বর্ণিল উৎসবে বর্ষবরণ
- আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ২৮৮ বার পড়া হয়েছে
পহেলা বৈশাখ বাঙালির সার্বজনীন লোকজ উৎসব। রঙিন উৎসবের মধ্য দিয়ে বরণ করা হয় ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে। মানবকল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষ।
বর্ণিল উৎসব উযাপনের মধ্য বাংলাদেশে বর্ণিল উৎসবের মধ্য দিয়ে বরণ করা হয় বাংলা নববর্ষকে। ভোর থেকেই সব বয়সী মানুষ সাজগোজ করে সপরিবারে বেড়িয়ে পড়েন। সবার ঠিকানা রমনা-সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে চারুকলার মঙ্গল শোযাত্রা।
নববর্ষকে বরণে বিগত কয়েক দিনের বর্ণিল আয়োজনের স্বার্থক রূপ পায় রোববার। এদিন ভোরে এসো হে বৈশাখ সমবেত সঙ্গীতের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে।
সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপমণ্ডকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে পহেলা বৈশাখ। মনের ভেতরের সব ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা জোগায়-আবহমান বাংলার রঙিন উৎসব।
দিবসটিকে ঘিরে বর্ণিল উৎসবে মাতে ওঠে বাংলাদেশ। ভোরের নরম আলো রাঙিয়ে দেয় নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা সম্ভাবনাকে। দেশজুড়ে বর্ষবরণের নানা আয়োজন বলে দেয় কতটা উৎসব প্রিয় বাঙলী। কতটা জাঁকজমকপূর্ণ বাংলা নববর্ষের আয়োজন হতে পারে তার স্বাক্ষী ঢাকা।
সকাল সাড়ে নটা নাগাদ মঙ্গল শোভাযাত্রার ঢাকে কাঠি পড়ে। ইউনেস্কো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া হাজারো মানুষ হর্ষধ্বনি দিয়ে জানান দেয় তারা প্রস্তুত।
ইটপাথরের নগরে মেলা বসে নানা স্থানে। মেলায় নানা রকমের খেলার সঙ্গে পরিচিত হয় ছোট্ট শিশুরা। তারা কিনেও নেয় নানা পণ্য। শিল্পকলা একাডেমীর পাশের রাস্তায় নানা পণ্য সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। দোকানে ভিড় বেশ।
ঈদুল ফিতরের ছুটি সঙ্গে পহেলা বৈশাখের ছুটিও চলছে। এর মধ্যে বর্ষবরণ নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হাজারো মানুষ ছুচে আসে ঐতিহ্যের পথ ধরে। বৈশাখ তাদের অংকারের বর্ণিল আয়োজন। বৈশাখ সাধারণ মানুষকে বিশেষ করে যারা গ্রামীণ জনপদে ফসল ফলান তাদের চিনতে শেখায়।
বৈশাখ তথা বাংলা নববর্ষ এমন এক উৎসব যা কিনা হৃদয়ে রঙ ছড়ায়। খড়তাপকে উপেক্ষা করে হাজারো মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে তৃপ্তিসহকারে সপরিবারে সময় কাটান। ঢাকায় যেখানে পা রাখবেন, সেখানেই উৎসবের আমেজ।
ঢাকার আশপাশ থেকেও সপরিবারে মানুষ ছুটে আসে মঙ্গল শোভা যাত্রায় অংশ নিতে। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেন সমাজকল্যান মন্ত্রী ডা. দিপু মনি। মঙ্ঘল শোভাযাত্রার ব্যানার ধরে হাটেন তিনি।
বর্ষবরণের এই দিনে বাংলাদেশ ছাপিয়ে, দেশের বাইরে বসবারত বাংলা ভাষাভাষি মানুষ ফিরে যাবেন তাদের আদি সংস্কৃতির স্রোত স্বীনিতে। বর্ষবরণের উৎসবে মেতে ওঠবেন তারা।
বিশ্বের মানবকুলের মঙ্গল কামনায় এই মানব মিছিলে হাঁটেন শিক্ষক-লেখক, শিল্পী, সংস্কৃতি ও সমাজকর্মীসহ বাদ্য যন্ত্রের তালে তালে পা মেলান সর্বস্তরের মানুষ।
বাংলাদেশজুড়ে চলছে নানা আয়োজন। প্রতিটি বিভাগে বর্ষবরণ আয়োজনে মেতে ওঠেছে লাখো মানুষ। গ্রামীণ জনপদে মেলা, লাঠিখেলা, নৌকা বাইচ, হাডুডু থেকে শুরু করে আবহমান বাংলার নানা রকমের উৎসব আয়োজন থাকছে বাংলা নববর্ষ ঘিরে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নেওয়া হয় তিন স্তরের নিরাপত্তা। নববর্ষ ঘিরে গোটা বাংলাদেশে নেওয়া কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।