ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

হরিরামপুরে অবৈধভাবে চলছে পিয়াজ মরিচের হাট, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

ছাবিনা দিলরুবা, মানিকগঞ্জ
  • আপডেট সময় : ৪৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ঝিটকা বাজারে সরকার নির্ধারিত জায়গায় পিয়াজ-মরিচ বাজার পরিচালিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু সম্প্রতি কিছু অসাধু ও স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত দোকান বন্ধ রেখে, পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় পিয়াজ-মরিচের হাট স্থানান্তর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, গত পহেলা বৈশাখ থেকে নতুন বাজারটি অবৈধ পন্থায় উদ্বোধন করা হয় । খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন সেনাসদস্যের সহযোগিতায় বন্ধ করে দেয় । দীর্ঘদিন বন্ধ অবস্থায় তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল । হঠাৎ শতফূর্তভাবে পুনরায় হাটটি চালু হওয়ায় পুরাতন বাজার কমিটি ও নতুন বাজার কমিটির মধ্যে ক্রোধ সৃষ্টি হচ্ছে ।
জানা গেছে, ঝিটকা বাজারে পিয়াজ-মরিচ হাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, যেখানে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতা সমাগম করে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, হাট-বাজার স্থাপন বা সম্প্রসারণের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমোদন আবশ্যক এবং সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিকানা অবশ্যই ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হতে হয়। অথচ চলমান পরিস্থিতিতে এসব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিমালিকানাধীন স্থানে বাজার সরিয়ে নেওয় হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাজারের বৈধ ইজারাদার রাকিব হাসান বলেন,
“আমি বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য বৈধভাবে ঝিটকা বাজারের ইজারা গ্রহণ করেছি। সরকার প্রতিবছর এখান থেকে ৪০-৫০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। অথচ এখন কিছু ব্যক্তি নিজস্ব স্বার্থে বাজার অচল করে তুলেছে, যার ফলে সরকারও বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ঝিটকা বাজারে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পিয়াজ-মরিচ হাটের দোকান বরাদ্দ নিয়ে অনেক ব্যবসায়ী চান্দিনা ভিটিতে নিয়মিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসলেও, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ দোকান বন্ধ রেখে বাজার কার্যক্রম ব্যাহত করছে। এর ফলে বিক্রেতারা ঠিকভাবে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না এবং বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতিও কমে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং অনুরোধ করেছেন, যাতে সরকারি বরাদ্দকৃত দোকানসমূহে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবসা পরিচালনা নিশ্চিত করা হয় এবং সরকারি অনুমোদন ছাড়া অন্যত্র বাজারটি বন্ধ করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল ও বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, “ঝিটকা বাজার কেবল একটি কেনাবেচার স্থান নয়, এটি এলাকার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হাট-বাজার সংক্রান্ত সরকারী গেজেট ও নীতিমালার কঠোর বাস্তবায়নই পারে এ ধরনের অপচেষ্টা রুখে দিতে। অন্যথায় তা শুধুমাত্র স্থানীয় অর্থনীতির ক্ষতি নয়, বরং সরকারি রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ ও তদারকি কামনা করেছেন ইজারাদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমাজ।হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও কোহিনুর আক্তার দৈনিক গনমুক্তি কে বলেন, পূর্বে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেনাবাহিনী দিয়ে অবৈধ বাজার বন্ধ করে দিয়েছিলাম, পুনরায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হরিরামপুরে অবৈধভাবে চলছে পিয়াজ মরিচের হাট, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

আপডেট সময় :

 

মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ঝিটকা বাজারে সরকার নির্ধারিত জায়গায় পিয়াজ-মরিচ বাজার পরিচালিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু সম্প্রতি কিছু অসাধু ও স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত দোকান বন্ধ রেখে, পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় পিয়াজ-মরিচের হাট স্থানান্তর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, গত পহেলা বৈশাখ থেকে নতুন বাজারটি অবৈধ পন্থায় উদ্বোধন করা হয় । খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন সেনাসদস্যের সহযোগিতায় বন্ধ করে দেয় । দীর্ঘদিন বন্ধ অবস্থায় তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিল । হঠাৎ শতফূর্তভাবে পুনরায় হাটটি চালু হওয়ায় পুরাতন বাজার কমিটি ও নতুন বাজার কমিটির মধ্যে ক্রোধ সৃষ্টি হচ্ছে ।
জানা গেছে, ঝিটকা বাজারে পিয়াজ-মরিচ হাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, যেখানে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতা সমাগম করে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, হাট-বাজার স্থাপন বা সম্প্রসারণের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমোদন আবশ্যক এবং সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিকানা অবশ্যই ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হতে হয়। অথচ চলমান পরিস্থিতিতে এসব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিমালিকানাধীন স্থানে বাজার সরিয়ে নেওয় হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাজারের বৈধ ইজারাদার রাকিব হাসান বলেন,
“আমি বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য বৈধভাবে ঝিটকা বাজারের ইজারা গ্রহণ করেছি। সরকার প্রতিবছর এখান থেকে ৪০-৫০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। অথচ এখন কিছু ব্যক্তি নিজস্ব স্বার্থে বাজার অচল করে তুলেছে, যার ফলে সরকারও বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ঝিটকা বাজারে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পিয়াজ-মরিচ হাটের দোকান বরাদ্দ নিয়ে অনেক ব্যবসায়ী চান্দিনা ভিটিতে নিয়মিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসলেও, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ দোকান বন্ধ রেখে বাজার কার্যক্রম ব্যাহত করছে। এর ফলে বিক্রেতারা ঠিকভাবে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না এবং বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতিও কমে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং অনুরোধ করেছেন, যাতে সরকারি বরাদ্দকৃত দোকানসমূহে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবসা পরিচালনা নিশ্চিত করা হয় এবং সরকারি অনুমোদন ছাড়া অন্যত্র বাজারটি বন্ধ করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল ও বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, “ঝিটকা বাজার কেবল একটি কেনাবেচার স্থান নয়, এটি এলাকার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হাট-বাজার সংক্রান্ত সরকারী গেজেট ও নীতিমালার কঠোর বাস্তবায়নই পারে এ ধরনের অপচেষ্টা রুখে দিতে। অন্যথায় তা শুধুমাত্র স্থানীয় অর্থনীতির ক্ষতি নয়, বরং সরকারি রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ ও তদারকি কামনা করেছেন ইজারাদার ও সাধারণ ব্যবসায়ী সমাজ।হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও কোহিনুর আক্তার দৈনিক গনমুক্তি কে বলেন, পূর্বে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর সেনাবাহিনী দিয়ে অবৈধ বাজার বন্ধ করে দিয়েছিলাম, পুনরায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।