বাউফলে নারীসহ যুবলীগ নেতা আটক
- আপডেট সময় : ০৯:৫১:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ৮৩ বার পড়া হয়েছে
পটুয়াখালীর বাউফলে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মিজান মোল্লাকে(৪৭)এক নারী সহ আটক করেছে পুলিশ৷ তার বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কলেজ রোড এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটকের সময় রুমের মধ্যেই পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় এক ব্যক্তির দিকে তেড়ে যাওয়ায় উপস্থিত জনতার মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং গাড়িতে তোলার সময় পুলিশের সামনেই তাকে মারধর করে উত্তেজিত জনতা। এসময় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করেও ইট পাটকেল মারে উত্তেজিত জনতা।
পুলিশ জানায়, রাত ৯ টার দিকে স্থানীয়রা আমাদেরকে বলেন যে, মিজান মোল্লা নামের একজন যুবলীগ নেতা কালাইয়া কলেজ রোডে একজন আওয়ামী লীগ নেত্রীর বাসায় অন্য একজন নারীকে নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত হয়েছেন। পরে থানার টহল টিম ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে পাঁচ শতাধিক মানুষ বাইরে থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছিল। থানার ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি ভবনের নিচতলার একটি রুম থেকে মিজান মোল্লাকে আটক করেন। একই ভবনের দোতলার একটি বাসা থেকে একজন হিন্দু নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ৷ ওই নারী অসুস্থ বোধ করলে তাকে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আটক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কবরস্থানের জায়গা দখল করে ঘর তোলা এবং সেই মাদকের আড্ডা বসানোর অভিযোগ আছে। একাধিক মাদক মামলার আসামি ও নিয়মিত মাদক কারবারি রেজাউল ওরফে রেজু মিজান মোল্লার সেই ঘর দেখাশুনা করতেন। ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় মাদক ইস্যুতে যুবলীগ সভাপতি মিজান মোল্লার নাম এসেছিলো এবং ওই বাসা থেকে মাদক উদ্ধারও হয়েছিলো। কিন্তু সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের প্রভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। সরকার পতনের পরে সম্প্রতি ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কবরস্থান দখল করে গড়ে তোলা মাদকের আকরার ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, মিজার মোল্লা একজন হিন্দু নারীকে নিয়ে এই বাসায় ঢুকতে দেখেন এক শিক্ষার্থী। বিষয়টি জানাজানি হলে অনেক লোকজন জড়ো হয়ে যায়। একপর্যায়ে লোকজন ভবনের ভিতরে ঢুকে গেলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। বাইরেও অতিরিক্ত লোকজন দেখে তিনি নিচতলার ওই রুমে ঢুকে ভিতরে থেকে দরজা আটকে দেয়। এরপরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়৷
অভিযোগ অস্বীকার করে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মিজান মোল্লা বলেন, ‘তিনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছু কিশোর বয়সী ছেলে তাকে মারধর করেন৷ আত্মরক্ষার জন্য তিনি দৌড়ে এই রুমে প্রবেশ করেন। এখানে কোনো নারী সংক্রান্ত বিষয় নেই৷ তিনি মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত না। এগুলা সব সাজানো নাটক বলে দাবি করেন তিনি।’
ওই নারীও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তাকে ডেকে এনে জোর করে কিছু লোক এই বাসায় ঢুকিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন যুবলীগ নেতাকে স্থানীয়রা আটকে রেখেছেন। এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে আটক করেছি। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও জমি দখলসহ বেশ কিছু অভিযোগ আছে। জিজ্ঞাবাদে অভিযোগের বিষয় সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।