ঢাকা ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে বেপরোয়া ছিল টাকা পাচারকারীরা

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৫০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

দেশের সাধারণ মানুষের রক্ত ও ঘামে ভেজানো টাকা বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে অর্থপাচারের অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো।

পাচারকারীদের পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টার পাশাপাশি বিদেশে অপ্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের বিপরীতে তাদের দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পাচারে শেখ পরিবারের প্রশ্রয়

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পরই পতিত সরকারের দুর্নীতির নানা দিক বের হতে থাকে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, দলটি ক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় ১৬ বছরে অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে শেখ রেহানা ও পুরো শেখ পরিবারের সদস্যরাও বেপরোয়া ছিলেন।

তাদের আত্মীয়-স্বজনের নাম ভাঙিয়েও অনেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করে টাকা কামিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর ওই সব টাকা বিদেশে পাচার করেছে। খোদ শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সাবেক স্বামী খন্দকার মাশরুর হোসেন একবার পাচারের টাকাসহ দুবাইয়ে আটক হওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ রকমভাবে অনেক দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর আমলা, রাজনীতিবিদ, এমপি, মন্ত্রীও ওই সময় দুর্নীতির টাকা তাদের প্রশ্রয়ে পাচার করেছিলেন বলে আলোচনা রয়েছে।

যারা বিদেশে আজকে শীর্ষ ধনী হয়েছেন, আলাদা সাম্রাজ্য গড়েছেন, তারা সরাসরি শেখ পরিবারের প্রশ্রয় পেয়েছিলেন বলে প্রচার রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় যত তদন্ত, অনুসন্ধান হচ্ছে এ বিষয়গুলো নজরে আনছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এনবিআর কী করছে?

এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি সূত্র জানায়, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশসহ সরকারি চাকরিজীবী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান-পরিচালক, ঊর্ধ্বতন ও মাঝারি স্তরের কর্মকর্তাদেরও অর্থপাচারের তথ্য হাতে এসেছে। কর ফাঁকিবাজ ও অর্থ পাচারকারী এমন সন্দেহজনক প্রায় ২০০ ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সিআইসি। দেশের বাইরে তাদের সম্পদ আছে কি না জানতে বিভিন্ন দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

বিস্তারিত তথ্য হাতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কানাডা, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, জাপান, বেলজিয়ামসহ প্রায় ১৫টি দেশ ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে সরকার।

পাচারের ফল কী হতে পারে?

অপরাধ অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা হিসেবে এনবিআরও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এসব সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। সিআইসি সূত্র জানায়, দাতা সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তথ্য ও কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, ফরেনসিক ল্যাব সচল করতেও প্রস্তুত তারা।

একদিকে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা, অন্যদিকে দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে ভাবছে সিআইসি। অর্থ পাচারকারীদের দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আয়কর আইন অনুযায়ী যেকোনো করদাতা যদি বিদেশে সম্পদ অর্জন করেন, তার তথ্য আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করার বিধান আছে। সে ক্ষেত্রে সেই সম্পদের ওপর কোনো কর দিতে হয় না। তবে সম্পদের তথ্য গোপন করলে তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে সম্পদমূল্যের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করার নিয়ম আছে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই ব্যক্তির দেশের বাইরে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রমাণিত তথ্য পাওয়া গেছে। রিটার্নে উল্লেখ না করায় সম্পদের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হবে। সেই জরিমানার টাকা উদ্ধারের জন্য তার দেশে থাকা সম্পদ রাষ্ট্রের অনূকূলে বাজেয়াপ্ত করে জরিমানার টাকা আদায় করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হলেও অসম্ভব নয় বলে মনে করছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।

এনবিআরের করনীতির সাবেক সদস্য ও সিআইসির সাবেক মহাপরিচালক ড. সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, এর আগে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কোনো নজির নেই। তবে রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান চাইলেই এটা করতে পারেন। আগে করেনি মানে করতে পারবে না, বিষয়টা এমন না। আমি মনে করি, সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা উচিত। এটা ছাড়া কোনো রাস্তা নেই।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশের বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ওই সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার এই পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে তৎপর।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেখ পরিবারের প্রশ্রয়ে বেপরোয়া ছিল টাকা পাচারকারীরা

আপডেট সময় : ১১:১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

 

