ভারত নির্ভরতা কাটিয়ে তিন দেশ থেকে আসছে পেঁয়াজ, কমছে দাম
- আপডেট সময় : ০২:০৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪ ১০০ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে চায়না থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৫৫, মিশরের পেঁয়াজ ৭০, পাকিস্তানের পেঁয়াজ ৭৫ এবং ভারতের পেঁয়াজ ৯২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে
চোরাই পথেও ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার কথা জানান ব্যবসায়ীরা
বরাবরই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির একটা মানুষিকতা তৈরি হয়েছিলো। সম্প্রতি শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর, ভারতের পরিবর্তে মিশর, চায়না এবং পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯২ টাকা, চায়না পেঁয়াজ ৫৫, মিশর থেকে আসা পেঁয়াজ ৭০ এবং পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে সব সময় ভারতনির্ভর বাংলাদেশ। অনেক ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর পাশাপাশি ট্যাক্স নির্ধরণ করে। কোন রকম পূর্বাভাস ছাড়াই ইচ্ছে মফিক পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।
বাংলাদেশে হুট হাট পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ না করার বিষয়টি বাংলাদেশের তরফে ভারতকে বার বার অনুরোধ হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেওয়া নেয়নি বলে জানা যায়।
অথচ পেঁয়াজ রপ্তানির করতে ভারতে নাসিকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় কৃষকরা।
বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড এবং মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাজারে। দেশে ভোগ্যপণ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে বড় ব্যবসায়ীরা এলসি খোলা বন্ধ করে দিলে ছোট আমদানিকারকরা পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড এবং মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলেন।
৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর পরই ওইসব দেশের পেঁয়াজের চালান চট্টগ্রাম বন্দরে চলে আসে। এরই মধ্যে বন্দর থেকে খালাসের পর পেঁয়াজ বাজারে ছেড়েছেন। এতে দাম কমতে শুরু করেছে। খাতুনগঞ্জের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে পেঁয়াজের দাম।
দেশে ভোগ্যপণ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই। এ বাজার থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ আশপাশের জেলা-উপজেলায় ভোগ্যপণ্য সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে এর প্রভাব পড়ে চট্টগ্রামজুড়ে। দাম বাড়লে দ্রুত খুচরা বাজারে হু হু করে দাম বেড়ে যায়। সেই পণ্যের দাম কমলে এর প্রভাব পড়ে ধীরে ধীরে।
কাস্টম সূত্র বলছে, চলতি মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা ২ হাজার ৮৩২ টন পেঁয়াজ শুল্কায়ন ও খালাস হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আসা ১ হাজার ৯৩৩ টন, চায়না থেকে ৫৮০ টন, মিশর থেকে ৩১৪ টন এবং থাইল্যান্ড থেকে আসা ৫ টন পেঁয়াজ এসেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে চায়না ও মিশর থেকে আসা পেঁয়াজের সাইজ বড়। চায়না পেঁয়াজ কেজিতে ৭-১০টি ধরে, একইভাবে মিশরীয় পেঁয়াজ ধরে ১০-১৪টি। খুচরা বাজারে বড় সাইজের পেঁয়াজের চাহিদা কম। পাকিস্তানি পেঁয়াজ ভারতীয় পেঁয়াজের কিছুটা কাছাকাছি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, ঢাকা মহানগরীর খুচরা বাজারগুলোতে বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ১১০-১১৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও এসব পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি ছিল। একইভাবে এক মাস আগে দেশি এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ছিল ১০৫-১২০ টাকা।