ভারতে ধর্ষণকান্ডের প্রতিবাদে ঢাকায় শেকল ভাঙার পদযাত্রা
- আপডেট সময় : ১২:০৩:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪ ১১৫ বার পড়া হয়েছে
ভারতের কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নারীদের রাত দখল কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঢাকায় ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’ করছেন বাংলাদেশের নারীরা।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের নেতৃত্বে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে গণপদযাত্রাটি শুরু হয়। ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের বিচারের দাবিতে এই প্রতিবাদ পদযাত্রা। এই পদযাত্রায় পুরুষদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, নারীদের অংশগ্রহণে পদযাত্রাটি সংসদ ভবন অভিমুখে রওনা দিয়েছে। শাহবাগ থেকে সিটি কলেজ, কলাবাগান হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউ যায়। সমাবেশ এবং প্রতিবাদী অবস্থান নেন নারীরা।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার পর জাতীয় জাদুঘরের সামনে নারীরা একত্রিত হতে থাকেন। জড়ো হওয়া অনেকে সেখানে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড লেখেন।
পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে, পুরুষের ক্ষমতা ভেঙে হোক সমতা, আইনসিদ্ধ নিপীড়ন বন্ধ হোক, বম নারীদের নিপীড়ন বন্ধ করো, স্টপ স্টেট প্রডিউসড ভায়োলেন্স, বিত্তবানদের অপরাধ লুকানো বন্ধ করো, রক্ত দিলো জনতা এবার চাই সমতা, ঘুম ভাঙানি মাসি পিসি চলো পুরুষতন্ত্র পিষি, হাতে হাতে মশাল জ্বালো নারী তুমি কথা বলো ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এ সময় তাদের হাতে ছিল মশাল।
ধর্ষণ-যৌন সহিংসতার সঙ্গে যুক্তদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক ও ন্যায্য শাস্তি নিশ্চিত এবং ধর্মীয় বক্তব্যের নামে অনলাইনে ও অফলাইনে নারী অবমাননাকর বক্তব্য প্রচার বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ ১৩টি দাবি তুলে ধরা হয়।
সায়েম সোবহান আনভীর, শাফাত আহমেদের মতো শিল্পপতি-ধনকুবেরদের নারী নিপীড়নমূলক অপরাধ বিচারের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে অন্যায্যভাবে খারিজ হয়ে যাওয়া মামলাগুলো পুনঃতদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে।
ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (সংশোধিত) এর ১৪৬ (৩) ধারা পুনঃসংস্কার করার মাধ্যমে আইনের দিক সহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লৈঙ্গিক পরিচয় নির্বিশেষে যৌন সহিংসতার ক্ষেত্রে যেকোনোভাবেই ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ (দোষারোপ করা/নিন্দা জানানো) বন্ধ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদন্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনি ও সামাজিকভাবে ধর্ষণের সংজ্ঞায়ন সংস্কার করতে হবে।
মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।
সেনা প্রহরার পাহাড়ে নারীর ওপর সংঘটিত সামরিক-বেসামরিক পুরুষদের যৌন সন্ত্রাসের খবর সংবাদমাধ্যমে আসার অবাধ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা, অভিযোগ যথাযথভাবে আমলে নেওয়া ও সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে পাহাড়ে নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর ও পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। সিডো সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।
যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে প্রান্তিক অঞ্চলের নারীদের সুবিধার্থে হটলাইন চালু করতে হবে। গ্রামীণ সালিশ/পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।