত্রাণসামগ্রী দুর্গত এলাকায় পাঠানো হবে।

এই দুই উদ্যোগের বাইরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও হলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ ও অর্থ সংগ্রহে নেমেছেন।

কেউ কেউ ছোট ছোট বাক্স নিয়ে ঘুরে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করছেন। কেউ বুথ বসিয়ে সংগ্রহ করছেন ত্রাণ ও নগদ অর্থ। বিভিন্ন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগেও চলছে অর্থ সংগ্রহ। সবারই লক্ষ্য, বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।