ঢাকা ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষে মুক্তাগাছায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান Logo স্ত্রীর ধোঁকায় যুবকের আত্মহনন Logo শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo রাজবাড়ীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন Logo মাছরাঙা টেলিভিশনের বান্দরবানে ১৪তম বর্ষপূর্তি উদযাপন Logo ভাণ্ডারিয়ায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট বিতরণ Logo নগরকান্দা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo কমিউনিটিভিত্তিক মডেলে মাঠ ও পার্ক ব্যবস্থাপনা করবে ডিএনসিসি Logo দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক ২ জেলা প্রশাসকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান Logo শিবগঞ্জে নদীগর্ভে প্রায় ৮০টি বাড়ি, ঝুকিতে শতাধিক পরিবার

মর্গ্যান স্কুলের দুর্নীতির তদন্তে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর, ৬ শিক্ষকের নামে মামলা

এ এইচ ইমরান
  • আপডেট সময় : ৩৩৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ মর্গ্যান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দুর্নীতির তদন্তে করতে যাওয়া জেলা প্রশাসনের তদন্ত কর্মকর্তা  ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রবাসী কল্যাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা শাখার কম্পিউটার অপারেটর মো. হোসেন আহমেদ বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজী শিক্ষক আবদুল বাতেন, সহকারী গণিত শিক্ষক বিনোধ কুমার দেবনাথ, সহকারী রসায়ন শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম, সহকারী বাংলা শিক্ষক কামরুজ্জামান, সহকারী ইংরেজী শিক্ষক হায়াৎ মাহমুদ, সহকারী ইসলাম শিক্ষক আতিকুর রহমানকে এবং অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জনকে আসামী করে মামলাটি রুজু করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ অগাস্টের পর সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারকে জোরপূর্বক বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়ে শিক্ষকদের একটি গ্রুপ বিদ্যালয়ের দখল নেয়। এরপর থেকে শিক্ষকদের এই চক্রটি বিদ্যালয়ে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছিল। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় গুলো শিক্ষকদের আরেকটি অংশ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে জানান। পরে জেলা প্রশাসক  রাসেদুল কবির নামে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন তদন্ত করার জন্য। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে নোটিশ পাঠিয়ে জানান তদন্তে যাওয়ার বিষয়টি।
এদিকে গত ২৯ মে স্কুলে যান জেলা প্রশাসনের তদন্তকারী টিম। সেখানে একটি সভা করতে আগে থেকে নোটিশ করা হয়। তদন্তকারী দলটি বিদ্যালয়ে পৌছানোর পর উল্লেখিত ৬ শিক্ষক ম্যাজিস্ট্রেটকে ভুয়া বলে নানান কূটউক্তি করে মারধর শুরু   করে সরকারী কাজে বাধা প্রদান করেন।  দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট নিজের পরিচয় দেওয়ার পরেও তার উপর হামলা করে শিক্ষকরা। পরে তিনি আত্ন্যরক্ষার্থে ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ নুসরাত রেবেকার কক্ষে যান। সেখানে শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা  নাজমুন নাহার বসা ছিলেন আগের থেকেই। তখন অধ্যক্ষকে সভার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নোটিশ পায়নি বলে জানান। কিন্তু পরক্ষণে অধ্যক্ষের মোবাইল চেক করে নোটিশের সত্যতা পায় তদন্ত কর্মকর্তা। তখন ম্যাজিস্ট্রেট সভা আয়োজনের জন্য পরিস্থিতি বুঝতে শ্রেণি কক্ষে পরিদর্শন করেন। ওই সময়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। পরে নিচে নামার সময়ে ৬ শিক্ষক তার উপর হামলা করে।
তাদের সঙ্গে প্রাজ্ঞন শিক্ষার্থীরা সহ আরো ২০ থেকে ২৫ জন মিলে এই হামলা করে বলে বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়। হামলার সময়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে কিল ঘুষি মারা হয়। এছাড়া অব্যাহত হুমকি দিতে থাকে। প্রায় বেশ কিছুক্ষণ ধরে বহিরাগতদের নিয়ে দফায় দফায় চলে আক্রমন ও হামলা। পরে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালেও শুরুতে পরিস্থিতি শান্ত করতে ব্যর্থ হয়। পুলিশ বার বার অনুরোধ করলেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কক্ষে ফিরে যায়নি। এক পর্যায়ে সদর থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বলেন, যারাই ম্যাজিস্ট্রেটের গায়ে হাত দিয়ে সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মর্গ্যান স্কুলের দুর্নীতির তদন্তে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর, ৬ শিক্ষকের নামে মামলা

