ঢাকা ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাইকগাছায় সাবেক প্যানেল মেয়র জোনাকি সমিতির অর্থ আত্মসাৎকারী কবিতা রানী দাশের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন Logo চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীত  করণের দাবিতে রামুতে মানববন্ধন ও সমাবেশ Logo গৌরীপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটি গঠন Logo কেশবপুরে প্রান্তিক জনগোষ্টির জীবনমান উন্নয়নে সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo নওগাঁয় জমি আত্মসাতের চেষ্টার প্রতিবাদে প্রতিবন্ধী চাচার সংবাদ সম্মেলন Logo পলাশবাড়ীতে কাজী জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo মিতরা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় থেকে  ১৭২ জনের মাঝে ভিজিডি চাল বিতরণ Logo সরিষাবাড়ীতে পাট উৎপাদনকারী চাষীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত  Logo ধামরাইয়ে স্কুলছাত্রীকে অপহরের পর ৭ দিন আটকিয়ে গণ ধর্ষণ,  গ্রেফতার-৪ Logo গোলাপগঞ্জে যুব উন্নয়নের উদ্যোগে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষনের সনদ বিতরণ 

১০০ দিনে সবল অবস্থানে অর্থনীতি : অধ্যাপক ইউনূস

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৪:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ২৩৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১০০ দিন আগে আর্থিক দিক থেকে আমরা যে লণ্ডভণ্ড অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম- সেটা এখন অতীত ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই একশ’ দিনে অর্থনীতি সবল অবস্থানে চলে এসেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা যখন কাজ শুরু করেছি, দেশের অর্থনীতি ছিল বিপর্যস্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। আশার কথা, এই রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন উন্নতির পথে। গত তিন মাসে রিজার্ভে কোনো রকম হাত না দিয়েই আমরা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পেরেছি। জ্বালানি তেল আমদানিতে পুঞ্জীভূত বকেয়ার পরিমাণ ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার হতে কমিয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলারে আনতে পেরেছি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ-সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ইতোমধ্যে ঋণ ও অনুদান হিসেবে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা আমাদের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সচল করতে সক্ষম হবে।’

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বলা বাহুল্য এখনো আমাদের বন্ধুদের কাছ থেকে যে সাহায্যের আয়োজন হয়েছে তা আসা শুরু করেনি। বন্ধু রাষ্ট্রগুলি শুধু যে আমাদের বড় বড় অংকের সাহায্য নিয়ে আসছে তাই নয়, তারা এই সাহায্য দ্রুততম সময়ে আসা শুরু করবে এই প্রতিশ্রুতিও আমাকে দিয়েছে। এই সাহায্য আসা শুরু করলে আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত মজবুত এবং আকর্ষনীয় অর্থনীতিতে পরিণত হবে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও নানা রকম বিনিয়োগে উৎসাহীত হয়ে এগিয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, পতিত সরকার আমাদের জন্য যে ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি রেখে গিয়েছে তাতে রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। এর মধ্যেও জুলাইয়ের নেতিবাচক অবস্থা থেকে অক্টোবর নাগাদ রাজস্ব আদায়ে পৌনে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আগের অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিপুল রাজস্ব ঘাটতি ছিল। যে কারণে এবার শুরু থেকেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে স্বৈরাচার পতনের পরবর্তী তিন মাসে পৌনে ৯ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির পরও লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৩ শতাংশের বেশি ঘাটতি থেকে যায়। রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে আমি এখন অন লাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে উৎসাহিত করছি।

বাংলাদেশকে সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের আগ্রহের  কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএনডিপিসহ অন্যান্য সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে আমার দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে নতুনভাবে এবং সর্বাত্মকভাবে সাহায্যের জন্য তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

