ঢাকা ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

বান্দরবানে ভূমিধসের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা

বাসুদেব বিশ্বাস,বান্দরবান
  • আপডেট সময় : ১০:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ভূমিধসের ক্ষয়-ক্ষতি ও প্রাণহানি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ইউএসএআইডি এর আর্থিক সহায়তায় ও সিআরএস এর কারিগরী সহযোগিতায় কারিতাস বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং স্থানীয় দুইটি সহযোগী এনজিও, তহ্জিংডং এবং হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন-এর সাথে অংশীদারত্বিরে মাধ্যমে বান্দরবান সদর উপজলা, লামা উপজেলা ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজলার আওতাধীন মোট ৯টি ইউনিয়নে “ভূমিধসের পূর্ব সতর্কতা এবং আগাম পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তামূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানের হলিডে ইন রিসোর্ট এর হলরুমে “ভূমিধসের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা ”এর আয়োজন করা হয়েছে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শরীফুল হক। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ঢাকা এর আবহাওয়াবিদ এস. এম. কামরুল হাসান, আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশীদ, পরিচালক-অর্থ ও প্রশাসন, কারিতাস বাংলাদেশ এর রিমি সুবাস দাশ আর এসময় সভাপতিত্ব করেন কারিতাস বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মার্সেল রতন গুদা।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী বেগম রাজিয়া সুলতানা, রাইমস এর ক্লাইমেট সার্ভিস এক্সপার্ট আসিফ উদ্দীন বীননূর , কারিতাস বাংলাদেশ কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেক্টরের বিভাগীয় প্রধান আলেক্স জান্ডার ত্রিপুরা। এছাড়াও বান্দরবান জেলা পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সম্মানীত জেলা প্রতিনিধিবৃন্দ, সরকারী প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বেসরকারী সংস্থার স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জেলা প্রতিনিধিবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের প্রতিনিধিবৃন্দ, হেডম্যান-কারবারী বৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

কর্মশালা সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের ডিআরআর স্পেশালিস্ট প্রিয়াংকা নাগ। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক রামবাদু ত্রিপুরা (স্টিভ) সবাইকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরন, প্রকল্পের লক্ষ্য এবং এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি এসময় বলেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও স্থানীয় অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে প্রকল্প এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকিপূর্ণ পাড়া বা স্থানসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এসকল এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের মাঝে দূর্যোগ পূর্ববর্তী আগাম পদক্ষেপসমূহ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দূর্যোগ মোকাবিলা করার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. শরীফুল হক বলেন, ভুমিধসের প্রবণতা এই পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার কোন সমাধান এখনো নেই। প্রকল্পের মাধ্যমে যদি কমিউনিটির মানুষ ভুমিধস নিয়ে পূর্ব সতর্কতা পায় এবং সচেতন হয় তাহলে এই প্রকল্পের সার্থকতা আমরা দেখতে পাবো। তিনি প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রশাসন থেকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

কর্মশালায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর পক্ষ থেকে কর্মশালার বিষয়ের উপর উপস্থাপন করেন ড. মো. বজলুর রশীদ, রাইমস এবং কারিতাস বাংলাদেশ তরফ থেকে পেপার উপস্থাপন করা হয়।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর আবহাওয়াবিদ, এস. এম. কামরুল হাসান বলেন, ভূমিধসের প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণ রয়েছে, অপরিকল্পিত বৃক্ষনিধন ও পাহাড়কাটা, রাস্তা-ঘাট তৈরি করাগুলো পাড়াধসের যথেষ্ট কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভূমিধসের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার জন্য কারিতাস বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রকল্প শেষ পরবর্তীতে সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ প্রদান করেন। এইরকম কর্মশালা আগামীতে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান করেন।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটির মাধ্যমে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আগাম সতর্কবার্তা প্রদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে গবেষণা, পরামর্শ সভা ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে নতুন ২৭টি বৃষ্টিপরিমাপক যন্ত্র স্থাপনের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বান্দরবানে ভূমিধসের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা

