ঢাকা ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

মারপ্যাঁচে জুলাই সনদ!

মহিউদ্দিন তুষার
  • আপডেট সময় : ৩৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বহুল আলোচিত ও প্রত্যাশিত জুলাই সনদ-এর চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনসহ নাগরিক সমাজে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনার শুরু থেকে এই সনদকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সুশাসন ও রাজনৈতিক সংস্কারের রূপরেখা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত প্রস্তাব প্রকাশের পর দেখা যায়, আলোচনার সময় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাদ পড়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সনদ প্রণয়ন কমিটির কয়েকজন সদস্য ও সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা। তারা অভিযোগ করছেন, মূল লক্ষ্য ও চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিবর্তন এনে এই সনদকে অধূরো ও প্রশাসনিকভাবে নিয়ন্ত্রিত নথিতে পরিণত করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চূড়ান্ত সংস্করণে যেসব প্রস্তাব বাদ পড়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনঃপ্রবর্তন। আলোচনার সময় অধিকাংশ সদস্যই নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক বা সমমানের একটি সাংবিধানিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত প্রস্তাবে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বাদ পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়ন ও হিসাব প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা, ডিজিটাল সুরক্ষা আইন সংশোধন, এবং স্থানীয় সরকারে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি। এসব প্রস্তাব বাদ পড়ার ঘটনায় সদস্যদের একাংশ আনুষ্ঠানিকভাবে নোট অব ডিসেন্ট জমা দিয়েছেন, যা ভবিষ্যতের জন্য নথিভুক্ত রাখা হয়েছে বলে সনদের খসড়া কমিটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুলাই সনদের মাধ্যমে আমরা যে নতুন রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা শেষ পর্যন্ত কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থেকে গেল। কিছু প্রস্তাব এমনভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, যেন আসল সমস্যাগুলোকেই পাশ কাটানো হয়। অন্যদিকে, সনদের সম্পাদকীয় বোর্ডের এক সিনিয়র সদস্য দাবি করেছেন, বাদ পড়া প্রস্তাবগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তার ভাষায়, আমরা যে রাষ্ট্র কাঠামোয় আছি, সেখানে কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয় তা সবাই জানেন। আমরা বাস্তবায়নযোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো রেখেছি। এতে কেউ ভিন্নমত পোষণ করলে সেটাও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ।
তবে সমালোচকরা বলছেন, বাস্তবতার সীমাবদ্ধতা নামের অজুহাতে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রস্তাবগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করা হয়েছে। ফলে জুলাই সনদ এখন রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির পরিবর্তে প্রশাসনিক নীতিপত্রের মতো হয়ে উঠেছে। জুলাই সনদ নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছিল জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে, যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, নাগরিক সংগঠন, শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী নেতারা অংশ নেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল—এই সনদ হবে একটি জাতীয় ঐকমত্যের নথি, যেখানে আগামী নির্বাচনের আগে-পরে ক্ষমতার ভারসাম্য, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি, এবং নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের স্পষ্ট রূপরেখা থাকবে।
কিন্তু চূড়ান্ত সংস্করণে সেসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না থাকায় অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন। বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের মূল লক্ষ্য ছিল ভবিষ্যতের জন্য একটি সুশাসনের ভিত্তি তৈরি করা। কিন্তু প্রস্তাবগুলো বাদ দেওয়ার মাধ্যমে সেটি এখন কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় পরিণত হয়েছে। এতে জনগণের আস্থা অর্জন করা কঠিন হবে।