আপডেট সময় :
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ মর্গ্যান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দুর্নীতির তদন্তে করতে যাওয়া জেলা প্রশাসনের তদন্ত কর্মকর্তা  ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের প্রবাসী কল্যাণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা শাখার কম্পিউটার অপারেটর মো. হোসেন আহমেদ বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিদ্যালয়ের সহকারী ইংরেজী শিক্ষক আবদুল বাতেন, সহকারী গণিত শিক্ষক বিনোধ কুমার দেবনাথ, সহকারী রসায়ন শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম, সহকারী বাংলা শিক্ষক কামরুজ্জামান, সহকারী ইংরেজী শিক্ষক হায়াৎ মাহমুদ, সহকারী ইসলাম শিক্ষক আতিকুর রহমানকে এবং অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জনকে আসামী করে মামলাটি রুজু করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ অগাস্টের পর সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারকে জোরপূর্বক বিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়ে শিক্ষকদের একটি গ্রুপ বিদ্যালয়ের দখল নেয়। এরপর থেকে শিক্ষকদের এই চক্রটি বিদ্যালয়ে নানান অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছিল। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় গুলো শিক্ষকদের আরেকটি অংশ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে জানান। পরে জেলা প্রশাসক  রাসেদুল কবির নামে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেন তদন্ত করার জন্য। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে নোটিশ পাঠিয়ে জানান তদন্তে যাওয়ার বিষয়টি।
এদিকে গত ২৯ মে স্কুলে যান জেলা প্রশাসনের তদন্তকারী টিম। সেখানে একটি সভা করতে আগে থেকে নোটিশ করা হয়। তদন্তকারী দলটি বিদ্যালয়ে পৌছানোর পর উল্লেখিত ৬ শিক্ষক ম্যাজিস্ট্রেটকে ভুয়া বলে নানান কূটউক্তি করে মারধর শুরু   করে সরকারী কাজে বাধা প্রদান করেন।  দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট নিজের পরিচয় দেওয়ার পরেও তার উপর হামলা করে শিক্ষকরা। পরে তিনি আত্ন্যরক্ষার্থে ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষ নুসরাত রেবেকার কক্ষে যান। সেখানে শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা  নাজমুন নাহার বসা ছিলেন আগের থেকেই। তখন অধ্যক্ষকে সভার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নোটিশ পায়নি বলে জানান। কিন্তু পরক্ষণে অধ্যক্ষের মোবাইল চেক করে নোটিশের সত্যতা পায় তদন্ত কর্মকর্তা। তখন ম্যাজিস্ট্রেট সভা আয়োজনের জন্য পরিস্থিতি বুঝতে শ্রেণি কক্ষে পরিদর্শন করেন। ওই সময়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। পরে নিচে নামার সময়ে ৬ শিক্ষক তার উপর হামলা করে।
তাদের সঙ্গে প্রাজ্ঞন শিক্ষার্থীরা সহ আরো ২০ থেকে ২৫ জন মিলে এই হামলা করে বলে বাদীর অভিযোগ থেকে জানা যায়। হামলার সময়ে ম্যাজিস্ট্রেটকে কিল ঘুষি মারা হয়। এছাড়া অব্যাহত হুমকি দিতে থাকে। প্রায় বেশ কিছুক্ষণ ধরে বহিরাগতদের নিয়ে দফায় দফায় চলে আক্রমন ও হামলা। পরে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালেও শুরুতে পরিস্থিতি শান্ত করতে ব্যর্থ হয়। পুলিশ বার বার অনুরোধ করলেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কক্ষে ফিরে যায়নি। এক পর্যায়ে সদর থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বলেন, যারাই ম্যাজিস্ট্রেটের গায়ে হাত দিয়ে সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।