ঢাকা ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কালিগঞ্জে নিরাপদ সড়ক দিবসে র‍্যালি ও আলোচনা সভা Logo মোংলায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন Logo কক্সবাজারে পর্যটক নিরাপত্তায় রিজিয়ন ট্যুরিস্ট পুলিশের এডিআইজি আপেল মাহমুদ Logo সিরাজদিখানে গ্রাম পুলিশের মাঝে পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ Logo কালিগঞ্জে মাংসের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালত Logo পলাশবাড়ী পৌরসভার বহুমুখী উন্নয়নে কাস্টার ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান শীর্ষক দিনব্যাপি কর্মশালা Logo টেকনাফে পাহাড়ের পর সাগর পথে পাচার কালে ২৯ জন ভুক্তভোগী সহ মানব পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য আটক Logo তিতাসে বিএনপির লিপলেট বিতরণ Logo গোমস্তাপুরে জোরপূর্বক ধানীজমি দখলের চেষ্টা Logo কিশোরগঞ্জে রেলের গাছ কেটে বিক্রি করলেন কর্মচারীরা

মুক্তাগাছায় ধানক্ষেত থেকে মৃত মায়ের লাশ এনে কবর দেয়ার ঘটনায় সন্তানদের নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন!

রিপন সারওয়ার, মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৬৪৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

মৃত্যুর একদিন পর ধান ক্ষেত থেকে করফুল নেছা (৯৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ এনে কবর দেয়ার ঘটনায় গুঞ্জন উঠেছে। ঘটনায় থানা পুলিশ মো: সুরুজ আলী (৬৫) ও মো: চাঁন মিয়া (৬৩) নামে তার দুই পুত্রকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের দেয়া সংবাদের প্রেক্ষিতে ইউডি মামলা এবং কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছে। রবিবার ৯ মার্চ মুক্তাগাছা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ আদালতে এ আবেদন করা হয়।

 

ঘটনাস্থল মুক্তাগাছা উপজেলার বাঁশাটি ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া দক্ষিণ পাড়া এলাকায় গিয়ে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে দেনদরবার করে বৃদ্ধার পুত্রদয় তাকে এক সপ্তাহ করে ভরণ পোষনের দায়িত্ব নেয়। তাদের ঘর থেকে দূরবর্তী গোয়াল ঘরের পাশে পলিথিনে মোড়ানো একটি ঝুপড়িতে তারা তাদের মাকে রাখে। গত ৬ মার্চ শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী গোয়াড়ি গ্রামে পিত্রালয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হোন। রাত পেড়িয়ে পরদিন ৭ মার্চ শনিবার বেলা ১১টায় পথিমধ্যে মরাখালি বিল এলাকার ধানক্ষেত থেকে করফুল নেছার লাশ উদ্ধার করে বাড়ির পাশে গোরস্থানে কবর দেয় তার ছেলেরা। রুস্তম আলীর ক্ষেত থেকে লাশ এনে কবর দেয়ার ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গুঞ্জন ও নানা প্রশ্ন উঠে। একপর্যায়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়।

 

এলাকাবাসী জানান, বৃদ্ধার দুই সন্তান কৃপণ প্রকৃতির। বাড়িতে মায়ের ভরণ পোষনের ক্ষেত্রেও তারা কৃপণতা করতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ঘটনার দিন ক্ষুধার তাড়নায় বৃদ্ধা পিত্রালয়ের উদ্দেশ্যে বের হোন। সন্তানরা দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও মায়ের খবর নেয়নি। বৃদ্ধা সরকারি বয়ষ্ক ভাতা পেতেন। ভাতার টাকা ব্যয় করতো সুরুজের মেঝো ছেলে। ছেলেরা এতই কৃপণ প্রকৃতির যে, তারা দিনরাত মেহনত করলেও একবেলা দুবেলা খাবার খেতো আবার কখনও ক্ষুদকুড়ো খেয়ে থাকতো। নিজেদের অনেক জায়গা জমি থাকলেও নিজেদের মত করে মাকে খাওয়াতো। বয়সের ভাড়ে ন্যুজ ও শারীরিক অক্ষমতা এবং পুষ্টিহীনতায় ভোগার পড়ও তারা তাদের মাকে চাহিদা অনুয়ায়ী খাবার দিতো না। এলাকাবাসী আরও জানান, প্রতিবেশীদের কেউ বৃদ্ধার ক্ষুধাকষ্ট দেখে একবেলা খাওয়ালে পুত্ররা সেই অংশ নিজেদের সাপ্তাহিক হিসাবের আওতায় এনে একে অপরের ঝুলিতে যোগ করতো। তারা নিজেদের নিয়ে সদাব্যস্ত থাকতো মায়ের খোঁজ খবর খুব একটা নিতো না এবং ভাইয়েরা একে অপরকে দোষারোপ করতো সেখানে পুত্রবধূ নাতী নাতনীরাও যোগ দিতো।

 

বৃদ্ধার পুত্র সুরুজ আলী জানান, বাপের বাড়ির উদ্ধেশ্যে যাওয়ার কথা বলে আমাদের বাড়ি থেকে বেড় হন। পরে বিলে গিয়ে ইরি ক্ষেতের ড্রেনের কাদায় আটকে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ এনে স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাতব্বরকে খবর দেই । এরপর লাশ কবরস্থ করা হয়। মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: কামাল হোসেন জানান, ঘটনার প্রেক্ষিতে ইউডি মামলা হয়েছে। কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মুক্তাগাছায় ধানক্ষেত থেকে মৃত মায়ের লাশ এনে কবর দেয়ার ঘটনায় সন্তানদের নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন!

