উপকূলে রাতজুড়ে রেমালের তাণ্ডব, জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত উপকূল
- আপডেট সময় : ১০:৩০:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মে ২০২৪ ১৮৩ বার পড়া হয়েছে
উপকূলে রাতজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সেই সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসে তলিয়েছে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুরের বেশ বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
ঝড়ে গাছ পালা, বাড়িঘরের সঙ্গে ভেঙ্গেছে বেড়িবাঁধ। দক্ষিণ অঞ্চলের বহু মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
পটুয়াখালী রাঙাবালি উপজেলার চরমন্তাজ ইউনিয়নের ৭, ৮, ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার রুনু খান জানান, রোববার সন্ধ্যা থেকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। রাতে রেমালের প্রভাবে বেরিবাঁধ ভেঙ্গে তিন ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। অনেকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ার কথা জানান এই জনপ্রতিনিধি।
সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমাল সকালে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ: বৃষ্টিপাত ঝড়িয়ে সকাল ১১টা নাগাদ দুর্বল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
এরই মধ্যে রেমালের কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। বিকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শেষ হবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি রোববার (২৬ মে) রাত আটটার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হাতে। এর প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টি শুরু হয়।
সোমবার (২৭ মে) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে বর্তমানে খুলনার কয়রার কাছে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশঃ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১৮ তে জানানো হয়েছে এসব তথ্য।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি কেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণভাবে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। তবে দুপুরের আগে বৃষ্টির সঙ্গে এটি কিছুটা দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ০৪ (চার) নম্বর নৌ-মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।