বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের অবরোধ কার্যত অচল ঢাকা
- আপডেট সময় : ০৫:২৫:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪ ১৮৪ বার পড়া হয়েছে
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের অবরোধ ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ঢাকা। ঢাকার মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, উত্তরার জসীমউদ্দিন মোড়, কুড়িল বিশ্বরোড, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, নতুন বাজার, মেরুল বাড্ডা, বনানী, গাবতলী, মিরপুর রোড, সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর, মোহাম্মদপুর, শনির আখড়া ও সাভারের বিরুলিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে এসব পয়েন্টে অবরোধ শুরু করেন। দুপুর থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবরোধ ফলে মতিঝিল অন্যান্য স্থানের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
অপর দিকে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধের ফলে মহাসড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর সোয়া ১টার দিকে মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাস এলাকায় অবরোধ আন্দোলনকারীরা।
দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেয় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকার প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল অবরোধের ফলে ঢাকার অন্যান্য স্থানের সঙ্গে দুই ঘন্টা বিচ্ছিন্ন থাকে ।
ঢাকা প্রবেশ পথগুলো অবরোধের ফলে কার্যত ঢাকা অচল হয়ে য়ায়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে মুর্হূমুর্হূ স্লোগান দেয়।
জানা গেছে, রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব, ফার্মগেট, টিএসসি, শাহবাগ, মিরপুর, বনানী, উত্তরা, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, শনির আখড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরের আগে থেকেই আন্দোলনে শামিল হন শিক্ষার্থীরা। বাংলানিউজের প্রতিবেদকরা ঢাকার বিভিন্ন স্থানের অবরোধের খবর জানাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
আগের দিন সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোটা সংস্কারপন্থী শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগ। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়।
পরে রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবারের বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মূল কর্মসূচি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীরা আগেই সড়কে নেমেছেন। এর আগে আন্দোলন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও মঙ্গলবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা যুক্ত হন।
দুপুরে রাজধানীর নতুন বাজারে অবস্থান নেওয়া ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা এ তথ্য জানান।
নতুন বাজারে ইউআইইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবরোধ করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ছত্রভঙ্গ করতে যান। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ বাঁধে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। এতে সড়কের একপাশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্য পাশে যান চলাচলে রয়েছে ধীরগতি।
বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোজ্জামেল হক জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে রামপুরা থেকে কুড়িল বিশ্বরোডগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে মেরুল বাড্ডা থেকে রামপুরাগামী সড়কে যান চলাচল আংশিক চালু রয়েছে।
এদিকে রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর, শিয়ালবাড়ি মোড় ও মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকার সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা গাবতলী-মোহাম্মদপুর রাস্তা আটকে রেখেছেন।
রাজধানীর উত্তরা হাউজবিল্ডিং থেকে বিএনএস সেন্টারে পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা এলাকায় যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ সড়ক বন্ধ করায় গাজীপুর থেকে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রযেছে।
রাজধানীর শনির আখড়া, বনানী, ফার্মগেটসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমেছেন।
রাজধানীর মহাখালীতে রেললাইনে রেললাইন অবরোধ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।