ঢাকা ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

বুধবার মধ্যরাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বিশেষে প্রতিনিধি

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত লাইসেন্স’র আগ্নেয়াস্ত্র ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোন অস্ত্র জমা দেওয়া না হলে, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে তা অবৈধ অস্ত্রের তালিকায় ওঠবে। সেই অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত থেকে অস্ত্র জমা দেওয়ার সময় পেরিয়ে যাবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ৪ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে অস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহের জন্য বুধবার রাত ১২টা থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এই সভা ছিল আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভা। এ সভায় কীভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করা যায়, সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে কিছু কিছু পদক্ষেপও নিতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজই সব বৈধ এবং অবৈধ অস্ত্র জমাদানের শেষ দিন। আজ বুধবার রাত ১২টা থেকে আমাদের যৌথ বাহিনীর অপারেশন শুরু হবে হাতিয়ার কালেকশনের জন্য, আমরা যেন অবৈধ অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করতে পারি। আমি এ নিয়ে আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। উপদেষ্টা বলেন, মাদক আমাদের বড় সমস্যা। মাদক আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ আমাদের জন্য খুবই জরুরি। এ নিয়ে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। মাদকের গডফাদারদের আমরা আইনের আওতায় আনার জন্যও কাজ করছি।

তিনি বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। পূজা যেন ঠিকভাবে হতে পারে, সে বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা আশা করছি, পূজাটা খুব ভালোভাবে শেষ হবে। কোথাও কোনো সমস্যা হবে না। মিয়ানমার সীমান্ত নিয়ে যে সমস্যা, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছি, তা অনগ্রাউন্ড দেখতে পাবেন।
বলেন, কোনো অভিযান পরিচালনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে গ্রেফতার করতে হবে। পরিচয় গোপন করে কোনো অবস্থাতেই কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ তথ্য জানায়।

পতিত শেখ হাসিনার সরকারের সময় সাদা পোশাকে অনেককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এদের কাউকে কাউকে পরে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও পরে কারও কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এসব হয়রানির কারণে বিভিন্ন সময় দাবি ওঠে, পরোয়ানা বা পরিচয় ছাড়া যেন কাউকে গ্রেফতার করা না হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বুধবার অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে ময়মনসিংহের নান্দাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলে অস্ত্র প্রদর্শন করেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালামের জামাতা জাহিদ হাসানের দেহরক্ষী কামরুজ্জামান। এই অস্ত্রের লাইসেন্স কামরুজ্জামানের নামে। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন আবদুস সালামের মেয়ে (জাহিদের স্ত্রী) ওয়াহিদা ইসলাম। আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি নিজের লাইসেন্সের বিপরীতে নেওয়া অস্ত্র শুধু আত্মরক্ষার জন্য বহন ও ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যের ভীতি বা বিরক্তি তৈরি হতে পারে, এমন ক্ষেত্রে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না। এটা করলে তার অস্ত্রের লাইসেন্স তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলযোগ্য হবে।

এর আগে গত বছরের ২২ মে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে মিছিল করে আলোচনায় আসেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রদর্শিত আগ্নেয়াস্ত্রটি বৈধ। এর লাইসেন্স তৎকালীন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুরের নামে। পুলিশের তরফে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, অস্ত্র প্রদর্শন ও গুলি করে ভয় দেখানো হলে থানা-পুলিশ অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য জেলা প্রশাসনে প্রতিবেদন দেবে। জেলা প্রশাসন লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা নেবে। তবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন তখন এই অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বুধবার মধ্যরাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান

আপডেট সময় : ০৬:৩৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

বিশেষে প্রতিনিধি

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত লাইসেন্স’র আগ্নেয়াস্ত্র ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোন অস্ত্র জমা দেওয়া না হলে, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে তা অবৈধ অস্ত্রের তালিকায় ওঠবে। সেই অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত থেকে অস্ত্র জমা দেওয়ার সময় পেরিয়ে যাবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে ৪ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে অস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহের জন্য বুধবার রাত ১২টা থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এই সভা ছিল আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভা। এ সভায় কীভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করা যায়, সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে কিছু কিছু পদক্ষেপও নিতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আজই সব বৈধ এবং অবৈধ অস্ত্র জমাদানের শেষ দিন। আজ বুধবার রাত ১২টা থেকে আমাদের যৌথ বাহিনীর অপারেশন শুরু হবে হাতিয়ার কালেকশনের জন্য, আমরা যেন অবৈধ অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করতে পারি। আমি এ নিয়ে আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। উপদেষ্টা বলেন, মাদক আমাদের বড় সমস্যা। মাদক আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ আমাদের জন্য খুবই জরুরি। এ নিয়ে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। মাদকের গডফাদারদের আমরা আইনের আওতায় আনার জন্যও কাজ করছি।

তিনি বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। পূজা যেন ঠিকভাবে হতে পারে, সে বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা আশা করছি, পূজাটা খুব ভালোভাবে শেষ হবে। কোথাও কোনো সমস্যা হবে না। মিয়ানমার সীমান্ত নিয়ে যে সমস্যা, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছি, তা অনগ্রাউন্ড দেখতে পাবেন।
বলেন, কোনো অভিযান পরিচালনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে গ্রেফতার করতে হবে। পরিচয় গোপন করে কোনো অবস্থাতেই কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ তথ্য জানায়।

পতিত শেখ হাসিনার সরকারের সময় সাদা পোশাকে অনেককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এদের কাউকে কাউকে পরে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলেও পরে কারও কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এসব হয়রানির কারণে বিভিন্ন সময় দাবি ওঠে, পরোয়ানা বা পরিচয় ছাড়া যেন কাউকে গ্রেফতার করা না হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বুধবার অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে ময়মনসিংহের নান্দাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলে অস্ত্র প্রদর্শন করেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালামের জামাতা জাহিদ হাসানের দেহরক্ষী কামরুজ্জামান। এই অস্ত্রের লাইসেন্স কামরুজ্জামানের নামে। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন আবদুস সালামের মেয়ে (জাহিদের স্ত্রী) ওয়াহিদা ইসলাম। আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি নিজের লাইসেন্সের বিপরীতে নেওয়া অস্ত্র শুধু আত্মরক্ষার জন্য বহন ও ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যের ভীতি বা বিরক্তি তৈরি হতে পারে, এমন ক্ষেত্রে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না। এটা করলে তার অস্ত্রের লাইসেন্স তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলযোগ্য হবে।

এর আগে গত বছরের ২২ মে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে প্রকাশ্যে পিস্তল হাতে মিছিল করে আলোচনায় আসেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রদর্শিত আগ্নেয়াস্ত্রটি বৈধ। এর লাইসেন্স তৎকালীন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুরের নামে। পুলিশের তরফে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, অস্ত্র প্রদর্শন ও গুলি করে ভয় দেখানো হলে থানা-পুলিশ অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য জেলা প্রশাসনে প্রতিবেদন দেবে। জেলা প্রশাসন লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা নেবে। তবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন তখন এই অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেনি।