ঢাকা ০৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo শৈলকুপায় মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ Logo ইসলামপুরে জেসমিন প্রকল্পের উদ্যোগে পুষ্টি মেলা অনুষ্ঠিত  Logo কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাতক মুন্নার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করছে সেকেন্ড ইন কমান্ড ফরিদ  Logo পানি উন্নয়ন বোর্ডের খামখেয়ালীতায়, ভাঙনরোধে ৬ কোটি টাকার প্রকল্প জলে যাবে  Logo প্রচণ্ড গরমে কেশবপুরে  তালশাঁসের কদর বেড়েছে কেশবপুরে তালের শাঁস বিক্রির ধুম Logo বাগেরহাটে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের গ্রাহকদের টাকা ফেরত ও মালিকের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন Logo হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর ৭০৬তম ওরস মাহফিল রোববার থেকে শুরু, নিরাপত্তার চাদর Logo পত্নীতলায় বিজিবি’র অভিযানে ৬০৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার  Logo পলাশবাড়ী পৌরসভায় অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা Logo আমার বাড়ি আমার ঘরের এমডির বিরুদ্ধে ভূমিদখল-প্রতারণা-অভিযোগ

বাঁধ ভেঙে শেরপুরে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১০:২৪:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিন জেলা ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোণার বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এরমধ্যে শেরপুরের পরিস্থিতির অবণতির দিকে। এখানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে সদর বাজারসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে মাছেন ঘের ও ফসলী জমি। বাড়িঘরে পানি বন্দী লাখো মানুষ। উজানে মেঘালয় নেমে আসা পানি বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে শেরপুরের মানুষ। জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির করা হচ্ছে শঙ্কা রয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানায়।

শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, পাহাড়ি ঢলের শেরপুরে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত। আটকে পড়া মানুষজনদের উদ্ধারে কাজ চলছে। বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য শুকনো খাবার রাতের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে।

আবহাওয়ার তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা অধিক উচ্চতার জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে।

তলিয়ে গেছে শেরপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা

অপর দিকে সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুখবর নেই।

পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ বিভাগের ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীসমূহের পানি সমতল বাড়ছে এবং ভুগাই নদী শেরপুর জেলার নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়, ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে এবং শেরপুরের ভুগাই নদীর ভাটিতে নেত্রকোণার কংস নদী এবং জামালপুরের জিঞ্জিরাম নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে ভুগাই-কংস নদী সংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা এবং জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন জামালপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।

আমাদের শেরপুর প্রতিনিধি মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার রাতের অভিরাম বর্ষণ আর ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ৪ নদী নালিতাবাড়ীর ভোগাই ও চেল্লাখালী, ঝিনাইগাতীর মহারশি এবং শ্রীবরদীর সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার(৪ অক্টোবর) ভোর রাতে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের পানিতে মহারশি নদীর রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, দিঘীরপাড় ও ডাকাবর এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে সদর বাজার সহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়। রামেরকুড়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কয়েকটি বাড়ী নদীর গর্ভে বিলীণ হয়ে যায়।

শতশত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। তলিয়ে গেছে শতশত একর রোপা আমন ধানের ক্ষেত, ঝিনাইগাতীর সদর বাজারে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সহ অন্যান্য ফসলের মাঠ। পানিবন্দি হয়ে পরেছে উপজেলা সদরের কয়েকটি গ্রাম সহ ভাটি এলাকার কমপক্ষে ৩০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। এদিকে নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতংকে রয়েছে জেলার তিন উপজেলার বাসিন্দারা। তবে এখনো কোন হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত ঢাকা জেলা এবং এর চারপাশের নদীসমূহের পানির সমতল ধীর গতিতে বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

সিলেট বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ সারিগোয়াইন, যাদুকাটা ও মনু নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে খোয়াই ও ধলাই নদীসমূহের পানির সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের এসব নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী নদীর পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে সাঙ্গু, মুহুরি, হালদা, ফেনী ও মাতামুহুরী নদীসমূহের পানির সমতল কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের এই সকল নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে।

রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী ২ দিন পর্যন্ত নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে।

রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদের ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানির সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানির সমতল বাড়ছে তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল ধীর গতিতে বাড়তে পারে এবং পরবর্তী ০৪ দিন গঙ্গা-পদ্মা উভয় নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বাঁধ ভেঙে শেরপুরে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

আপডেট সময় : ১০:২৪:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪

 

বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিন জেলা ময়মনসিংহ, শেরপুর ও নেত্রকোণার বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এরমধ্যে শেরপুরের পরিস্থিতির অবণতির দিকে। এখানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে সদর বাজারসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে মাছেন ঘের ও ফসলী জমি। বাড়িঘরে পানি বন্দী লাখো মানুষ। উজানে মেঘালয় নেমে আসা পানি বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে শেরপুরের মানুষ। জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির করা হচ্ছে শঙ্কা রয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এ তথ্য জানায়।

শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, পাহাড়ি ঢলের শেরপুরে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত। আটকে পড়া মানুষজনদের উদ্ধারে কাজ চলছে। বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য শুকনো খাবার রাতের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে।

আবহাওয়ার তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা অধিক উচ্চতার জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে।

তলিয়ে গেছে শেরপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা

অপর দিকে সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুখবর নেই।

পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ বিভাগের ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীসমূহের পানি সমতল বাড়ছে এবং ভুগাই নদী শেরপুর জেলার নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়, ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে এবং শেরপুরের ভুগাই নদীর ভাটিতে নেত্রকোণার কংস নদী এবং জামালপুরের জিঞ্জিরাম নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে ভুগাই-কংস নদী সংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা এবং জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন জামালপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।

আমাদের শেরপুর প্রতিনিধি মোহাম্মদ দুদু মল্লিক, জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার রাতের অভিরাম বর্ষণ আর ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ৪ নদী নালিতাবাড়ীর ভোগাই ও চেল্লাখালী, ঝিনাইগাতীর মহারশি এবং শ্রীবরদীর সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার(৪ অক্টোবর) ভোর রাতে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের পানিতে মহারশি নদীর রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, দিঘীরপাড় ও ডাকাবর এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে সদর বাজার সহ বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়। রামেরকুড়া বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কয়েকটি বাড়ী নদীর গর্ভে বিলীণ হয়ে যায়।

শতশত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। তলিয়ে গেছে শতশত একর রোপা আমন ধানের ক্ষেত, ঝিনাইগাতীর সদর বাজারে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সহ অন্যান্য ফসলের মাঠ। পানিবন্দি হয়ে পরেছে উপজেলা সদরের কয়েকটি গ্রাম সহ ভাটি এলাকার কমপক্ষে ৩০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। এদিকে নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতংকে রয়েছে জেলার তিন উপজেলার বাসিন্দারা। তবে এখনো কোন হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত ঢাকা জেলা এবং এর চারপাশের নদীসমূহের পানির সমতল ধীর গতিতে বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

সিলেট বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ সারিগোয়াইন, যাদুকাটা ও মনু নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে খোয়াই ও ধলাই নদীসমূহের পানির সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের এসব নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী নদীর পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে সাঙ্গু, মুহুরি, হালদা, ফেনী ও মাতামুহুরী নদীসমূহের পানির সমতল কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের এই সকল নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে।

রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী ২ দিন পর্যন্ত নদীসমূহের পানির সমতল কমতে পারে।

রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদের ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানির সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৫ দিন পর্যন্ত নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানির সমতল বাড়ছে তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল ধীর গতিতে বাড়তে পারে এবং পরবর্তী ০৪ দিন গঙ্গা-পদ্মা উভয় নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।