বিনিয়োগ টানতে সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারিদের সঙ্গে এখন থেকে আমরা আলোচনা শুরু করে দিয়েছি। বিশ্বের রাষ্ট্রপুঞ্জের মজলিসে আমরা এখন সম্মানিত এবং প্রশংসিত দেশের অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। এর কারণে পরাজিত শক্তি নানা কৌশল করেও তাদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। তারা নানা চেহারা নিয়ে আপনাদের প্রিয়পাত্র হবার চেষ্টা করছে। পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন, দেশকে মুক্ত রাখুন। এ ব্যাপারে অনড় থাকুন। এমন কিছু করবেন না যা তাদেরকে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। তাদেরকে সকল দিক থেকে নিরাশ করুন। সেটা নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের আর কোন বিষয়ে সংশয় করার প্রয়োজন নেই। সরকারের পক্ষ থেকে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি সকল প্রকার সীমাবদ্ধতা সত্বেও আমরা আপনাদেরকে একটা মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাবো, ভবিষ্যতে চলার পথকে সহজগম্য করে যাবো, নাগরিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে যাবো। বিপক্ষ শক্তি যত শক্তিশালীই হোক, নাশকতার যত রকমই উদ্ভট পরিকল্পনাই করুক– সব কিছু নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। এবার যেমুক্তি আমরা অর্জন করেছি তা আমাদের কাছ থেকে কেউ যেন ছিনিয়ে নিতে না-পারে তার জন্য সর্বমুহুর্তে প্রস্তুত থাকুন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, পতিত সরকার ও তার দোসররা প্রতিবছর দেশ থেকে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ সম্প্রতি এই তথ্য দিয়েছে। পাচার হয়ে যাওয়া এই অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য সম্ভব সকল ধরনের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। এ কাজে সফল হতে পারলে আমাদের অর্থনীতি আরো গতি পাবে। এ কাজে আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সাহায্য নিচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের বৃহৎ রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টস শিল্পে গত কিছু দিন ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী বেশ কিছু গার্মেন্টস মালিক পালিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্য অনেক কারখানায়ও শ্রমিকরা ন্যায্য বেতনসহ অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। শ্রমিকরা তাদের দীর্ঘ দিনের বঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে এবং অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতে রাস্তায় নেমে আসে। আমরা তাদের কথা শুনেছি, তাদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে পেরেছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ১৮ দফার একটি ব্যাপকভিত্তিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়াই আমরা শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন করতে পেরেছি। তারা আবার উৎপাদনে ফিরেছে। এতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী এই শিল্পও। নানা প্রতিকূলতা স্বত্বেও অক্টোবর মাসে আমাদের রপ্তানীতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

১০০ দিনে সবল অবস্থানে অর্থনীতি : অধ্যাপক ইউনূস

আপডেট সময় : ০৯:২৪:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১০০ দিন আগে আর্থিক দিক থেকে আমরা যে লণ্ডভণ্ড অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম- সেটা এখন অতীত ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই একশ’ দিনে অর্থনীতি সবল অবস্থানে চলে এসেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা যখন কাজ শুরু করেছি, দেশের অর্থনীতি ছিল বিপর্যস্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। আশার কথা, এই রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন উন্নতির পথে। গত তিন মাসে রিজার্ভে কোনো রকম হাত না দিয়েই আমরা প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পেরেছি। জ্বালানি তেল আমদানিতে পুঞ্জীভূত বকেয়ার পরিমাণ ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার হতে কমিয়ে ১৬০ মিলিয়ন ডলারে আনতে পেরেছি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ-সহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ইতোমধ্যে ঋণ ও অনুদান হিসেবে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা আমাদের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সচল করতে সক্ষম হবে।’

