ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্পে দুর্নীতি - ২

অভিযুক্তদের সম্পদ ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার নেপথ্যের গল্প

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১২:২৮:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্পে শত কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়লেও তারা বহাল তবিয়তে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য এই দুর্নীতিচক্রের পেছনে রয়েছে একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়া এবং অর্থ-বিত্তে অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির প্রমাণ।
প্রকল্প পরিচালক এস এ এম রফিকুন্নবী সরাসরি দলীয় কোনো পরিচয় ব্যবহার না করলেও, এই দুর্নীতিচক্রের সদস্যরা শাসকদলের তরুণ একটি উপ-সংগঠনের ছায়াতলে কাজ করেন। প্রকল্প অনুমোদন থেকে শুরু করে টেন্ডার প্রক্রিয়া, বিল ছাড় সব ক্ষেত্রেই তারা রাজনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করেছেন। কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সরাসরি ওই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা মুরাদ হাসান বেগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে নাম আসা এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ। জানা গেছে, তিনি শাসকদলের একজন কেন্দ্রীয় নেতার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, যার মাধ্যমেই প্রকল্পের ব্যয় অনুমোদনে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। এই প্রভাবের কারণেই তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
অনুসন্ধান বলছে, হিসাবরক্ষক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ আনিছুর ইসলামের নামে এবং স্ত্রীর নামে রাজধানী ও আশেপাশে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। পাশাপাশি, একটি দামি গাড়ি এবং পারিবারিকভাবে পরিচালিত একটি আইটি ফার্মের গোপন মালিকানার তথ্য মিলেছে। অথচ সরকারি বেতন গ্রেড অনুযায়ী তার এই সম্পদের ব্যাখ্যা মিলছে না।
সহকারী প্রোগ্রামার মাহবুবুর রহমানের নামে একটি “ই-লার্নিং” প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেটি মূলত ভুয়া প্রশিক্ষণ দেখিয়ে প্রকল্প থেকে অর্থ উত্তোলনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া তার ভাইয়ের নামে খুলে রাখা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পের ভুয়া বিল উত্তোলন হয়েছে।
কাগজে প্রকল্প, মাঠে কিছুই না ঃ
সরকারি কাগজে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব বাস্তবায়নের শত শত ডিও লেটার রয়েছে, কিন্তু যেসব স্কুলে এসব ল্যাব স্থাপনের কথা, সেসব স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন আমাদের এখানে কোনো ল্যাব তো আসেইনি, বরং কেউ যোগাযোগও করেনি। এই বিস্তৃত প্রতারণার কারণে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। প্রযুক্তি শিক্ষার নামে প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষক সমাজ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
ডিও লেটার জালিয়াতি কিভাবে হতো? কারা থাকতো চক্রের মুখ্য ভূমিকায়? তদন্ত সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা রহস্য জানতে চোখ রাখুন আগামীকাল পরবর্তী পর্বে……
(আপনার কাছে যদি এই দুর্নীতির প্রমাণ, ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা বা কোনো গোপন নথি থাকে, যোগাযোগ করুন আমাদের ইমেইল আইডির মাধ্যমে। (হবংি@ংবপঁৎবসধরষ.পড়স)

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্পে দুর্নীতি - ২

অভিযুক্তদের সম্পদ ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার নেপথ্যের গল্প

আপডেট সময় : ১২:২৮:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্পে শত কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়লেও তারা বহাল তবিয়তে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য এই দুর্নীতিচক্রের পেছনে রয়েছে একাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়া এবং অর্থ-বিত্তে অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির প্রমাণ।
প্রকল্প পরিচালক এস এ এম রফিকুন্নবী সরাসরি দলীয় কোনো পরিচয় ব্যবহার না করলেও, এই দুর্নীতিচক্রের সদস্যরা শাসকদলের তরুণ একটি উপ-সংগঠনের ছায়াতলে কাজ করেন। প্রকল্প অনুমোদন থেকে শুরু করে টেন্ডার প্রক্রিয়া, বিল ছাড় সব ক্ষেত্রেই তারা রাজনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করেছেন। কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সরাসরি ওই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা মুরাদ হাসান বেগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে নাম আসা এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ। জানা গেছে, তিনি শাসকদলের একজন কেন্দ্রীয় নেতার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, যার মাধ্যমেই প্রকল্পের ব্যয় অনুমোদনে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। এই প্রভাবের কারণেই তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
অনুসন্ধান বলছে, হিসাবরক্ষক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ আনিছুর ইসলামের নামে এবং স্ত্রীর নামে রাজধানী ও আশেপাশে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। পাশাপাশি, একটি দামি গাড়ি এবং পারিবারিকভাবে পরিচালিত একটি আইটি ফার্মের গোপন মালিকানার তথ্য মিলেছে। অথচ সরকারি বেতন গ্রেড অনুযায়ী তার এই সম্পদের ব্যাখ্যা মিলছে না।
সহকারী প্রোগ্রামার মাহবুবুর রহমানের নামে একটি “ই-লার্নিং” প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেটি মূলত ভুয়া প্রশিক্ষণ দেখিয়ে প্রকল্প থেকে অর্থ উত্তোলনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া তার ভাইয়ের নামে খুলে রাখা একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পের ভুয়া বিল উত্তোলন হয়েছে।
কাগজে প্রকল্প, মাঠে কিছুই না ঃ
সরকারি কাগজে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব বাস্তবায়নের শত শত ডিও লেটার রয়েছে, কিন্তু যেসব স্কুলে এসব ল্যাব স্থাপনের কথা, সেসব স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন আমাদের এখানে কোনো ল্যাব তো আসেইনি, বরং কেউ যোগাযোগও করেনি। এই বিস্তৃত প্রতারণার কারণে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। প্রযুক্তি শিক্ষার নামে প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষক সমাজ ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
ডিও লেটার জালিয়াতি কিভাবে হতো? কারা থাকতো চক্রের মুখ্য ভূমিকায়? তদন্ত সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা রহস্য জানতে চোখ রাখুন আগামীকাল পরবর্তী পর্বে……
(আপনার কাছে যদি এই দুর্নীতির প্রমাণ, ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা বা কোনো গোপন নথি থাকে, যোগাযোগ করুন আমাদের ইমেইল আইডির মাধ্যমে। (হবংি@ংবপঁৎবসধরষ.পড়স)