আপডেট সময় : ১০:২৮:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ভূমিধসের ক্ষয়-ক্ষতি ও প্রাণহানি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ইউএসএআইডি এর আর্থিক সহায়তায় ও সিআরএস এর কারিগরী সহযোগিতায় কারিতাস বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং স্থানীয় দুইটি সহযোগী এনজিও, তহ্জিংডং এবং হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন-এর সাথে অংশীদারত্বিরে মাধ্যমে বান্দরবান সদর উপজলা, লামা উপজেলা ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজলার আওতাধীন মোট ৯টি ইউনিয়নে “ভূমিধসের পূর্ব সতর্কতা এবং আগাম পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তামূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানের হলিডে ইন রিসোর্ট এর হলরুমে “ভূমিধসের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালা ”এর আয়োজন করা হয়েছে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শরীফুল হক। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ঢাকা এর আবহাওয়াবিদ এস. এম. কামরুল হাসান, আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশীদ, পরিচালক-অর্থ ও প্রশাসন, কারিতাস বাংলাদেশ এর রিমি সুবাস দাশ আর এসময় সভাপতিত্ব করেন কারিতাস বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মার্সেল রতন গুদা।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী বেগম রাজিয়া সুলতানা, রাইমস এর ক্লাইমেট সার্ভিস এক্সপার্ট আসিফ উদ্দীন বীননূর , কারিতাস বাংলাদেশ কেন্দ্রিয় কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেক্টরের বিভাগীয় প্রধান আলেক্স জান্ডার ত্রিপুরা। এছাড়াও বান্দরবান জেলা পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সম্মানীত জেলা প্রতিনিধিবৃন্দ, সরকারী প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বেসরকারী সংস্থার স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জেলা প্রতিনিধিবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের প্রতিনিধিবৃন্দ, হেডম্যান-কারবারী বৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

কর্মশালা সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের ডিআরআর স্পেশালিস্ট প্রিয়াংকা নাগ। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক রামবাদু ত্রিপুরা (স্টিভ) সবাইকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরন, প্রকল্পের লক্ষ্য এবং এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি এসময় বলেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও স্থানীয় অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে প্রকল্প এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকিপূর্ণ পাড়া বা স্থানসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এসকল এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের মাঝে দূর্যোগ পূর্ববর্তী আগাম পদক্ষেপসমূহ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দূর্যোগ মোকাবিলা করার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. শরীফুল হক বলেন, ভুমিধসের প্রবণতা এই পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার কোন সমাধান এখনো নেই। প্রকল্পের মাধ্যমে যদি কমিউনিটির মানুষ ভুমিধস নিয়ে পূর্ব সতর্কতা পায় এবং সচেতন হয় তাহলে এই প্রকল্পের সার্থকতা আমরা দেখতে পাবো। তিনি প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রশাসন থেকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

কর্মশালায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর পক্ষ থেকে কর্মশালার বিষয়ের উপর উপস্থাপন করেন ড. মো. বজলুর রশীদ, রাইমস এবং কারিতাস বাংলাদেশ তরফ থেকে পেপার উপস্থাপন করা হয়।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর আবহাওয়াবিদ, এস. এম. কামরুল হাসান বলেন, ভূমিধসের প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণ রয়েছে, অপরিকল্পিত বৃক্ষনিধন ও পাহাড়কাটা, রাস্তা-ঘাট তৈরি করাগুলো পাড়াধসের যথেষ্ট কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভূমিধসের পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার জন্য কারিতাস বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রকল্প শেষ পরবর্তীতে সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ প্রদান করেন। এইরকম কর্মশালা আগামীতে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান করেন।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটির মাধ্যমে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আগাম সতর্কবার্তা প্রদানের ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে গবেষণা, পরামর্শ সভা ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে নতুন ২৭টি বৃষ্টিপরিমাপক যন্ত্র স্থাপনের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।