আপডেট সময় :

 

মৃত্যুর একদিন পর ধান ক্ষেত থেকে করফুল নেছা (৯৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ এনে কবর দেয়ার ঘটনায় গুঞ্জন উঠেছে। ঘটনায় থানা পুলিশ মো: সুরুজ আলী (৬৫) ও মো: চাঁন মিয়া (৬৩) নামে তার দুই পুত্রকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের দেয়া সংবাদের প্রেক্ষিতে ইউডি মামলা এবং কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেছে। রবিবার ৯ মার্চ মুক্তাগাছা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ আদালতে এ আবেদন করা হয়।

 

ঘটনাস্থল মুক্তাগাছা উপজেলার বাঁশাটি ইউনিয়নের লাঙ্গুলিয়া দক্ষিণ পাড়া এলাকায় গিয়ে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে দেনদরবার করে বৃদ্ধার পুত্রদয় তাকে এক সপ্তাহ করে ভরণ পোষনের দায়িত্ব নেয়। তাদের ঘর থেকে দূরবর্তী গোয়াল ঘরের পাশে পলিথিনে মোড়ানো একটি ঝুপড়িতে তারা তাদের মাকে রাখে। গত ৬ মার্চ শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী গোয়াড়ি গ্রামে পিত্রালয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হোন। রাত পেড়িয়ে পরদিন ৭ মার্চ শনিবার বেলা ১১টায় পথিমধ্যে মরাখালি বিল এলাকার ধানক্ষেত থেকে করফুল নেছার লাশ উদ্ধার করে বাড়ির পাশে গোরস্থানে কবর দেয় তার ছেলেরা। রুস্তম আলীর ক্ষেত থেকে লাশ এনে কবর দেয়ার ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গুঞ্জন ও নানা প্রশ্ন উঠে। একপর্যায়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়।

 

এলাকাবাসী জানান, বৃদ্ধার দুই সন্তান কৃপণ প্রকৃতির। বাড়িতে মায়ের ভরণ পোষনের ক্ষেত্রেও তারা কৃপণতা করতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ঘটনার দিন ক্ষুধার তাড়নায় বৃদ্ধা পিত্রালয়ের উদ্দেশ্যে বের হোন। সন্তানরা দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও মায়ের খবর নেয়নি। বৃদ্ধা সরকারি বয়ষ্ক ভাতা পেতেন। ভাতার টাকা ব্যয় করতো সুরুজের মেঝো ছেলে। ছেলেরা এতই কৃপণ প্রকৃতির যে, তারা দিনরাত মেহনত করলেও একবেলা দুবেলা খাবার খেতো আবার কখনও ক্ষুদকুড়ো খেয়ে থাকতো। নিজেদের অনেক জায়গা জমি থাকলেও নিজেদের মত করে মাকে খাওয়াতো। বয়সের ভাড়ে ন্যুজ ও শারীরিক অক্ষমতা এবং পুষ্টিহীনতায় ভোগার পড়ও তারা তাদের মাকে চাহিদা অনুয়ায়ী খাবার দিতো না। এলাকাবাসী আরও জানান, প্রতিবেশীদের কেউ বৃদ্ধার ক্ষুধাকষ্ট দেখে একবেলা খাওয়ালে পুত্ররা সেই অংশ নিজেদের সাপ্তাহিক হিসাবের আওতায় এনে একে অপরের ঝুলিতে যোগ করতো। তারা নিজেদের নিয়ে সদাব্যস্ত থাকতো মায়ের খোঁজ খবর খুব একটা নিতো না এবং ভাইয়েরা একে অপরকে দোষারোপ করতো সেখানে পুত্রবধূ নাতী নাতনীরাও যোগ দিতো।

 

বৃদ্ধার পুত্র সুরুজ আলী জানান, বাপের বাড়ির উদ্ধেশ্যে যাওয়ার কথা বলে আমাদের বাড়ি থেকে বেড় হন। পরে বিলে গিয়ে ইরি ক্ষেতের ড্রেনের কাদায় আটকে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ এনে স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাতব্বরকে খবর দেই । এরপর লাশ কবরস্থ করা হয়। মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: কামাল হোসেন জানান, ঘটনার প্রেক্ষিতে ইউডি মামলা হয়েছে। কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।