ঢাকা ০৬:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

হোসেনপুরে মামলার আসামিরা বাদীকে খুনের হুমকি দিচ্ছে

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের সবুজ মিয়া খুন হন ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল বিকালে। প্রতিবেশী লুৎফুর রহমান ওরফে গফুর মাস্টার ও আবুল হাশেমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল সবুজ মিয়ার। প্রাণনাশের আশংকায় সবুজ মিয়া ২০২৩ সালের ৮ জুলাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কিশোরগঞ্জের ১নং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারা জারি এবং ১১৪ ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। এতে প্রতিপক্ষ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ঘটনার দিন বিকাল তিনটার দিকে আসামিরা সবুজ মিয়ার বাড়ির প্রাঙ্গণে এসে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এর প্রতিবাদ জানালে আসামিরা সবুজ মিয়া ও তার ছোট ভাই হারেছ মিয়াকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর আসামিরা আরো সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সবুজ মিয়া ও হারেছ মিয়ার ওপর আক্রমণ চালায়। বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাতে সবুজ মিয়া মারাত্মকভাবে জখমপ্রাপ্ত হন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। গুরুতর আহত হারেছ মিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন এ ব্যাপারে ১০ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী শান্তি আক্তার গতকাল শনিবার তার বাড়িতে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন, ওই দিনের হামলায় রুহুল আমিন, তার পুত্র শরীফ ও আবদুল্লাহ আল নোমান সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করায় তাদের নামও আসামি হিসেবে অন্তর্ভূক্তির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মৌখিকভাবে আবেদন জানানো হয়। পরে এ ব্যাপারে একটি লিখিত আবেদনও ওসির নিকট প্রদান করা হয়। কিন্তু পুলিশ অজ্ঞাত কারণে বিষয়টি এড়িয়ে তাদের নাম বাদ দিয়ে মামলাটি রুজু করে। শান্তি আক্তার অভিযোগ করেন, পুলিশ বিভাগে চাকরিরত তাদের এক আত্মীয়ের হস্তক্ষেপেই তাদের নাম আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বাদীর পক্ষ থেকে চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে না-রাজি দিলে বিচারক মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে সিআইডি’ও তদন্ত করে আদালতে অভিন্ন চার্জশিট প্রদান করে। বাদী অভিযোগ করেন, তিন আসামিকে অন্তর্ভূক্তির জন্য সিআইডি’র তদন্ত কর্মকর্তা তার নিকট মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেছিলেন। বর্তমানে চার্জশিটভুক্ত সকল আসামিই জামিনে রয়েছে। জামিন পাওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত আসামিগণ, তাদের আত্মীয়স্বজন ও রুহুল আমিন গংরা মোবাইল ফোনে কিংবা বাড়িতে এসে বাদীর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে তিনি দুই মেয়ে নিয়ে খুবই আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। শান্তি আক্তার তাদের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে বাদীর আইনজীবীসূত্রে জানা যায়, দাখিলকৃত চার্জশিটের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে রিভিশনের জন্য আবেদন জানানো হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হোসেনপুরে মামলার আসামিরা বাদীকে খুনের হুমকি দিচ্ছে

আপডেট সময় :

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের সবুজ মিয়া খুন হন ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল বিকালে। প্রতিবেশী লুৎফুর রহমান ওরফে গফুর মাস্টার ও আবুল হাশেমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল সবুজ মিয়ার। প্রাণনাশের আশংকায় সবুজ মিয়া ২০২৩ সালের ৮ জুলাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কিশোরগঞ্জের ১নং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারা জারি এবং ১১৪ ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। এতে প্রতিপক্ষ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ঘটনার দিন বিকাল তিনটার দিকে আসামিরা সবুজ মিয়ার বাড়ির প্রাঙ্গণে এসে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এর প্রতিবাদ জানালে আসামিরা সবুজ মিয়া ও তার ছোট ভাই হারেছ মিয়াকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর আসামিরা আরো সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সবুজ মিয়া ও হারেছ মিয়ার ওপর আক্রমণ চালায়। বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাতে সবুজ মিয়া মারাত্মকভাবে জখমপ্রাপ্ত হন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। গুরুতর আহত হারেছ মিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন এ ব্যাপারে ১০ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী শান্তি আক্তার গতকাল শনিবার তার বাড়িতে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন, ওই দিনের হামলায় রুহুল আমিন, তার পুত্র শরীফ ও আবদুল্লাহ আল নোমান সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করায় তাদের নামও আসামি হিসেবে অন্তর্ভূক্তির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মৌখিকভাবে আবেদন জানানো হয়। পরে এ ব্যাপারে একটি লিখিত আবেদনও ওসির নিকট প্রদান করা হয়। কিন্তু পুলিশ অজ্ঞাত কারণে বিষয়টি এড়িয়ে তাদের নাম বাদ দিয়ে মামলাটি রুজু করে। শান্তি আক্তার অভিযোগ করেন, পুলিশ বিভাগে চাকরিরত তাদের এক আত্মীয়ের হস্তক্ষেপেই তাদের নাম আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বাদীর পক্ষ থেকে চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে না-রাজি দিলে বিচারক মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে সিআইডি’ও তদন্ত করে আদালতে অভিন্ন চার্জশিট প্রদান করে। বাদী অভিযোগ করেন, তিন আসামিকে অন্তর্ভূক্তির জন্য সিআইডি’র তদন্ত কর্মকর্তা তার নিকট মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেছিলেন। বর্তমানে চার্জশিটভুক্ত সকল আসামিই জামিনে রয়েছে। জামিন পাওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত আসামিগণ, তাদের আত্মীয়স্বজন ও রুহুল আমিন গংরা মোবাইল ফোনে কিংবা বাড়িতে এসে বাদীর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে তিনি দুই মেয়ে নিয়ে খুবই আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। শান্তি আক্তার তাদের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে বাদীর আইনজীবীসূত্রে জানা যায়, দাখিলকৃত চার্জশিটের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে রিভিশনের জন্য আবেদন জানানো হবে।