দেশের সাধারণ মানুষের রক্ত ও ঘামে ভেজানো টাকা বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে অর্থপাচারের অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো।

পাচারকারীদের পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টার পাশাপাশি বিদেশে অপ্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের বিপরীতে তাদের দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পাচারে শেখ পরিবারের প্রশ্রয়

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পরই পতিত সরকারের দুর্নীতির নানা দিক বের হতে থাকে। তথ্য-উপাত্ত বলছে, দলটি ক্ষমতায় থাকাকালে প্রায় ১৬ বছরে অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার সব সীমা ছাড়িয়ে যায়। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে শেখ রেহানা ও পুরো শেখ পরিবারের সদস্যরাও বেপরোয়া ছিলেন।

তাদের আত্মীয়-স্বজনের নাম ভাঙিয়েও অনেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করে টাকা কামিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর ওই সব টাকা বিদেশে পাচার করেছে। খোদ শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সাবেক স্বামী খন্দকার মাশরুর হোসেন একবার পাচারের টাকাসহ দুবাইয়ে আটক হওয়ার ঘটনাও ঘটে। এ রকমভাবে অনেক দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর আমলা, রাজনীতিবিদ, এমপি, মন্ত্রীও ওই সময় দুর্নীতির টাকা তাদের প্রশ্রয়ে পাচার করেছিলেন বলে আলোচনা রয়েছে।

যারা বিদেশে আজকে শীর্ষ ধনী হয়েছেন, আলাদা সাম্রাজ্য গড়েছেন, তারা সরাসরি শেখ পরিবারের প্রশ্রয় পেয়েছিলেন বলে প্রচার রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় যত তদন্ত, অনুসন্ধান হচ্ছে এ বিষয়গুলো নজরে আনছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এনবিআর কী করছে?

এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি সূত্র জানায়, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশসহ সরকারি চাকরিজীবী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান-পরিচালক, ঊর্ধ্বতন ও মাঝারি স্তরের কর্মকর্তাদেরও অর্থপাচারের তথ্য হাতে এসেছে। কর ফাঁকিবাজ ও অর্থ পাচারকারী এমন সন্দেহজনক প্রায় ২০০ ব্যক্তি ও তাদের পরিবারকে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সিআইসি। দেশের বাইরে তাদের সম্পদ আছে কি না জানতে বিভিন্ন দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

বিস্তারিত তথ্য হাতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে সহযোগিতা চেয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কানাডা, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, জাপান, বেলজিয়ামসহ প্রায় ১৫টি দেশ ছাড়াও বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), এডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে সহযোগিতা চেয়েছে সরকার।

পাচারের ফল কী হতে পারে?

অপরাধ অনুসন্ধান ও তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা হিসেবে এনবিআরও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এসব সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। সিআইসি সূত্র জানায়, দাতা সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তথ্য ও কারিগরি সহায়তার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, ফরেনসিক ল্যাব সচল করতেও প্রস্তুত তারা।

একদিকে পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা, অন্যদিকে দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে ভাবছে সিআইসি। অর্থ পাচারকারীদের দেশে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আয়কর আইন অনুযায়ী যেকোনো করদাতা যদি বিদেশে সম্পদ অর্জন করেন, তার তথ্য আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করার বিধান আছে। সে ক্ষেত্রে সেই সম্পদের ওপর কোনো কর দিতে হয় না। তবে সম্পদের তথ্য গোপন করলে তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে সম্পদমূল্যের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করার নিয়ম আছে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই ব্যক্তির দেশের বাইরে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রমাণিত তথ্য পাওয়া গেছে। রিটার্নে উল্লেখ না করায় সম্পদের সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হবে। সেই জরিমানার টাকা উদ্ধারের জন্য তার দেশে থাকা সম্পদ রাষ্ট্রের অনূকূলে বাজেয়াপ্ত করে জরিমানার টাকা আদায় করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হলেও অসম্ভব নয় বলে মনে করছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।

এনবিআরের করনীতির সাবেক সদস্য ও সিআইসির সাবেক মহাপরিচালক ড. সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, এর আগে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কোনো নজির নেই। তবে রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান চাইলেই এটা করতে পারেন। আগে করেনি মানে করতে পারবে না, বিষয়টা এমন না। আমি মনে করি, সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা উচিত। এটা ছাড়া কোনো রাস্তা নেই।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশের বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ওই সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার এই পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে তৎপর।