কমিটির কয়েকজন সদস্যের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। রাজনীতিতে এমন নোট সাধারণত তখনই আসে, যখন নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় গুরুতর মতবিরোধ তৈরি হয়। ইতিহাসে দেখা গেছে, কোনো দল বা সংগঠনের অভ্যন্তরে এমন ডিসেন্ট নোট পরবর্তীতে বড় ধরনের রাজনৈতিক বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। াজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জুলাই সনদের ভেতরকার এই মতবিরোধ ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন জোট বা বিকল্প প্রক্রিয়া গঠনের সম্ভাবনাও সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা এই সনদকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ঘোষণাপত্র হিসেবে দেখেছিলেন, তারা হয়তো আলাদা উদ্যোগ নিতে পারেন।
সনদের মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা কোনো মতভেদকে নেতিবাচকভাবে দেখি না। এই প্রক্রিয়াটি চলমান। নোট অব ডিসেন্টকেও আমরা ভবিষ্যতের আলোচনায় গুরুত্ব দেব। তিনি আরও জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে সনদের প্রয়োগ পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে, যেখানে প্রস্তাবিত ধাপ ও বাস্তবায়ন সূচি যুক্ত থাকবে। অন্যদিকে, বাদ পড়া প্রস্তাবগুলোর দাবিদার সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা পৃথকভাবে একটি জনসনদ তৈরির পরিকল্পনা করছেন, যেখানে জনগণের প্রত্যাশা ও অধিকারকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জুলাই সনদের এই বিতর্ক একদিকে যেমন আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, তেমনি অন্যদিকে এটি গণতান্ত্রিক পরিসরে নতুন আলোচনারও সূচনা করেছে। কারণ, মতবিরোধ প্রকাশের সুযোগই গণতন্ত্রের প্রাণ। তবে সেই মতবিরোধ যদি মূল চেতনা থেকে বিচ্যুতি ঘটায়, তাহলে তা বিভাজন তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, সাধারণ জনগণের প্রশ্ন—এই সনদ বাস্তবে তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনবে কি না। কারণ অতীতে অনেক সনদ ও ঘোষণাই কাগজে সীমাবদ্ধ থেকেছে। বশ্লেষকরা বলছেন, জুলাই সনদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এর বাস্তবায়নের ওপর। যদি কমিটি নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশ করে, তাহলে এটি সত্যিকার অর্থেই জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন হতে পারে। অন্যথায়, এটি যোগ হবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের আরেকটি ব্যর্থ সংস্কার প্রচেষ্টার তালিকায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মারপ্যাঁচে জুলাই সনদ!

আপডেট সময় :

বহুল আলোচিত ও প্রত্যাশিত জুলাই সনদ-এর চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনসহ নাগরিক সমাজে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনার শুরু থেকে এই সনদকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, সুশাসন ও রাজনৈতিক সংস্কারের রূপরেখা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত প্রস্তাব প্রকাশের পর দেখা যায়, আলোচনার সময় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাদ পড়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সনদ প্রণয়ন কমিটির কয়েকজন সদস্য ও সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা। তারা অভিযোগ করছেন, মূল লক্ষ্য ও চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিবর্তন এনে এই সনদকে অধূরো ও প্রশাসনিকভাবে নিয়ন্ত্রিত নথিতে পরিণত করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চূড়ান্ত সংস্করণে যেসব প্রস্তাব বাদ পড়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনঃপ্রবর্তন। আলোচনার সময় অধিকাংশ সদস্যই নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক বা সমমানের একটি সাংবিধানিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত প্রস্তাবে বিষয়টি রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বাদ পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়ন ও হিসাব প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা, ডিজিটাল সুরক্ষা আইন সংশোধন, এবং স্থানীয় সরকারে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি। এসব প্রস্তাব বাদ পড়ার ঘটনায় সদস্যদের একাংশ আনুষ্ঠানিকভাবে নোট অব ডিসেন্ট জমা দিয়েছেন, যা ভবিষ্যতের জন্য নথিভুক্ত রাখা হয়েছে বলে সনদের খসড়া কমিটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুলাই সনদের মাধ্যমে আমরা যে নতুন রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা শেষ পর্যন্ত কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থেকে গেল। কিছু প্রস্তাব এমনভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, যেন আসল সমস্যাগুলোকেই পাশ কাটানো হয়। অন্যদিকে, সনদের সম্পাদকীয় বোর্ডের এক সিনিয়র সদস্য দাবি করেছেন, বাদ পড়া প্রস্তাবগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তার ভাষায়, আমরা যে রাষ্ট্র কাঠামোয় আছি, সেখানে কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয় তা সবাই জানেন। আমরা বাস্তবায়নযোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো রেখেছি। এতে কেউ ভিন্নমত পোষণ করলে সেটাও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ।
