ই-অরেঞ্জের সিইও আমান উল্লাহ দুই দিনের রিমান্ডে

- আপডেট সময় : ০৭:১৫:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জ’-এর অন্যতম প্রধান হোতা ও সিইও আমান উল্লাহ চৌধুরীর দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর বিমানবন্দর থানার একটি হত্যা মামলায় শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ এই আদেশ দেন। শনিবার বিমানবন্দর থানার এসআই মাজেদুল ইসলাম আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত আমান উল্লাহ চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকালে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিদেশ যাওয়ার পথে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা বলেন, ‘আমান উল্লাহকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুক্রবার বিকালে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে।
তিনি সেই মামলার আসামি।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে এই আমান আল্লাহকে প্রতারণার মামলায় ২০২১ সালে ১৮ আগস্ট গুলশান থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তখন ই-অরেঞ্জের মালিক গুলশান থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা ভারতে পালিয়ে যায়। সোহেল রানার বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আদালত। সেই সময় এই সোনিয়া মেহজাবিন ও মাসুকুর রহমানের বিরুদ্ধে ই কমার্সের নামে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের ‘প্রতারণার শিকার’ মো. তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আদালত কারাগারে পাঠায়। সেই মামলারও আসামি এই আমান উল্লাহ। সূত্র জানায়, ই-অরেঞ্জ নামের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন আমান উল্লাহ চৌধুরী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মোট ৫৪টি মামলা দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয়েছে।
তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন, পরে জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক ছিলেন। গণঅভ্যুত্থানকালীন সময় থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির বাইরে চলে যান। বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, আমান উল্লাহ শুধু প্রতারণা চক্রের নেতা নন, তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন তিনি ঢাকা মহানগর ও জেলা আওয়ামী যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের অর্থায়ন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি তার এ্যালিফ্যান্ট রোডের অফিসে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ নামের একটি প্রচার সেল গঠন করেন, যেখানে সরকারের ঘনিষ্ঠ একদল আইটি অফিসার ২৪ ঘণ্টা আন্দোলনবিরোধী প্রচার-প্রচারণায় নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি আন্দোলনের বিরুদ্ধে অনলাইন প্রপাগান্ডা পরিচালনা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনমত প্রভাবিত করেন।