ভাণ্ডারিয়ায় চুরির প্রতিবাদ করায় কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ১

- আপডেট সময় : ৯২ বার পড়া হয়েছে
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় নারিকেল চুরির ঘটনা নিয়ে বিরোধে মো. রেজাউল করিম ঝন্টু (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষেরা।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ভিটাবাড়িয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত রেজাউল করিম ঝন্টু ভিটাবাড়িয়া গ্রামের শিয়ালকাঠি গ্রামের আইউব আলীর খলিফার ছেলে। সে স্থানীয় ভিটাবাড়িয়া ওয়ার্ড বিনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সে দুই সন্তানের জনক।
ঘটনার ৬ ঘন্টা পরে এলাকাবাসী ঘাতক রুবেল খান (৩৫) কে তার ছোট ভাই সানি খানের বসতঘর থেকে আটক করে। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এলাকাবাসী তার ছোট ভাই সানি খানের ঘর থেকে তাকে আটক করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত হত্যাকারি রুবেলকে গণপিটুনি দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা হস্তক্ষেপ করে। পুলিশ খবর পেয়ে জনতার কবল হতে তাকে উদ্ধার করে গ্রেফতার করে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, ভাণ্ডারিয়া উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠী গ্রামের আব্দুল হালিম প্রফেসরের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪৫টি নারিকেল চুরি করে নেয় একই এলাকার মজিবুর খানের ছেলে রুবেল খান।
ঘটনাটি ওই রাতেই হালিম প্রফেসরের ছেলে মাসুদ থানায় অভিযোগ দেন। তিনি তার নিকট আত্মীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ঝন্টুকেও নারিকেল চুরির বিষয়টি জানায়। বিএনপি নেতা ঝন্টু ওই রাতেই রুবেলকে নারিকেল মালিককে ফিরিয়ে দিতে বলে। রুবেল ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্টো অভিযুক্ত রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে ঝন্টু দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ঝন্টু নারিকেলের মালিক মাসুদদের বাড়ির সামনে গেলে অভিযুক্ত রুবেল তাকে গালিগালাজ করে। একপর্যায় বিএনপি নেতা ঝন্টু এর পরিতবাদ জানালে রুবেলের সাথে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আঘাত করে। এতে সে মারাত্মক জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় নিহত বিএনপি নেতার পরিবাওে শোকের মাতোম চলছে।
নিহতের ছেলে তানভীর হাসান রাকিন বলেন, রুবেল দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল। এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ তুললেও কেউ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। আমার বাবা প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে আমার বাবাকে হত্যা করেছে, সেই রুবেলের ফাঁসি হোক।
নিহতের শোকার্ত মা রিজিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলে নাস্তা না খেয়ে ঘর থেকে বেড় হয়ে রাস্তায় যাওয়ার সময় পথে মধ্যে মাসুদের বাড়িতে যায়। এসময় ওৎ পেতে থাকা রুবেল আমার ছেলেকে কুপি হত্যা করে। আমি আমার ছেলে হত্যার কঠোর বিচার চাই।
ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: খায়রুল বাশার জানান, সকালে রেজাউল করিম ঝন্টু নামের এক ব্যাক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর আঘাত রয়েছে।
এ ব্যাপারে ভাণ্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, রেজাউল করিম ঝন্টুর লাশ হাসপাতাল হতে উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতর পরিবারের পক্ষ হতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।