তবে সমালোচকরা বলছেন, বাস্তবতার সীমাবদ্ধতা নামের অজুহাতে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রস্তাবগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করা হয়েছে। ফলে জুলাই সনদ এখন রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির পরিবর্তে প্রশাসনিক নীতিপত্রের মতো হয়ে উঠেছে। জুলাই সনদ নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছিল জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে, যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, নাগরিক সংগঠন, শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবী নেতারা অংশ নেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল—এই সনদ হবে একটি জাতীয় ঐকমত্যের নথি, যেখানে আগামী নির্বাচনের আগে-পরে ক্ষমতার ভারসাম্য, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি, এবং নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের স্পষ্ট রূপরেখা থাকবে।
কিন্তু চূড়ান্ত সংস্করণে সেসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না থাকায় অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন। বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের মূল লক্ষ্য ছিল ভবিষ্যতের জন্য একটি সুশাসনের ভিত্তি তৈরি করা। কিন্তু প্রস্তাবগুলো বাদ দেওয়ার মাধ্যমে সেটি এখন কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় পরিণত হয়েছে। এতে জনগণের আস্থা অর্জন করা কঠিন হবে।
কমিটির কয়েকজন সদস্যের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। রাজনীতিতে এমন নোট সাধারণত তখনই আসে, যখন নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় গুরুতর মতবিরোধ তৈরি হয়। ইতিহাসে দেখা গেছে, কোনো দল বা সংগঠনের অভ্যন্তরে এমন ডিসেন্ট নোট পরবর্তীতে বড় ধরনের রাজনৈতিক বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। াজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জুলাই সনদের ভেতরকার এই মতবিরোধ ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন জোট বা বিকল্প প্রক্রিয়া গঠনের সম্ভাবনাও সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা এই সনদকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ঘোষণাপত্র হিসেবে দেখেছিলেন, তারা হয়তো আলাদা উদ্যোগ নিতে পারেন।
সনদের মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা কোনো মতভেদকে নেতিবাচকভাবে দেখি না। এই প্রক্রিয়াটি চলমান। নোট অব ডিসেন্টকেও আমরা ভবিষ্যতের আলোচনায় গুরুত্ব দেব। তিনি আরও জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে সনদের প্রয়োগ পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে, যেখানে প্রস্তাবিত ধাপ ও বাস্তবায়ন সূচি যুক্ত থাকবে। অন্যদিকে, বাদ পড়া প্রস্তাবগুলোর দাবিদার সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা পৃথকভাবে একটি জনসনদ তৈরির পরিকল্পনা করছেন, যেখানে জনগণের প্রত্যাশা ও অধিকারকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জুলাই সনদের এই বিতর্ক একদিকে যেমন আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, তেমনি অন্যদিকে এটি গণতান্ত্রিক পরিসরে নতুন আলোচনারও সূচনা করেছে। কারণ, মতবিরোধ প্রকাশের সুযোগই গণতন্ত্রের প্রাণ। তবে সেই মতবিরোধ যদি মূল চেতনা থেকে বিচ্যুতি ঘটায়, তাহলে তা বিভাজন তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, সাধারণ জনগণের প্রশ্ন—এই সনদ বাস্তবে তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনবে কি না। কারণ অতীতে অনেক সনদ ও ঘোষণাই কাগজে সীমাবদ্ধ থেকেছে। বশ্লেষকরা বলছেন, জুলাই সনদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এর বাস্তবায়নের ওপর। যদি কমিটি নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশ করে, তাহলে এটি সত্যিকার অর্থেই জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন হতে পারে। অন্যথায়, এটি যোগ হবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের আরেকটি ব্যর্থ সংস্কার প্রচেষ্টার তালিকায়।