অসহযোগ আন্দোলন: সংঘাত-সংঘর্ষে ৯৮ জন নিহত

- আপডেট সময় : ০৮:২৭:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪ ২৯৬ বার পড়া হয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রোববার (৪ আগস্ট) সারা দেশে সংঘর্ষ, হামলা, গুলি, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শিক্ষার্থী, পুলিশ, রাজনৈতিককর্মীসহ কমপক্ষে ৯৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে সিরাজগঞ্জে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ১৩ পুলিশসহ মোট ২২ জন, ঢাকায় ১১ জন, ফেনীতে ৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ৮ জন, নরসিংদীতে ৬ জন, কিশোরগঞ্জে ৫ জন, বগুড়ায় ৫ জন, সিলেটে ৫ জন, মাগুরায় ৪ জন, রংপুরে ৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, পাবনায় ৩ জন, কুমিল্লায় পুলিশের এক সদস্যসহ ৩ জন, শেরপুরে ২ জন এবং জয়পুরহাটে ২ জন নিহত হয়েছেন।
অপর দিকে ভোলা, হবিগঞ্জ, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, সাভার, কক্সবাজার, বরিশাল ও গাজীপুরের শ্রীপুরে ১জন করে নিহত হয়েছেন।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নিহতের এ সংখ্যা জানা গেছে। নিহত ৯৮ জনের মধ্যে নাম-পরিচয় জানা গেছে ৪৩ জনের। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ জন, পুলিশ ১৪ জন, শিক্ষার্থী ৯ জন, সাংবাদিক ১ জন ও বিএনপির ১ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম ও ঠিকানা জানা গেলেও পেশা বা রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার আশঙ্কায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দ্দিটকালের জন্য কার্ফু জারির ঘোষণা দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। যদিও ঢাকাসহ পাশ্ববর্তী চার জেলায় সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কার্ফু শিথিল ছিলো। ঢাকাসহ সারাদেশের পরিস্থিতি রণক্ষেত্রে রূপ নেওয়া এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে সারাদেশের পরিস্থিতি উপ্তত্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষ-সংঘাতে একের পর মৃত্যুর সংবাদ, অগ্নিসংযোগের খবর আসতে থাকে। এক দফা দাবি নিয়ে রবিবার সকাল থেকেই মাঠে নামে আন্দোলনকারীরা। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরাও দলীয় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী ও সরকার দলের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ি পড়ে। একের পর এক মৃত্যু সংবাদ আসতে থাকে। দেশজুড়ে জ্বলাও-পোড়াওয়া, সংঘর্ষে এক ভিতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঢাকার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে।
দুপুর থেকে মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্ফু শিথিল বাতিল করে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারির ঘোষণা দেওয়া হয়। নির্বাহী আদেশে সোমবার তিনদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার।
এদিন রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি হামলা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবাইকে নিরাপদে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়।
জঙ্গি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা কারর্ফু প্রত্যাখান করে ৪টি লাশ নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশের উত্তরের জেলা সিরাজগঞ্জে এনায়েতপুর থানা আক্রমণ করে ১৩ পুলিশকে পিটিয়ে হত্যার খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকার অদূরে নরসিংদীতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৬জনকে হত্যার করা হয়েছে জানা গিয়েছে। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রবিবার ঢাকাসহ সারাদেশে কর্মসূচি পালনে মাঠে নামে আন্দোলনকারীরা।
অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেতাকর্মীরা। তাতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যের বাড়িতে, দলীয় কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।