স্বৈরশাসকের দোসরদের কবল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জমি রক্ষার দাবি
- আপডেট সময় : ০৩:১৮:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫ ১০১ বার পড়া হয়েছে
স্বৈরশাসকের থাবা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার প্রমাণ দিলো অমুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম। গণহত্যা মামলায় কারাগাওে থেকেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, মোর্শেদুল আলম ও তার সহযোগিরা। এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কবল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ১৬ একর জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি।
বুধবার (১ জানুয়ারী) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেরন থেকে এই দাবি জানানো হয়। এদিন পতিত স্বৈরশাসক হাসিনা ও তার মন্ত্রী, এমপি, আমলার সহযোগী ভুযা মুক্তিযোদ্ধা কুখ্যাত মোর্শেদুল আলম ও তার সহযোগিদের নির্যাতনে দুইজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বরাবরে স্মারকলিপি পেশ সংক্রান্ত
সংবাদ সম্মেলন বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে মিছিল প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক নঈম জাহাঙ্গির। বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন, আব্দুর সাত্তার ও নজরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
নঈম জাহাঙ্গির জানান, সুপ্রিমকোর্টের নিষেজ্ঞার তোয়াক্কা না করে মোর্শেদুল আলম প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ভিতি দেখিয়ে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। জাতীয় গৃহায়নে জমা দেওয়া ৩০০ জনের তালিকা যাচাই-বাছাই করে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
লিখিত বক্তব্য বলা হয়, ১৯৯৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতি সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নেয়। সমিতির কথিত মহাসচিব মোর্শেদুল আলম জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে একটি দরখাস্ত করেন মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের জন্য।
সেই দরখাস্তের আলোকে জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সমিতির কাছে জানতে চেয়ে একটি পত্র দেয়। তাতে বলা হয়, আপনার সমিতির মধ্যে কতজন মুক্তিযোদ্ধা ও কী পরিমাণ জমির প্রয়োজন? একটি হলফনামাসহ ৫০ টাকার স্ট্যাম্পে জমা দিতে আদেশ করেন।
এরপর ১৯৯৯ সালের ২৩ নভেম্বর ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে তালিকার হলফনামাসহ জাতীয় গৃহায়ন কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।
৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধার নামে তালিকা জমা হওয়ার পর জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১৬.৩১ একর জমি বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বরাদ্দপত্র সমিতির নামে না দিয়ে সমিতির মহাসচিব মোর্শেদুল আলম নামে বরাদ্দ হয়। এতে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু সমিতির মহাসচিব আমাদের বিভিন্ন হুমকি, ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওই বরাদ্দপত্র নিয়ে সমিতির মধ্যে গোলযোগ দেখা দিলে পুনরায় বরাদ্দপত্র সমিতির নামে সংশোধন হয়।
কিন্তু স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ শাসনামলে স্বৈরাচারের মন্ত্রী শেখ সেলিম, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আ ক ম মোজাম্মেল হক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক পিএসসির চেয়ারম্যান এটি আহমাদুল হক চৌধুরী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও নুর মোহাম্মদ, সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, মাহবুবুল আলম খান, হেদায়েতুল ইসলাম, আবু আলম শহিদ খান এবং অমুক্তিযোদ্ধা মোর্শেদুল আলম গং সম্মিলিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির ১৫ডি/১/২ প্রাতিষ্ঠানিক প্লটে (যা বর্তমান বিজয় রাকিন সিটি নামে পরিচিত) কাফরুল মিরপুরের অধীনে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে ১৬ একর জমির ওপরে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করেছে। সেসব ভবনের ফ্ল্যাট অমুক্তিযোদ্ধাদের কাছে বিক্রি করে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতির সদস্য আব্দুর সাত্তার, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।