ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে এখনো বহাল তবিয়তে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তারা!
- আপডেট সময় : ০৩:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও তার প্রেতাত্মারা সরকারি বিভিন্ন দফতরে এখনও রাজত্ব করছে। খোলস পাল্টিয়ে ফের অনিয়ম ঘোষ বাণিজ্যে সক্রিয় হচ্ছেন এসব আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে ইতালির রোম বাংলাদেশ দূতাবাস চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং ঘুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। এ অনিয়ম ঘুষ বাণিজ্য দুর্নীতির সঙ্গে দূতাবাসের কয়েকজন আওয়ামীপন্থী অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত।
সরকার পতনের পর ইতালিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতকে পরিবর্তন করা হলেও আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন।
এসব অসাধু কর্মকর্তাদের হয়রানি ও দালালদের দৌরাত্ম্যে চরমভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। ভোগান্তির সাথে বেড়েছে বিভিন্নরকম সেবার ফি ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দূতাবাসে কনস্যুলার ফি, নতুন পাসপোর্টের আবেদন, পাসপোর্ট নবায়ন, সার্টিফিকেট প্রদান, চিকিৎসা, জ্বালানি, ভ্রমণ, আপ্যায়নসহ সব খাতেই ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে।
কয়েকজন আওয়ামী লীগ নামধারী নেতাদের যোগসাজশে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন দূতাবাসের এসব অসৎ, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, দূতাবাসে যেকোনো ধরণের সেবা নিতে গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। দালাল ছাড়া কোন কাজ করা যায় না। অতিরিক্ত টাকা গুনার পাশাপাশি দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও কাজ সম্পন্ন হয় না।
আওয়ামী লীগের আমলে কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখনো বহাল থাকায় তাদের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। প্রবাসীদের সকল সমস্যা দ্রুত সমাধান এবং সেবার মান নিশ্চিরকরণে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের নির্দেশ থাকলেও এসব অসাধু কর্মচারীদের জন্য কনসুলেট সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের।
তারা আরও বলেন, এসব আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তারা রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ, মানি লন্ডারিং থেকে শুরু করে সরকার পতনের পর দেশ থেকে আওয়ামী দোসরের বিদেশ পালাতে সহযোগিতা করেছেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে এসব কর্মচারীরা প্রবাসীদের একপ্রকার জিম্মি করে বিভিন্ন কনসুলেট সেবার নামে টাকা আদায় করতো। দূতাবাসে বসে অবৈধভাবে টাকা কামিয়ে বাংলাদেশ এবং ইতালির বিভিন্ন শহরে কিনেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। করেছেন অনেক দোকানপাট।
একজন প্রবাসী বলেন, পাসপোর্ট সমস্যার জন্য এপয়েন্টমেন্ট নিতে টাকা দিতে হয় না হলে তারা কোন কাজ করেন না। যেখানে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা সেখানে কয়েক মাস গেলেও কাজ হয় না। ফোন দিলেও কেউ ফোন ধরেননা। একটা ছোট কাজের জন্য অনেক ভোগান্তি পোহাত্ব হয়।
জানা গেছে, এইসব কর্মকর্তারা অবৈধ টাকায় তাদের স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনদের নামে ইতালিতে বিভিন্ন হোটেল, বার, দোকান দিয়েছেন।
প্রবাসী কমিউনিটির এক নেতা বলেন, ইতালিতে কোন বাংলাদেশি মারা গেলে তাদের লাশ দেশে পাঠাতে অনেক টাকা ও ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাছাড়া দূতাবাস গুলো থেকে প্রবাসীদের জন্য যতটা সেবা প্রয়োজন কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও স্বজনপ্রীতির জন্য প্রবাসী সঠিক সেবাটুক পাচ্ছেন না।
তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সরকারের বিভিন্ন দফতর সংস্কার ও বদলিকরণ হলেও অদৃশ্য এক ছায়ায় ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখনও বহাল তবিয়তে।
নতুন রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আর্কষণ করে তারা বলেন, এসব অসাধু আওয়ামী পন্থী কর্মকর্তাদের বদলি করে দূতাবাস থেকে সৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর মুক্ত করা হোক।