আদালতের আদেশের পরেও হয়নি সংস্কার, রাজাপুর বাজারের গুরুত্বপূর্ণ দত্তের খাল

- আপডেট সময় : ৮ বার পড়া হয়েছে
ফেনীর দাগনভূঞা রাজাপুর বাজার সংলগ্ন দত্তের খালটি দখল-দূষণে বর্তমানে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। অন্যদিকে একটি অসাধুচক্র খালটি বন্দোবস্ত নিয়ে স্থায়ীভাবে দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০২৩ সালের শেষের দিকে যারা বন্দোবস্ত নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে।
বিগত ২০২২ সালের ২৪ শে মার্চ খালের দখল ও দূষণ নিয়ে ফেনীর দৈনিক সমসাময়িক প্রতিদিনে একটি লিড নিউজ হয়। এই লিড নিউজের আলোকে ফেনীর পরিবেশ আদালত স্বপনোদিত হয়ে রুল জারি করে এবং সংস্কার করার জন্য আদেশ দেন। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য প্রভাবে হয়নি দখলমুক্ত ও সংস্কার। এতে করে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা দূর্ভোগের পড়ে এলাকাবাসী।
এই বিষয়ে রাজাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, দত্তের খালটি একটি মহল নিজেদের মৎস্যচাষি সাজিয়ে বন্দোবস্ত নিয়ে স্বৈরাচারে সরকারের সময় থেকে জবর দখল করে রেখেছে এবং ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করছে। এতে খালটি অস্তিত্ব হারাচ্ছে এবং আশপাশের পরিবেশ দূষণ করছে। দত্তের খাল ও বাজারের পরিবেশ রক্ষায় পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দত্তের খালটির পাশেই রাজাপুর বাজার, রাজাপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, রাজাপুর ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও বসতবাড়ি। খালটির উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ফেনী নদী। রাজাপুর বাজারে সপ্তাহে রবি ও বুধবার দুই দিন হাট বসে। বাজারটিতে কয়েকশ দোকান রয়েছে। এখানে আশপাশের হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজাপুর বাজারের প্রতিদিনকার আবর্জনা ও প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার জন্য নেই নির্ধারিত কোনো ডাস্টবিন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম। তাই যার যার ইচ্ছামতো খালে ফেলছে এসব ময়লা-আবর্জনা। পচনশীল এসব ময়লায় দূষিত হচ্ছে আশপাশের বাতাস। আর অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য বৃষ্টি ও বর্ষার পানির সঙ্গে নেমে যাচ্ছে খাল ও নদীতে।
রাজাপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর সোবহান বলেন, নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় বাজারের দোকানদাররা যত্রতত্র ময়লা ফেলছেন। এতে করে খালটি দিন দিন অস্তিত্ব হারাচ্ছে এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম পাটোয়ারী বলেন, কেউ কারও কথা শুনছে না। ছোট ফেনী নদীর শাখা খাল দত্তের ছড়ায় যে যার মতো করে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। দিন দিন এ খালটি ছোট হয়ে আসছে।
পরিবেশভিত্তিক সংগঠন ‘পরিবেশ ক্লাব অব ইয়ুথ নেটওয়ার্ক’-এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহাম্মদ জানান, অপচনশীল বর্জ্য ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ দূষণের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ইতোমধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য নদীর পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইকোসিস্টেম নষ্ট করছে এসব প্লাস্টিকের বর্জ্য। সময় থাকতে নদ-নদী কিংবা পরিবেশের যত্ন নিতে হবে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনের বাজেটে একটি অংশ খালের সংস্কার কাজে ব্যয় করা হবে।
তিনি বাজারের ব্যবসায়ীদের খালে ময়লা আর্বজনা না ফেলার জন্য অনুরোধ করেন।