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বলা বাহুল্য এখনো আমাদের বন্ধুদের কাছ থেকে যে সাহায্যের আয়োজন হয়েছে তা আসা শুরু করেনি। বন্ধু রাষ্ট্রগুলি শুধু যে আমাদের বড় বড় অংকের সাহায্য নিয়ে আসছে তাই নয়, তারা এই সাহায্য দ্রুততম সময়ে আসা শুরু করবে এই প্রতিশ্রুতিও আমাকে দিয়েছে। এই সাহায্য আসা শুরু করলে আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত মজবুত এবং আকর্ষনীয় অর্থনীতিতে পরিণত হবে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও নানা রকম বিনিয়োগে উৎসাহীত হয়ে এগিয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, পতিত সরকার আমাদের জন্য যে ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি রেখে গিয়েছে তাতে রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। এর মধ্যেও জুলাইয়ের নেতিবাচক অবস্থা থেকে অক্টোবর নাগাদ রাজস্ব আদায়ে পৌনে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আগের অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিপুল রাজস্ব ঘাটতি ছিল। যে কারণে এবার শুরু থেকেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে স্বৈরাচার পতনের পরবর্তী তিন মাসে পৌনে ৯ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির পরও লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৩ শতাংশের বেশি ঘাটতি থেকে যায়। রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে আমি এখন অন লাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে উৎসাহিত করছি।

বাংলাদেশকে সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের আগ্রহের  কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএনডিপিসহ অন্যান্য সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে আমার দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে নতুনভাবে এবং সর্বাত্মকভাবে সাহায্যের জন্য তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

বিনিয়োগ টানতে সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারিদের সঙ্গে এখন থেকে আমরা আলোচনা শুরু করে দিয়েছি। বিশ্বের রাষ্ট্রপুঞ্জের মজলিসে আমরা এখন সম্মানিত এবং প্রশংসিত দেশের অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। এর কারণে পরাজিত শক্তি নানা কৌশল করেও তাদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। তারা নানা চেহারা নিয়ে আপনাদের প্রিয়পাত্র হবার চেষ্টা করছে। পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন, দেশকে মুক্ত রাখুন। এ ব্যাপারে অনড় থাকুন। এমন কিছু করবেন না যা তাদেরকে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। তাদেরকে সকল দিক থেকে নিরাশ করুন। সেটা নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের আর কোন বিষয়ে সংশয় করার প্রয়োজন নেই। সরকারের পক্ষ থেকে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি সকল প্রকার সীমাবদ্ধতা সত্বেও আমরা আপনাদেরকে একটা মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাবো, ভবিষ্যতে চলার পথকে সহজগম্য করে যাবো, নাগরিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে যাবো। বিপক্ষ শক্তি যত শক্তিশালীই হোক, নাশকতার যত রকমই উদ্ভট পরিকল্পনাই করুক– সব কিছু নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। এবার যেমুক্তি আমরা অর্জন করেছি তা আমাদের কাছ থেকে কেউ যেন ছিনিয়ে নিতে না-পারে তার জন্য সর্বমুহুর্তে প্রস্তুত থাকুন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, পতিত সরকার ও তার দোসররা প্রতিবছর দেশ থেকে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ সম্প্রতি এই তথ্য দিয়েছে। পাচার হয়ে যাওয়া এই অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য সম্ভব সকল ধরনের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। এ কাজে সফল হতে পারলে আমাদের অর্থনীতি আরো গতি পাবে। এ কাজে আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সাহায্য নিচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের বৃহৎ রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টস শিল্পে গত কিছু দিন ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী বেশ কিছু গার্মেন্টস মালিক পালিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্য অনেক কারখানায়ও শ্রমিকরা ন্যায্য বেতনসহ অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। শ্রমিকরা তাদের দীর্ঘ দিনের বঞ্চনার প্রতিবাদ জানাতে এবং অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতে রাস্তায় নেমে আসে। আমরা তাদের কথা শুনেছি, তাদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে পেরেছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে ১৮ দফার একটি ব্যাপকভিত্তিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়াই আমরা শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন করতে পেরেছি। তারা আবার উৎপাদনে ফিরেছে। এতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী এই শিল্পও। নানা প্রতিকূলতা স্বত্বেও অক্টোবর মাসে আমাদের রপ্তানীতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।