বীরগঞ্জে নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
- আপডেট সময় : ০৪:০২:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২৮৬ বার পড়া হয়েছে
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি। আর পচনশীল এইসব পলিথিন যত্রতত্র ফেলে দোয়ায় ড্রেন ও নালা বন্ধ হয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোর সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। জানা গেছে, ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাট-বাজারে,লোকালয়ের দোকানসহ অলিগলির প্রতিটি দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ ঘোষিত পরিবেশ দূষণকারী অবৈধ পলিথিন। যারা ব্যবহারে মানুষের জীবনে মারাত্মক ক্ষতি কলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষরা নিরব থাকায় এই অব্যস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সরকারিভাবে পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে দোদারছে প্রায় সর্বত্রই বিক্রি হচ্ছে এসব ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ। আপলে,কমলা,আগুর,তরতরকারি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী বহনের জন্য বীরগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি হাটবাজারে অবাধ ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পচনশীল এইসব পলিথিন যত্রতত্র ফেলের কারণে পানি মাটি ও বাতাস দূষিত হয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগব্যাধিতে।
এ ছাড়া পানি চলাচলের নালা, নর্দমায়,যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এতে পানি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছোট-বড় ড্রেন ও নালা। জমে থাকা পানিতে ব্যাকটেরিয়াসহ নানা রোগ জীবাণু ছাড়াচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী সহ নানা বয়সী স্থানীয় অধিবাসীরা। ক্রেতাসাধারণদের অনেকটা বাধ্য হয়ে পণ্য সামগ্রী বহনের জন্য পলিথিনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ক্ষতিকারক পলিথিন ব্যবহার বন্ধ না হওয়ায় তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম,পাল্টাপুর, সুজালপুর,নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর, ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে,পাইকারি ও খুচরা দোকানে মাছ,মাংস,সবজি, মসলাসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী পলিথিন ব্যাগে ভরে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতারা পলিথিনের ক্ষতিকারক দিক সর্ম্পকে জেনে বা অজ্ঞাতাসরে তা বহন করছে। অপরদিকে পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা পলিথিনকে নিত্যপণ্য বহনের সহজলভ্য মাধ্যম হিসেবে পেয়ে আইনত দণ্ডনীয় হওয়া সত্ত্বেও পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করছে না। অনেক খুচরা ব্যবসায়ী ও পাইকারি দোকানিকে পলিথিন মজুদ করে রাখতেও দেখা গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন শপিং সেন্টারও নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে।
পরিবেশ সংরক্ষণের স্বর্থে পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। আইন অনুযায়ী পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সর্বনিম্ন শান্তি দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করারও নিধান রয়েছে। কিন্তু আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। ফলে উপজেলায় প্রায় সর্বত্রই ছেয়ে গেছে পরিবেশের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর এ পলিথিন। বীরগঞ্জ দৈনিক বাজারে বাজার খরচ করতে আসা মামুনুর রশীদ বলেন,বাজারের জন্য বাসা থেকে ব্যাগ নিয়ে আসা হয় না। দোকানিরা পণ্যদব্যের সাথে পলিথিন ব্যাগ দেওয়ায় এবং সহজলভ্য হওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে পলিথিন ব্যবহার করতে হয়। দোকানিরা পলিথিন ব্যাগ সরবরাহ না করলে অবশ্যই এর ব্যবহার কমে যেত। এ জন্য আনইের প্রয়োগের অভাব এবং উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা দায়ী করেন তিনি। পলিথিন ব্যবহারের তা ড্রেনসহ যত্রতত্র ফেলার ফলে প্রায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং বর্ষা মৌসুমে ময়লা উপচে পড়ে এলাকাট পরিবেশ নষ্ট করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভার বিভিন্ন আবাসিক এলাকার পাড়া-মহল্লায় দিনের পর দিন পলিথিন বজ্য ফেলা হলেও সংশ্লিষ্টরা তা সরাতে কোনো পদক্ষেপ নেননি। পলিথিন ব্যবহার সচেতনতার সাথে ও যেখানে সেখানে ফেলা ও ব্যবহার না করার পাশাপাশি নির্ধারিত স্থান তৈরিসহ কঠোর নজরদারিতে আনার দাবি জানান তারা। এব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজ কুমার বিশ্বাস জানান,পলিথিন ব্যাগ পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর অবৈধ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।
পলিথিন যত্রতত্র বিক্রেয় করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা শিগগিরই অভিযানে নামবো। একটি নিরাপদ, সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। সড়কসহ আবাসিক এলাকায় ময়লা না ফেলানোর বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।