অফিস সময়ে রান্না পশ্চিমাঞ্চল রেলের কর্মচারীদরে, কাজে অনীহার অভিযোগ

- আপডেট সময় : ৩৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমের চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) দপ্তরে অফিস চলাকালীন সময়ে চলছে রান্নার কার্যক্রম। এটি শুধু অনিয়ম নয়, সরকারি সম্পদের অপব্যবহার, যা সরাসরি প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। তাই এটি একটি অপরাধও। কারন, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ৩ ধারায় বলা হয়েছে: প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজ নিষ্ঠার সাথে করতে হবে এবং সরকারের সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ এবং সরকারি অফিস পরিচালনার অন্যান্য নির্দেশনায় স্পষ্ট বলা আছে, কর্মঘণ্টায় কর্মচারীদের ব্যক্তিগত বা অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
অথচ একটি সরকারি দপ্তরে অফিস চলাকালীন সময়ে অফিসিয়াল কাজ বাদ রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকছে সেখানকার (সিনিএম) কর্মচারীরা। সেই দপ্তরে কাজ নিয়ে গেলেও অনিহা বা গড়িমশি করছে সেই অফিসের দ্বায়িত্বরতরা।
আজ সোমবার (২৮জুলাই) সরেজমিনে দেখা মিলেছে এমন দৃশ্যের। সময় ঠিক, সকাল সাড়ে এগারোটা। রেল ভবনের অন্যান্য দপ্তরে চলছে অফিসিয়াল কার্যক্রম। প্রতিবেদক বসে রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমের একটি দপ্তরে। হঠাৎ একজন এসে বললেন, সিসিএম দপ্তরে পিয়নদের (অফিস সহায়ক) কাজের বললে তারা বিরক্ত হচ্ছে। তারা রান্না নিয়ে মহাব্যস্ত! পাশে থেকে আরেক রেল কর্মচারী বললেন, এরা তো দেখি প্রতিদিন রান্না শুরু করেছে। সরকারের কারেন্ট (বিদ্যুৎ) পুড়িয়ে অফিসের কাজ ফেলে কি শুরু করেছে? এসময় বসে থাকা প্রতিবেদক সশরীরে উঠে গেলেন সেই দপ্তরে। প্রতিবেদক দেখলেন, একজন কর্মচারী বাটিতে করে কিছু একটা ধুচ্ছে। এরপর তার সাথে কথা বললে সে জানায় পাশের ঘরে অর্থাৎ প্রধান সহকারির রুমে রান্নার আয়োজন চলছে। সিসিএম এর পিএস রুমে চলছে কাটা বাছা। পাশের রুমে হাড়ি পাতিল রেডি করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক বোডে লাগানো হয়েছে ইনডেকশন (কারেন্ট চালিত) চুলা। তার উপর রাখা হয়েছে হাড়ি। প্রতিবেদককে দেখে তারা কিছুটা বিব্রত হয়। তারা প্রতিদিনের রান্নার ব্যাপারটা অস্বিকার করে। সেই রুমে থাকা প্রধান সহকারি মো: তাহেরুল ইসলাম (মিন্টু) জানান, আজকে সবাই শখ করে রান্না করছে। কতজনের রান্না হচ্ছে জানতে চাইলে ৫-৬ জনের কথা স্বীকার করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: মাহাবুর হোসেন। তিনিও তাদের সাথে সুর মিলিয়ে বলেন বাদ দেনতো ভাই এগুলো বিষয়।
এরপর এমন কার্যক্রমের বিষয় নিয়ে চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিৎ কুমার বিশ্বাসের সাথে কথা বলতে চাইলে প্রধান সহকারি জানালেন তিনি নেই। তিনি অফিসের কাজে ঢাকায় রয়েছেন। পরে কথা হয় ডেপুটি চীফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার আনোয়ার হোসেনের সাথে। তিনি জানান, এই ধরনের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তিনি বলেন, অফিস চলাকালীন সময় কেউ এই ধরনের কাজ করতে পারবে না। প্রয়োজনে অফিসের পরিত্যক্ত জায়গায় অন্য কোন আলাদা ব্যক্তিকে দিয়ে রান্নার কাজ করাতে পারতো। কিন্তু তারা কোনভাবে পারবে না। আপনি বললেন আমি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।