ভারতে বসে হাসিনার বিবৃতি স্বস্তির নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

- আপডেট সময় : ০৯:০৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪ ৩১৬ বার পড়া হয়েছে
সরকারের পতনের পর ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা সেখান থেকে যে বিবৃতি দিচ্ছেন যা স্বস্তির নয়। বিষয়টি ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জানানো হয়েছে। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসব কথা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন হাসিনা।
তিনি সেখান বসে বিবৃতি দিচ্ছেন, যা কিনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য মেটেই স্বস্তির নয়। এটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য অন্তরায়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি ভারত থেকে বক্তব্য দিতে থাকেন, তবে সেটি দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বুধবার (১৪ আগস্ট) ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে দেখা করার পরে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কী আলাপ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলেছি শেখ হাসিনার বক্তব্য সম্পর্কোন্নয়নে সহায়ক হবে না। এটি আমি ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছি। কারণ এটি সরকারের অবস্থান।
জবাবে কী বলেছেন জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এটির জবাব উনি কীভাবে দেবেন। এখানে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে কি পারবেন? এটি তিনি পারেন না। উনি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেন না বলেই আমি মনে করি। কারণ এই কাজটি আমি করে এসেছি। আমি জানি রাষ্ট্রদূতের পক্ষে এই জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। এটি সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উনি যেটি করতে পারেন সেটি হলো এবং আমি নিশ্চিত তিনি তার পররাষ্ট্র দফতরকে জানাবেন।
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এই আলোচনা কেন হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই আলোচনার প্রেক্ষাপট হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বক্তব্য এসেছে, সেটি আসলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য স্বস্তিকর হচ্ছে না। আমরা চাই তিনি যেন ভারতে বসে এটি না করেন।
ভারতের মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ভারতের মিডিয়া যা করছে সেটি শত্রুভাবাপন্ন কার্যক্রম এটি আমি বলছি না। কিন্তু এটি আসলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অন্তরায়।
উপদেষ্টা বলেন, আমি বলেছি এখানে কিছু ঘটনা ঘটেছে এবং সেটির তদন্ত আমরা করছি। আমরা খবর নিয়েছি। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা হিন্দু সম্প্রদায় এবং অন্য সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আমরা চাই যাতে সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে পারে। কারও ওপর হামলা এই সরকার বরদাস্ত করবে না।
যেটা হয়েছে, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সবগুলোর তদন্ত করে যাকে দোষী পাওয়া যাবে তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। এটি আমি তাকে বলেছি এবং বলেছি যে দুর্ভাগ্যবশত ভারতের মিডিয়া এটিকে অত্যন্ত বাড়িয়ে বলছে। তারা একটি খারাপ পরিবেশ তৈরি করছে। এটি করা উচিত নয়।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জনগণমুখী হতে হবে। সরকার এবং সরকারের মধ্যে শুধু সম্পর্ক, মানুষের কোনও ভূমিকা থাকবে না, মানুষ সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট হলো, এসব বিষয়ে আমি তাকে বলেছি যে কিছু সমস্যা আছে এবং সেটি দূর করতে হবে। মানুষ যেন ভালো বোধ করে। মানুষ যেন মনে করে তারা বন্ধু। শুধু সরকার মনে করলে হবে না, বলেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং রাষ্ট্রদূত সেটি ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেছিলেন। আমি বলেছি যে এই ইস্যু যদি দুইপক্ষ চাই, তাহলে আমরা বন্ধ করতে পারি বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, তিস্তার কথা আমি বলেছি যে পানি কম আছে আমি জানি। এমনকি এক দেশের জন্য যা প্রয়োজন সেটিও নাই। কিন্তু আছে তো। দেখা যায় দুই পাড়েই খাল যাচ্ছে এবং সেচ হচ্ছে, আর মাঝখানে বাংলাদেশ শুকনো। উপর থেকে ছবি নিলে আপনি দেখতে পারবেন। আমি বলেছি পানি কম আছে, কিন্তু আছে তো। একশত কিউসেক পানি যদি থাকে, আপনারা ৩০ কিউসেক পানি আমাদের দিতে পারেন না, আমি এই শব্দটি ব্যবহার করেছি।